বিশাল যুদ্ধ পরিকল্পনা শান্তিপ্রিয় জাপানের
ভয়াল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সামরিক পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক পরাশক্তি জাপান। সমর খাতের এ মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানো হবে। টোকিও বলছে, চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান হুমকির কারণে তারা এই উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রতিরক্ষা খাতে ৩২ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করার কথা বলছে জাপান।
চীনের ক্রমবর্ধমান হুমকি এবং প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের ভয়ের পাশাপাশি রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেন আক্রমণের পর জাপানিদের মধ্যে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। এসবই জাপানের সামরিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের প্রধান কারণ।
শুক্রবার জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল প্রকাশ করেছে। এর আওতায়ই প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কয়েক দশক ধরে দেশটির সঙ্গে জুড়ে থাকা ‘শান্তিবাদী’ ভাবমূর্তি একরকম শেষই হতে চলল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত জার্মানির জোটে থাকা জাপানের ওপর বিজয়ী মিত্রশক্তি শান্তিবাদী সংবিধান চাপিয়ে দিয়েছিল। সেই সংবিধানে সামরিক বাহিনীর স্বীকৃতি ছিল না। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী ছিল কার্যত প্রতীকী। এভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে জাপানের তত্কালীন যুদ্ধবাজ ভাবমূর্তি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে শান্তিমুখী হয়। তবে সাম্প্রতিককালে আবার জাপান সামরিক ক্ষেত্রে তত্পরতা বাড়িয়েছে, যা নিয়ে দেশটিতে বিতর্ক রয়েছে।
প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে মোট তিন ধাপের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সরকার। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা ব্যয় ২০২৭ সালের মধ্যে মোট দেশজ উত্পাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশ হবে, যা আগে ছিল ১ শতাংশ। সম্ভাব্য সামরিক ব্যয় অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের দিক থেকে জাপান আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পরই থাকতে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক সেন্টারের কর্মকর্তা নাওকো আওকি বলেন, আত্মরক্ষাকেন্দ্রিক জাপানের আগের অবস্থান প্রতীকী হয়ে গেছে। সর্বশেষ রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেন আক্রমণের পর প্রতিরক্ষায় জাপানের মনোযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।