আদালতের রায়ে হোয়াইট হাউসে প্রবেশাধিকার ফিরে পেল বার্তা সংস্থা এপি

মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধের প্রতিবেদনের খরচ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য ১৮৪৬ সালের মে মাসে নিউ ইয়র্ক সিটির পাঁচটি দৈনিক সংবাদপত্র দ্বারা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস গঠিত হয়েছিল। যে পাঁচটি সংবাদপত্র দ্বারা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস বা এপি গঠিত হয়েছিল: সেগুলো হলো দি সান , নিউইয়র্ক হেরাল্ড, নিউইয়র্ক কুরিয়ার এন্ড এনকুইয়ার, দ্য জার্নাল অব কমার্স এবং নিউ ইয়র্ক ইভিনিং এক্সপ্রেস। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস বা এপি একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা। এটি বিশ্বের বৃহত্তম আমেরিকান সংবাদ সংস্থাগুলির মধ্যে একটি। এটি এখন বেশ কয়েকটি আমেরিকান সংবাদপত্র এবং সম্প্রচার কেন্দ্রের মালিকানাধীন একটি সমবায়। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের অনেক সংবাদপত্র এবং টেলিভিশন সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে এপি দ্বারা সংগৃহীত তথ্য ব্যবহার করে। এর প্রধান সদর দপ্তর নিউ ইয়র্কে অবস্থিত।
আদালতের হস্তক্ষেপের পর আমেরিকান সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এপি হোয়াইট হাউসে প্রবেশাধিকার ফিরে পেয়েছে। মঙ্গলবার একটি জেলা আদালত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এপি-এর প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছে।
রায়টিতে বিচারক ট্রেভর ম্যাকফ্যাডেন বলেছেন যে, প্রশাসন কর্তৃক কোনও মিডিয়া আউটলেটের উপর এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা ইউএস সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন করে।
"‘গালফ অব আমেরিকা’ বা " আমেরিকা উপসাগর" নামকরণ নিয়ে মতবিরোধের কারণে ট্রাম্প প্রশাসন জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে এপি-র প্রবেশাধিকার বাতিল করে। জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই, ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে ঘোষণা করেন যে, মেক্সিকো উপসাগরের নামকরণ করা হবে "আমেরিকা উপসাগর"।
হোয়াইট হাউস দাবি করে যে, এই নামটি একটি প্রতীকী স্বীকৃতি যে এটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে, এপি ট্রাম্পের দেওয়া নতুন নাম গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং উপসাগরের ঐতিহাসিক নাম ব্যবহার করার সিদ্বান্ত নেয়। প্রতিক্রিয়ায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প সংবাদ সংস্থার কর্মীদের রাষ্ট্রপতির বাসভবন এবং অফিসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে।
ফেব্রুয়ারিতে, এপি হোয়াইট হাউসের তিন কর্মকর্তা - চিফ অফ স্টাফ সুসান ওয়াইলস, ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ টেলর বুডোভিচ এবং প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিটের বিরুদ্ধে মামলা করে।
ট্রেভর ম্যাকফ্যাডেন ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নিযুক্ত একজন বিচারক। মঙ্গলবারের রায়ে তিনি আরও বলেন, "প্রথম সংশোধনীর অধীনে সাংবাদিকদের জন্য সরকার ওভাল অফিস, ইস্ট রুম বা অন্য কোনও জায়গার দরজা খুলে দিলে, সেগুলো আবার বন্ধ করার কোনও উপায় নেই। প্রশাসন যদি তাদের কথা পছন্দ নাও করে, তবুও তারা এ ব্যাপারে কিছুই করতে পারে না। মার্কিন সংবিধান এটাই বলে, এবং আমরা কেউই সংবিধানের ঊর্ধ্বে নই।"
আদালত সরকারকে আপিল করার জন্য আগামী রবিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছে।
মঙ্গলবারের রায়ের পর, এপির মুখপাত্র লরেন ইস্টন বলেন, "আমরা আদালতের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট। আজকের রায় নিশ্চিত করে যে, যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিকতা এবং মত প্রকাশের মতো মৌলিক অধিকার প্রয়োগের জন্য সরকারকে প্রতিশোধের শিকার হতে হবে না।"
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাইট ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক জামিল জাফর বলেন, "এটি একটি যুক্তিসঙ্গত রায়, এবং এটা স্পষ্ট যে, হোয়াইট হাউসে প্রবেশাধিকার দিতে এপির অস্বীকৃতি ছিল প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং অসাংবিধানিক।"
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) কে "অতি-বামপন্থী সংগঠন" বলে অভিহিত করেছিলেন।
নিউ ইয়র্ক এর আরো খবর

নিউইর্য়কে পরানে আগ্রাবাদের মিলনমেলা

তীব্র শরণার্থী সংকটে নিউইয়র্ক

শেষ হলো টাইম টেলিভিশনের মাসব্যাপি দ্যা লাইট অব দ্যা কুরআন এর আসর

নিউইয়র্কে সাত হাজারের বেশি নার্সের ধর্মঘট

নিউইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে পুলিশ কর্মকর্তা নিহত
