ইউএসসিআইএস’র তাৎক্ষণিক বহিষ্কারের শিকার বাংলাদেশি
স্বপ্নের আমেরকিাতে থাকা হলোনা মৌলভীবাজারের যুবকের
শাহ্ সুমন, নিউইয়র্ক

নিউইয়র্ক: স্ত্রী ও একমাত্র দুই বছরের সন্তানকে সাথে করে বৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এসেছিলেন বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার যুবক (৩৩)। এখানে এসে অভিবাসন আইনী প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার আবেদনও করেছিলেন ইউএসসিআইএস’এ। যথা নিয়মে নিজের ও স্ত্রী সন্তানের সোশ্যাল সিকিউরিটি এবং ওয়ার্কপারমিটও পেয়েছিলেন। এতে স্বপ্নের আমেরকিায় স্ত্রী—সন্তান নিয়ে বসবাস ও কাজের সুযোগ পেয়ে অনেকটাই স্বস্তিতে ছিলেন। আশ্রয় আবেদন শুনানী তারিখ
কিন্তু তাঁর সেই স্বপ্ন ও স্বস্তি স্থায়ী হলো না। ইউএসসিআইএস’ কতৃর্পক্ষ দ্রুত শুনানী তারিখ নির্ধারণ করেন এবং ওই তারিখে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা তার আবেদন বাতিল করে এক্সপাডাইটেড রিমুভাল বা তাৎক্ষণিক বহিষ্কার ঘোষণা করেন। কোন উপায়ান্তর না দেখে ডিপোর্টেশন এড়াতে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে নিজ থেকেই দেশে ফিরে যান তিনি।
ওই যুবকের স্বজন তার নাম ঠিকানা না প্রকাশ করার শর্তে বাংলা পত্রিকা জানান, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে টুরিস্ট (বি১/বি২) ভিসায় স্ত্রী ও একমাত্র শিশু সন্তানটিকে নিয়ে নিউইয়র্কে আসেন ৩৩ বছর বয়সী ওই যুবক। তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী একটি উপজেলায়। এখানে আসার জন্য দেশে নিজের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছিলেন। নিউইয়র্কে আসার ৩ মাস পর স্ত্রী—সন্তানসহ যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় আবেদন করেন ইউএস সিটিজেনশীপ ও ইমিগ্রেশন সার্ভিসে। যথারীতি তার আবেদন গ্রহণ করা হয় এবং ফিঙ্গার প্রিন্টসহ সকল প্রক্রিয়া শেষে সোশ্যাল সিকিউরিটি এবং ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন করেন ওই যুবক। গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে সোশ্যাল সিকিউরিটি এবং ওয়ার্ক পারমিট পেয়ে নিউইয়র্কে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন। গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে ইউএসসিআইএস থেকে নোটিশ আসে জুনের ৬ তারিখ তার আবেদনের শুনানীর তারিখ। সেই শুনানীতে যাওয়ার পর ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা ওই যুবককে তার আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখান করে ৩ সপ্তাহ সময় দিয়ে তাৎক্ষণিক বহিষ্কারের নোটিশ ধরিয়ে দেন। সেই নোটিশ পেয়ে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন ওই যুবক।
ওই যুবকের স্বজন আরো জানান, এদেশে এসে যারা আশ্রয় আবেদন করেন দীর্ঘ সময় পর্যন্ত শুনানীর অপেক্ষায় থাকতে হয়। কিন্তু তার ক্ষেত্রে এত দ্রত ও হঠাৎ শুনানী হবে সে ভাবতেও পারেনি। আশ্রয় আবেদনের স্টেটমেন্ট এবং ডকুমেন্টও জমা দেয়া হয়নি। শুনানীতে আবেদন বাতিল বা প্রত্যাখান হলে কোর্টে শুনানী আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু তার ক্ষেত্রে সেই সুযোগ ছিলোনা।
একাধিক এটর্নীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায় এটি ইউএসসিআইএস এর আইনী এখতিয়ারে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার দিতে পারে। আগে সেটা তেমন প্রয়োগ হতোনা। এখন ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন কড়াকড়িতে এ আইনের প্রয়োগ পুরো মাত্রায় করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে কি হবে সে নিশ্চয়তা পায়নি সে। এজন্য ডিপোর্টেশন ঝুঁকি এড়াতে জুনের শেষ সপ্তাহে সে স্ত্রী সন্তান নিয়ে দেশে ফিরে গেছে।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসী বিরোধী নীতিতে এবার যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় আবেদনের মাধ্যমে বৈধভাবে কাজের সুযোগ পাওয়া অভিবাসীদের দ্রত বিতাড়নে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ কার্যক্রমের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এতে ইউ. এস সিটিজেনশীপ এন্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস (ইউএসসিআইএস) এ পেন্ডিং থাকা আশ্রয় আবেদন দ্রুত শুনানী করে তাৎক্ষণিক বহিষ্কারের বা এক্সপাডাইটেড রিমুভাল রিমুভাল আওতায় সরাসরি আবেদন বাতিল করা হবে। এমনকি আদালতে শুনানীর সুযোগ দেয়া হবে না। আর এমন ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ এ অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে আশ্রয় আবেদন কারী প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ অভিবাসীকে প্রথম ধাপে বহিষ্কার করা হবে। এজন্য ইউএসসিআইএসকে এনফোর্সমেন্ট ক্ষমতা দেয়া হয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারী ক্রিস্টি নোয়েমের নির্দেশে। ইতিমধ্যে ইউএসসিআইএস সকল প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। সিএনএনের এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনে ট্রাম্প প্রশাসনের এমন বিষ্ময়কর পরিকল্পনার তথ্য জানিয়েছে।
যদিও এর আওতায় অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারীদের এক্সপাডাইটেড রিমুভাল এর মাধ্যমে দ্রত বিতাড়নের করার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু বৈধভাবে প্রবেশ করে আশ্রয় আবেদনকারীকে এক্সপাডাইটেড রিমুভালের শিকার হলেন বাংলাদেশি যুবক।
আমেরিকা এর আরো খবর

মার্কিন আবহাওয়া বিভাগের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন / বন্যায় টেক্সাসে চরম বিপর্যয়

মাস্ক-ট্রাম্প দ্বন্দ্বে মার্কিন রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ / নতুন রাজনৈতিক দল ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠনের ঘোষণা ইলন মাস্কের

মামদানির জয়ে মোদি-ভক্তদের অনর্থ বিষোদ্গার / নিউইয়র্কে মামদানির জয়ে অন্তর জ্বালা শুরু হয়েছে মোদি সমর্থক ভারতীয়দের

ক্যাথি হোকুলের প্রেস সেক্রেটারি যৌন হয়রানির অভিযোগে বরখাস্ত

বিদেশী শিক্ষার্থীদের স্টুডেন্ট ভিসার সুখবর দিল যুক্তরাষ্ট্র
