October 31, 2024
খাবার খাওয়ায় ভুলঃ চলুন এড়িয়ে

খাবার খাওয়ায় ভুলঃ চলুন এড়িয়ে

খাবার খাওয়ায় ভুলঃ চলুন এড়িয়ে 

খাবার খাওয়ায় ভুলঃ চলুন এড়িয়ে

মহাকালের শ্রেষ্ঠ কবি; কবি শেখ সাদী বলেছেন, “বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া।  খাওয়ার জন্য বেঁচে থাকা নয়” ।  যদিও খাবারের গুরুত্ব পৃথিবীতে অনেক বেশি । জীবনে খাবারের জন্যই মানুষ সবচেয়ে বেশি ছোটাছুটি করে । খাবার নিয়ে আজকের এই আয়োজন ।

সামনে খাবার থাকলে এবং ক্ষুধার্ত থাকলে খেতে পারেন। যত খুশি খেতে পারবেন? পর্যাপ্ত খাবার খান। ডায়েটিং করে অনেকেই স্লিম ও চিকন হয়ে যান। তখন আবার  শরীরে বিভিন্ন পুষ্টির অভাবও  দেখা দেয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়, বিভিন্ন রোগ শরীরে চাপা পড়ে। এই ধরনের ডায়েট করার পরামর্শ নেয়া হয়  – তারা পরে আবার অতিরিক্ত খাওয়া শুরু করে। একে বলা হয় বিঞ্জিং। সব শেষে   বাউন্স করে উল্টো মুটো এবং স্থূল হতে  শুরু করে ।  তাই পরিমিত সুষম খাবার খেলে শরীর সুস্থ থাকে।  কখন কী খাই , সেদিকে অনেকেই মনোযোগ দেই না। তবে এখন থেকে সাবধান।

  • কোনো বেলার খাবার এড়িয়ে যাওয়া

আপনি যদি সকালে খুব বেশি খান এবং দুপরে  না খান তবে তা খারাপ। কোনো খাবার বাদ দিলে শরীর খারাপ হবে। অনেকে সকালের নাস্তা না করে দুপুরে পেট ভরে খান। সেটাও ভালো না। আবার সারাদিন না খেয়ে বিকেলে বা সন্ধ্যায় শিঙাড়া-সমুচা-চা খেয়ে বাসায় এসে রাতে পেট ভরে খাই। এই প্রক্রিয়াটিও ভালো নয়। এই নিয়মে সারাদিন একটু একটু করে খেতে হবে। এক সময় বেশি খাওয়া এবং অন্য সময়ে না খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ।

  • ফাস্ট ফুড খাওয়া

অনেকেরই ফাস্ট ফুড খাওয়ার অভ্যাস আছে। আমার সময় ছিল না, তাই তাড়াতাড়ি খেয়ে নিলাম। তারপর অম্ল  শুরু হবেই । এসব  খাবার ভালোভাবে চিবানো হয় না। তাই হজম ঠিকমতো হয় না।

  • প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া

ভাত বা রুটি চিনিযুক্ত খাবার। তাই প্রক্রিয়াজাত খাবার অনেক খাওয়া হয়। এতে শরীরে প্রোটিন ও চর্বি জমতে  থাকে। খাবারের মেটাবলিজম এলোমেলো হয়ে যায় । এরপর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও  বাড়তে পারে।

  • মনোযোগ দিয়ে না খাওয়া

বন্ধুদের সাথে খেতে বসা। খাওয়া দাওয়া আর আড্ডা। কিন্তু কতটা খেলেন তার কোনো খবর নেই। কারণ সব সুস্বাদু খাবার। এটি খুব স্বাস্থ্যকর নয়।

  • আনন্দের সাথে না খাওয়া

কাজ করতে করতে খাওয়া অনেকের অভ্যাস। কাজ করা হচ্ছে যে টেবিলে সেখানেই খাওয়া, মুখে কী ঢুকছে, কী তার পরিমাণ—খেয়াল নেই। অভ্যাসের ফলে খাওয়ার আনন্দ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা হলো। এটাও একটা বদ অভ্যাস।

  • ডায়াবেটিস রোগীদের সময়মতো না খাওয়ার অভ্যাস পরিত্যাজ্য

ডায়াবেটিস থাকলে সময়মতো খাওয়া উচিত। সময়মতো না খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তাই খাবার সময় মত  খাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তার যদি খাবারের সময় নির্ধারণ করে দেন, সে অনুযায়ী খান। না হলে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে খান।

  • বেখেয়ালে বেশি করে খাবার খাওয়া

আপনি কী খাচ্ছেন এবং কখন খাচ্ছেন তা ছাড়াও আপনি কতটা খাচ্ছেন তাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে তবে আপনি কী পরিমাণ খাবার খান সে বিষয়ে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। আপনার প্রিয় খাবার আপনার সামনে থাকলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই মনে করেন, দুপুরে বেশি খেলে কোনো সমস্যা হবে না। এই চিন্তা সম্পূর্ণ ভুল। সবসময় পরিমিত  খাওয়া উচিত।

  • বাইরের খাবার খাওয়া

সচেতনদের বাইরের খাবার একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে দুপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নয়। সকাল-বিকাল ঘরে রান্না করা খাবার খাওয়া প্রয়োজন। ভারী খাবার খাওয়ার পরিবর্তে বাইরের ভাজা খাবার খেলে চিনির মাত্রা , শর্করা  নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

  • কোমল পানীয় পান

খাবারের আগে এবং পরে কোমল পানীয় পান কবেন না।সকল   ক্ষেত্রেই, ডাক্তাররা এই ধরনের পানীয় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেন। কিন্তু তারপরও অনেকেই মাঝেমধ্যে এগুলোর স্বাদ গ্রহণ করেন। তবে দুপুরের দিকে কোনো রঙিন পানীয় না খাওয়াই ভালো।

  • ক্ষুধার্ত না থাকলেও খাওয়া

ডাক্তাররা সবসময় ক্ষুধার্ত হলেই খাবার খেতে বলেন। খাবারের প্রয়োজন হলে শরীর আপনাকে জানাবে। শরীরের সংকেত ছাড়া খাবার খেলে পাকস্থলী সেই খাবার শোষণ করতে প্রস্তুত হয় না। ফলে বদহজমের মতো সমস্যা দেখা দেয়।

  • খাবার আগে পানি পান করা

খাবারের ঠিক আগ মুহূর্তে বা পরে পানি পান করা গ্যাস্ট্রিক জুসকে পাতলা করে এবং রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায়। এটি হজমের ব্যাঘাত ঘটায়। খাবার সময় আগেই বৃহৎ অন্ত্রে পৌঁছে যায়। তাই খাবারের আগে জল খাওয়া উচিত নয়।তাই খাবারের কমপক্ষে আধাঘন্টা আগে এবং কমপক্ষে আধা ঘন্টা পরে পানি পান করুন।

  • খাওয়ার সময় অন্য কাজ

ব্যস্ত জীবনে ঘুম, এবং খাওয়ার জন্য যেনো  আলাদা কোনো সময় নেই। অফিসে অনেক সময় কাজ করতে করতে হিমশিম খেতে হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, খাওয়ার সময় অন্য কাজ না করাই ভালো। অসতর্ক হয়ে অতিরিক্ত খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবার খেলে বদহজম হতে পারে। তাই কাজের সময় না খাওয়াই ভালো।

আর জানুন

খাওয়ার পর মিষ্টিমুখ করা কি সুন্নাত?

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X