সূর্য থেকে পৃথিবীর তাপ কমাতে মহাকাশে ভার্চুয়াল ছাতা বসাতে চাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা
কঠিন খরতাপ আর সূর্যালোকে সমুদ্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে জোয়ারের কারণে সারা পৃথিবীতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে । এবং এন্টারটিকা গলতে শুরু করেছে। অতিরিক্ত সকল কিছুই হচ্ছে সূর্যের অতি-বেগুনি রশ্মির কারণে। যা উন্নতি দেশগুলোর মেইল-কারখানার ধুঁয়া নিঃসরণের পরিণতি । আর সেটা থেকে পৃথিবীবাসীকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে পারে বিজ্ঞানীদের ভার্চুয়াল ছাতা ।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং দিন দিন বাড়ছে। এখন গ্রীষ্ম এলেই শুরু হয় ভয় । আর শুধু গ্রীষ্মের কথাই বা কেন, বছরের ২থেকে ৩ মাস ছাড়াসারা বিশ্ব চরম উত্তাপে ভোগে। আর ফেব্রুয়ারি মাস যেতে না যেতেই গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশগুলো তাপপ্রবাহের কবলে পড়ে। শুধু তাই নয়, মধ্যপ্রাচ্য বা ইউরোপের মতো শীতের দেশগুলোতে চিমনির পাশাপাশি এসির ব্যবহারও শুরু হয়েছে।
এবং এখন একজন বিজ্ঞানী বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে একটি অভিনব উপায় প্রস্তাব করেছেন। যাতে সরাসরি সূর্যের আলো পৃথিবীতে এসে তীব্র তাপ সৃষ্টি করতে না পারে। সে জন্য মহাকাশে ছাতা রাখার পদ্ধতি (Sun Umbrella Setting in Sky) এর কথা বলা হয়েছে। যদি এমন একটি ছাতা পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে স্থাপন করা যায়, তাহলে ছাতার মাধ্যমে যখন সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছাবে, তখন এর তাপ ও তেজ অনেকটাই কমে যাবে। ফলে বিশ্ববাসী একটু হলেও স্বস্তি পাবে। গরমের তীব্রতাও কমবে।
গবেষকরা বলছেন, ‘অনেক ধূমকেতু পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে। তাদের ব্যবহার করে এই ছাতা বা বর্ম তৈরি করার সুযোগ রয়েছে। হাওয়াইতে, ব্যবহারকারীরা ছাতা দিয়ে সূর্লোক থেকে বেচে থাকে। এটা দেখে আমার মনে হলো, আমরা কি পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারি? এভাবে আমরা ছাতা ব্যবহার করে জলবায়ু পরিবর্তনের গতি কমানোর সুযোগ খোঁজার চেষ্টা করছি। গবেষকদের তথ্য বলছে, ছাতা ব্যবহার করা হলে পৃথিবীতে সৌর বিকিরণের প্রভাব কমবে। পতনের সেই হার প্রায় ১.৭ শতাংশ। বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমাতে এই ছাতা ব্যবহার করার ভালো সুযোগ রয়েছে।
যে বর্ম নিয়ে আগে গবেষণা হচ্ছিল, তাতে বর্মের ভর নিয়ে সমস্যা ছিল। পৃথিবীর বাইরে একটি বিশাল ছাতা রাখা অনেক টেকনিক্যাল প্রশ্ন উত্থাপন করে। আপনার মাথার উপর ৩.৫ মিলিয়ন টন ওজনের একটি ছাতা নিয়ে ভাবুন । এই গবেষণাপত্র অনুসারে, এটি জানা গেছে যে ধূমকেতুর পুনর্ব্যবহারে ছাতার ভর প্রায় ১০০ শতাংশ হ্রাস পাবে। অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় না। আজকের বৃহত্তম রকেট ট্যানেটুনে ৫০ টন ভর পরিবহন করতে পারে। কোন ট্রাক ৩.৫ মিলিয়ন টন পরিবহন করবে এই প্রশ্নের কোন উত্তর নেই। সেই সমস্যা থেকে ধূমকেতু ব্যবহারের কথা ভাবা হচ্ছে। এখন বর্ম পাঠানোর পরিকল্পনা, এর ওজন আনুমানিক ৩৫ হাজার টন। এই বর্ম তৈরি করা সহজ এবং এর জন্য কোনো নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন গবেষক জ্যোতির্পদার্থবিদ ইস্তভান জাপুদি।
কিন্তু এর আগেও মহাকাশ বিজ্ঞানীরা মহাকাশে ছাতা লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিরাট ভারী হওয়ার কারণে তা কখনোই সম্ভব হয়নি। বিজ্ঞানী জাপুদির এই অভিনব প্রস্তাবটি যদি বাস্তবায়িত করা যায়, তাহলে সারা পৃথিবী রক্ষা পাবে প্রখর রোদের হাত থেকে।
রোদ সূর্যালোক। তাই সূর্যের আলো ঢেকে রাখতে হবে। যাতে পৃথিবীতে কম তাপ আসে। তাই সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে ছাতা বসাতে চলেছেন বিজ্ঞানীরা।
উষ্ণায়নের ধাক্কা সামলাতে ছাতা দিয়ে মাথা ঢেকে সাধারণ মানুষের পথে হাঁটলেন বিজ্ঞানীরা। যদি সূর্যের রশ্মি ছাতার মাধ্যমে পৃথিবীতে পড়তে হয়, তবে এর তাপ এবং উজ্জ্বলতা অনেকাংশে প্রভাবিত হবে না। এটি বিশ্বকে রক্ষা করবে।
হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ্যা ইনস্টিটিউটের এই মহান বিজ্ঞানী ইভান জাপুদির এই অভিনব পদ্ধতির প্রস্তাব বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি কেড়েছে। তাই তারা এভাবেই এগোতে চায়। তবে এর জন্য প্রয়োজনীয় বিশাল কোনকিছু পৃথিবী থেকে পাঠানো সম্ভব নয়। কারণ এর ওজন হবে অনেক। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক আলোক সামগ্রী মহাকাশে পাঠানো হবে। যা দড়ির মতো বাঁধা থাকবে। আর তার কাউন্টার ওয়েটের কাজটা করে দেবে অন্য গ্রহাণু।
আরও পড়ুন
বাতাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক বৈপ্লবিক ‘এয়ার-জেন’ পদ্ধতির আবিষ্কারঃ যা চরম সংকটেও বিদ্যুৎ দিবে
মানুষের চোখে কত মেগাপিক্সেল ক্যামেরা থাকে?
মহাকাশে কমলা রঙের আরেকটি ‘পৃথিবী খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা
পুরো নকশা এখন ছিন্নভিন্ন হতে শুরু করেছে। তবে জাপুদি যে অভিনব ভাবনা উপস্থাপন করেছেন তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে উষ্ণতা নিয়ে উদ্বেগ অনেকটাই কমে যাবে। এখানে বলা দরকার যে এ ধরনের ছাতার কথা আগেও ভাবা হয়েছে। কিন্তু এটি এত ভারী হয়ে উঠছিল যে এটিকে মহাকাশে পাঠানোর উপায় ছিল না। তাই জাপুদির কাছে অনেক হালকা এবং সর্বশেষ প্রযুক্তি রয়েছে।
বৃষ্টিতে যেমন ছাতার প্রয়োজন, তেমনি রোদেও ছাতার প্রয়োজন। পৃথিবী আরও সূর্য পাচ্ছে। এতে গরম বাড়ছে। সূর্যকে এড়াতে মহাকাশে ছাতা লাগাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এভাবে সূর্য পৃথিবীতে পড়লে সারা পৃথিবী উত্তপ্ত হতে দেরি হবে না। তাই পৃথিবীতে সূর্যকে এভাবে পড়া বন্ধ করতে এই অভিনব পথে হাঁটছেন বিজ্ঞানীরা।তবে আশা করা যাচ্ছে সেটা একদিন বাস্তবে দেখা যাবে ।
পুরো ডিজাইন নিয়ে এখন কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। তবে যে অভিনব ভাবনা জাপুদি উপহার দিলেন তা যদি বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয় তাহলে উষ্ণায়নের চিন্তা অনেকটা কমবে। এখানে বলা প্রয়োজন যে আগেও এমন ছাতা নিয়ে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু তা এতটাই ভারী হচ্ছিল যে তা মহাকাশে পাঠানোর উপায় ছিলনা। জাপুদি তাই অনেক হাল্কা ও নবতম প্রযুক্তি ব্যবহারের হদিশ দিয়েছেন।