February 7, 2025
বিরোধী দলের উপর হামলা নিষ্ঠুর এবং অমানবিক: এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতির বিপরীতে: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

বিরোধী দলের উপর হামলা নিষ্ঠুর এবং অমানবিক: এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতির বিপরীতে: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

বিরোধী দলের উপর হামলা নিষ্ঠুর এবং অমানবিক: এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতির বিপরীতে: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

বিরোধী দলের উপর হামলা নিষ্ঠুর এবং অমানবিক: এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতির বিপরীতে: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে। সংগঠনটি বলেছে, যেখানে  বাংলাদেশ সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। সেখানে বিরোধীদের ওপর নিপীড়নমূলক হামলা চালানো হচ্ছে। এটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলের সাম্প্রতিক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বেআইনিভাবে বলপ্রয়োগ করা হচ্ছে।

এর পাশাপাশি এইচআরডব্লিউ বলেছে, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গণগ্রেফতার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছে। বুধবার এক বিবৃতিতে এসব কথা জানিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা।

এক বিবৃতিতে, এইচআরডব্লিউ-এর এশিয়ার উপ-পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেছেন যে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিরোধীদের উপর নৃশংস দমন-পীড়নকে একটি সতর্ক সংকেত হিসাবে দেখা উচিত।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশ জুলাইয়ের শেষ দিকে বিরোধী সমর্থকদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করে। এ সময় বিরোধী সমর্থকদের মারধরও করা হয়। ২৯শে জুলাইয়ের কর্মসূচিকে ঘিরে গত কয়েকদিনে প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর আট শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে কর্তৃপক্ষ। এটা দৃশ্যত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে টার্গেট করার চেষ্টা।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, বিক্ষোভ চলাকালে সহিংসতায় তাদের অন্তত শতাধিক সমর্থক আহত হয়েছেন। পুলিশ এবং বিরোধী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ভিডিওতে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহার, মারধর ও লাথি মারতে দেখা গেছে। নিহতদের নিরস্ত্র বলে মনে হচ্ছে। যদিও পুলিশ জানায়, বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং পুলিশের গাড়িতে হামলা চালায়। কমপক্ষে ৩২ জন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।

ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের সফরের সময় এবং ইইউ প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের পরিদর্শন শেষে নির্বাচনী হয়রানির এই ঘটনাগুলো ঘটেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ২৯ জুলাই বিএনপিকে কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হয়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সমাবেশের অধিকারকে সম্মান করতে হবে। এ ছাড়া, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য শক্তির ব্যবহারও মানবাধিকারের মান মেনে চলতে হবে যদি না প্রতিবাদ আইনত নিষিদ্ধ হয়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জরুরীভাবে পুলিশকে বল প্রয়োগের বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে বলা দরকার। এটাও স্পষ্ট করা উচিত যে, যারা এ বিষয়ে নিয়ম না মানবেন তাদের জবাবদিহি করা হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বাংলাদেশ সরকারের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের অবশ্যই প্রকাশ্যে দৃঢ়ভাবে বলতে হবে যে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে গুরুতর অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কঠোর ও সময়োপযোগী ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে সহযোগিতার অন্যান্য ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে।

মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ভালো করেই জানে যে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি কঠোর আন্তর্জাতিক তদন্তের মধ্যে রয়েছে। তাই বিরোধী দলকে দমনমূলক গণগ্রেফতার ও সহিংস দমন-পীড়নের মাধ্যমে নিরপেক্ষ করা হলে বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে মনে করার মতো বোকা কেউ নেই।

এদিকে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলের সাম্প্রতিক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বেআইনি বলপ্রয়োগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংগঠনটি ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া বিরোধী দলের প্রতি পুলিশের আচরণকেও নিষ্ঠুর ও অমানবিক বলে অভিহিত করা হয়। লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ প্রসঙ্গে এর দুই দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) অভিযোগ করেছে, বুধবার (২ আগস্ট) বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী রাজনৈতিক মতামতের ওপর বলপ্রয়োগ করা হচ্ছে। অ্যামনেস্টি জানায়, ৩০ জুলাই ঢাকায় নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ অস্ত্র ব্যবহার করে। ধোলাইখাল এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালে বিরোধী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মাটিতে পড়ে গেলেও পুলিশ তাকে লাঠিপেটা করে। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এসব ঘটনা প্রমাণ করে বিরোধী দলের প্রতি পুলিশের আচরণ নিষ্ঠুর ও অমানবিক।

আরও পড়ুন

‘রাতের অন্ধকারে এমপি হয়েছ, আমরাই তো তৈরি করেছি’: আওয়ামী লীগ নেতা

সংগঠনটি প্রতিবাদের দিন থেকে ৫৬ টি ছবি এবং ১৮ টি ভিডিও পর্যালোচনা করেছে। এ ছাড়া সাক্ষীদের সাক্ষ্য থেকে এসব ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন আঞ্চলিক পরিচালক স্মৃতি সিং বলেছেন, বিক্ষোভ চলাকালে ঢাকায় ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড অ্যান্ড মাদার হেলথ হাসপাতালের (মা ও শিশু হাসপাতাল) কাছে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। তবে হাসপাতালের কাছাকাছি বা আশেপাশে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা উচিত নয়। হাসপাতালের পাশে বাংলাদেশি পুলিশের টিয়ার গ্যাস ব্যবহার আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি অবজ্ঞা।

বাংলাদেশ সরকারকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই যেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আইন মেনে চলে। একই সঙ্গে জনগণকে বাক স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার দেয়।

X