বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি: বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
বেসিক ব্যাংক জালিয়াতির অর্ধশতাধিক মামলায় প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১২ জুন) দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, বেসিক ব্যাংক জালিয়াতির ৫৯টি মামলায় ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করেছে কমিশন। এর মধ্যে বাচ্চুসহ ৪৬ ব্যাংক কর্মকর্তা এবং ১০১ জন গ্রাহক।
এক যুগেরও বেশি আগে বেসিক ব্যাঙ্ক থেকে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করে দুদকে প্রতিবেদন পাঠায়।
অভিযোগটি তদন্ত করে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ১২০ জনের বিরুদ্ধে ৫৬টি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় ২ হাজার ৩৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। বেসিক ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামসহ ২৭ কর্মকর্তা, ১১ জন সার্ভেয়ার ও ৮২ জন ঋণগ্রহীতাকে আসামি করা হয়। পরে প্রতিষ্ঠানটি আরও কয়েকটি মামলা করে।
জালিয়াতির ঘটনায় সবচেয়ে বেশি উল্লেখ রয়েছে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর নাম। বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ অধিকাংশ প্রতিবেদনে বাচ্চুর সম্পৃক্ততার উল্লেখ রয়েছে। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নিজেই উল্লেখ করেছিলেন, বেসিক ব্যাংকে ‘হরিলুট’-এর পেছনে আবদুল হাই বাচ্চু জড়িত ছিল। জাতীয় সংসদেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংসদীয় কমিটিতেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা।
তবে ওই ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি। তল্লাশির সময় তাকে কখনো পুলিশ ডাকতে হয়নি। আদালতের আদেশে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তাকে প্রথম তলব করে দুদক। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকেসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
দুদক আইনে প্রতিটি মামলার তদন্ত সর্বোচ্চ ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও তদন্তের পরিধি ও জটিলতা বিবেচনায় অতিরিক্ত সময় দেওয়ার রেওয়াজও রয়েছে। কিন্তু বেসিক ব্যাংকের এই অর্ধশত মামলায় নির্ধারিত সময়ের পরও বহু বছর পার হয়ে গেছে।
গত বছরের ২৯ নভেম্বর হাইকোর্ট এ সংক্রান্ত একটি রুল খারিজ করে দুদককে বেসিক ব্যাংক দুর্নীতি মামলার তদন্ত তিন মাসের মধ্যে শেষ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
1 Comment