November 9, 2024
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি ১২ নভেম্বর

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি ১২ নভেম্বর

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি ১২ নভেম্বর

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি ১২ নভেম্বর

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, যার পূর্বনাম ছিলো জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামিক  রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশে ইসলামী শরিয়াহ আইন বাস্তবায়ন এই দলের উদ্দেশ্য। দলটি ইকামতে দ্বীন ( ইসলাম  প্রতিষ্ঠা) নামক মতাদর্শকে মূলভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করে এবং একে “রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা” অর্থে দলীয় রাজনৈতিকভাবে ব্যাখ্যা করে থাকে। এটি পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর  অনুসারী  এবং তা মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড-এর আদর্শ ধারণ করে।

বিশ্ব বিখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ , ধর্মতত্ত্ববিদ সামাজিক-রাজনৈতিক দার্শনিক সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী (রহ.) দ্বারা ১৯৪১ সালে ব্রিটিশ ভারতের পাকিস্তান অংশে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাজনৈতিক ডানপন্থী মুসলিম জাতীয়তাবোধের  আন্দোলন। ইসলামের আধুনিক বিপ্লবী ধারণার উপর ভিত্তি করে একটি মতাদর্শ” গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি প্রথম দিকের সংগঠন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর এই দলটি ভারত পাকিস্তানে যথাক্রমে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান নামে পৃথক স্বাধীন সংগঠন হিসেবে গঠিত হয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জামায়াতে ইসলামী কাশ্মীর, ব্রিটেন এবং আফগানিস্তানে (জামায়াত-ই-ইসলামী) সংশ্লিষ্ট বা অন্যান্য দলগুলি প্রবর্তিত হয়েছে জামায়াত-ই-ইসলামী দল অন্যান্য মুসলিম গোষ্ঠীর সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবে সম্পর্ক বজায় রাখে।

রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানির জন্য ১২ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

সোমবার (৬ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগ এ দিন শুনানির আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিয়া আমির।

জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ জামায়াতের ৪৭ জন সমর্থক গত ১ আগস্ট বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দল হিসেবে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাদের পক্ষে   অন রেকর্ড  আবেদন করেন।অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন ।

পরে জামায়াতের লিগ্যাল প্যানেলের সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন সংক্রান্ত আপিল বিভাগে ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য আবেদন করেছেন।

আবেদনকারীদের মধ্যে জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের, হামিদুর রহমান আজাদ, হাফেজা আসমা খাতুন, মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এম উমর আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুর রবসহ তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন।

অন্যদিকে, হাইকোর্টের নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, জনসভা বা মিছিল নিষিদ্ধ করার আবেদনে অংশ নিতে চান ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমির।

জামায়াতের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদনকারী মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী এবং নিবন্ধন বাতিলের হাইকোর্ট বিভাগের রায়সহ তিনজন জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। এবং ১০ বছর পর রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে পৃথক একটি আবেদন করে উনারা।

আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে এ ধরনের আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেন। গত ২৬ জুন আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, একটি রিট আবেদন নিষ্পত্তির পর ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরে হাইকোর্টে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দলটি।

এদিকে দলটির নিবন্ধন সংক্রান্ত মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিষিদ্ধ করার অনুরোধ জানানো হয়। যেখানে নিবন্ধন সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন থাকায় দলটির পক্ষ থেকে নিবন্ধন ফেরত পাওয়ার দাবিকে  আদালত অবমাননার অভিযোগও করা হয়।

সোমবার (৬ নভেম্বর ‘২৩) রাজনৈতিক কর্মসূচি নিষিদ্ধ ও আদালত অবমাননার আবেদন শুনানির জন্য এলে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগ জামায়াতের নিবন্ধন সংক্রান্ত মূল আপিলের শুনানির জন্য ১২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

জামায়াত ইসলামীর পর্যায়ের সকল নেতারা এবং জামায়াত ইসলামীর প্রতিটি কর্মী সত্য বলে এই দাবি করে আসছেন যে, নিবন্ধন বাতিলের সাথে জামাতের অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাতিল হয়ে যায়নি । যেখানে নিবন্ধন পায়নি এবং নিবন্ধন কখনই পায়নি এরকম দল সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে পারে।

নিবন্ধনহীন দল শুধুমাত্র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে না । এর বাইরে সকল কর্মকান্ড করতে পারে বলে জামায়াত ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

দলীযটি দাবি করছি যে, সেই নিবন্ধন বাতিলের প্রক্রিয়াটিও এখন আপিল বিভাগে পেন্ডিং রয়েছে । সেখানে আদালতি রায় দিবে এর আগে কোন রাজনৈতিক দল বা সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ছাড়া অন্যান্য কোন প্রোগ্রামকে, আন্দোলনকে বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অধিকার রাখে না ।

আরও পড়ুন

জামায়াতে কোনো বিভক্তি নেইঃ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবেনা জামায়াত

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X