আমি না জিতলে আমেরিকায় রক্তের বন্যা বইবে: ট্রাম্পের কঠিন হুঁশিয়ারি
- নির্বাচনে না জিতলে আমেরিকায় রক্তপাত হবে, হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের।
- ট্রাম্পের মন্তব্য বিতর্কিত।
- নভেম্বরে (২০২৪) মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বছরেরই নভেম্বরের নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটে (প্রাথমিক) জয় নিশ্চিত করেছেন। মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হলে, ৭০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মার্কিন ভোটাররা আগের নির্বাচনের দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে পাবেন।
চলছে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। তার বিপরীতে রয়েছেন জো বাইডেন। তিনি হারলে আমেরিকায় কী ঘটবে তা আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন ট্রাম্প। নির্বাচনে হারলে আমেরিকায় রক্তপাত হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। গণতন্ত্র ভেঙে পড়বে। আর ট্রাম্প কী বললেন? বিস্তারিত জেনে নিন।
আবারও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদের লড়াইয়ে মুখোমুখি হতে চলেছেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে টানটান প্রতিযোগিতা। একের পর এক উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে নিজের জায়গা নিশ্চিত করেছেন। এবার ট্রাম্পের কণ্ঠে শোনা গেল ভয়ঙ্কর হুমকি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে না জিতলে রক্ত ঝরার হুমকি দেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘আগামী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমার দল না জিতলে আমেরিকায় গণতন্ত্র শেষ হয়ে যাবে। সারাদেশে রক্তের বন্যা বইবে।’ শনিবার ওহাইও রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সময় ট্রাম্প এ হুঁশিয়ারি দেন। ট্রাম্প বলেন, ‘মনে রাখবেন ৫ নভেম্বর । আমার বিশ্বাস, এই দিনে আমাদের দেশে ইতিহাস তৈরি হবে।’
কী বললেন ট্রাম্প?
মেক্সিকোতে গাড়ি তৈরি করে আমেরিকানদের কাছে বিক্রি করার চীনের পরিকল্পনার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আমি নির্বাচিত হলে তারা সেই গাড়ি বিক্রি করার সুযোগ পাবে না।” একই সঙ্গে জো বাইডেন সরকারের সমালোচনা করেন । বাইডেনকে সর্বকালের সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট বলেছেন। তিনি বলেন, ‘এবার আমি নির্বাচন না করলে রক্ত বইবে। সারাদেশে রক্ত বইবে।’ ট্রাম্প জো বাইডেন এর অভিবাসন নীতিরও সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, ‘বাইডেন বারবার আফ্রিকান-আমেরিকান ভোটারদের লক্ষ লক্ষ অভিবাসীদের কাজের অনুমতি দিয়ে ছুরিকাঘাত করেছেন। ফলস্বরূপ, আফ্রিকান-আমেরিকান এবং হিস্পানিক আমেরিকানরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
চলতি বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচনে জো বাইডেন এবং ট্রাম্প তাদের নিজ নিজ দল, ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান দল থেকে তাদের রাষ্ট্রপতি প্রার্থীতা নিশ্চিত করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প জো বাইডেন এর অভিবাসন নীতি সংস্কারের ওপর জোর দিচ্ছেন। ওহাইও কয়েক দশক ধরে একটি উত্তপ্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে। যাইহোক,২০১৬ সালে ট্রাম্প এই রাজ্যে জয়ী হওয়ার পর থেকে রিপাবলিকানদের অবস্থান শক্তিশালী হয়েছে।
ট্রাম্পের মন্তব্যে বিতর্ক? বাইডেনের প্রতিক্রিয়া কী?
তবে ট্রাম্পের এই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। ট্রাম্পের ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যের পর তার মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী, জো বাইডেনের নীতি আমেরিকার অর্থনৈতিক রক্তক্ষরণের দিকে নিয়ে গেছে। ট্রাম্প এটাই বোঝাতে চেয়েছেন কি? ।
অন্যদিকে, জো বাইডেন ট্রাম্পের মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তার অফিসের বিবৃতিতে ট্রাম্পের প্রতিহিংসাপরায়ণতা, সহিংসতার প্রতি ঝোঁক এবং চরমপন্থী আগ্রাসী নীতির সমালোচনা করা হয়েছে। বৈঠকে জো বাইডেন মুখপাত্র বলেছেন, ‘এটাই ট্রাম্পের আসল রূপ। ৭০ লাখের বেশি ভোটে হেরে যাওয়ার পর ভুল শুধরানোর পরিবর্তে রাজনৈতিক সহিংসতার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন।’ উল্লেখ্য যে ট্রাম্প ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তাকে হারিয়ে জো বাইডেন ২০ সালে আমেরিকার ৬২তম রাষ্ট্রপতি হন। ট্রাম্প তার রাষ্ট্রপতি থাকাকালীনও বেশ কয়েকটি বিতর্কে জড়িয়েছেন।
নির্বাচনে জিতলে ট্রাম্প ‘একদিনের জন্য স্বৈরশাসক’ হবেন
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম দিন ছাড়া ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হলে একজন স্বৈরশাসকের মতো দেশ চালাবেন না। অর্থাৎ সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট একদিন ‘স্বৈরশাসক’ হয়ে যাবেন। সম্প্রতি তিনি নিজেই এ কথা জানিয়েছেন।
ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটরা বারবার দাবি করেছে যে ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলে বিরোধীদের ওপর প্রতিশোধ নেবেন। কিছু রিপাবলিকান নেতা আশঙ্কা করছেন যে তার পুনর্নির্বাচন মার্কিন গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
গত মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) এক অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতিকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে ট্রাম্প বলেন, কেবলমাত্র প্রথম দিন ছাড়া আবার নির্বাচিত হলে তিনি স্বৈরশাসক হবেন না।
ক্ষমতায় ফেরার প্রথম দিনেই ‘স্বৈরশাসক’ হয়ে কী করবেন? রিপাবলিকান নেতা বলেছিলেন যে তিনি দক্ষিণ মেক্সিকান সীমান্ত বন্ধ করতে এবং তেল উত্তোলন বাড়াতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ব্যবহার করবেন।
1 Comment