প্রেসিডেন্ট হওয়ার আর ইচ্ছা নেই এরদোগানের

২০০৩ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী ও পরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকা রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান বৃহস্পতিবার পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, রাষ্ট্রপতি বা অন্য কোনও সরকারি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার তাঁর কোনও ইচ্ছা নেই। হাঙ্গেরি থেকে ফিরে আসার পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় এরদোগান বলেন, "আমার পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার বা রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনও ইচ্ছা নেই। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য দেশের সুনাম বৃদ্ধি করা।"
এরদোগান বলেন, "তুরস্ক বদলে যাচ্ছে, পৃথিবী বদলে যাচ্ছে। আমরা একটি নতুন যুগে বাস করছি। আপনি কি মনে করেন তুরস্কের পুরনো সংবিধান, যা অভ্যুত্থানের সময় তৈরি হয়েছিল এবং যার মধ্যে অভ্যুত্থানের চেতনা রয়েছে, তা ব্যবহার করে আমরা দ্রুত পরিবর্তনশীল এই বিশ্বে কিছু অর্জন করতে পারব?"
এরদোগান বিরোধীদের সংবিধান পরিবর্তনে সহযোগিতা করার আহ্বানও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "তুরস্ক আর অভ্যুত্থানকারীদের লেখা সংবিধান নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে না। আমাদের এমন একটি সংবিধান দরকার যা সাধারণ জনগণের দ্বারা প্রস্তাবিত, অভ্যুত্থানকারীদের দ্বারা নয়।"
এরদোগান প্রায় ২৫ বছর ধরে তুরস্কে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতায় আছেন। ২০২৩ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তিনি আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। দেশের বর্তমান সংবিধান অনুসারে, তার তৃতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ রয়েছে। তবে, এর জন্য নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে আনতে হবে।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করা সত্ত্বেও, অনেকেই এরদোগানের ক্ষমতা ছাড়ার ইচ্ছা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন। কারণ মার্চ মাসে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এবং ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর থেকে এরদোগানের মনোভাব নিয়ে জনসাধারণের সন্দেহ বেড়েছে। ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর থেকে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও, বিভিন্ন জরিপে তার সমর্থন বাড়ছে।
বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে যে, সংবিধান পরিবর্তন করে এরদোগান আরেকটি নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে পারেন। কারণ ২০১৮ সালে প্রবর্তিত দেশটির রাষ্ট্রপতি ব্যবস্থা একজন রাষ্ট্রপতিকে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার অনুমতি দেয়। যদি তিনি তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান, তাহলে সেই বিধান বাতিল করতে হবে। কিন্তু বিধানটি বাতিল করার জন্য সংসদে যে পরিমাণ ভোটের প্রয়োজন, এরদোয়ানের জোটের বর্তমান এমপির সংখ্যা এর চেয়ে কম রয়েছে।
এদিকে, সাংবিধানিক পরিবর্তন কুর্দি জনগোষ্ঠীর অধিকার সম্প্রসারিত করবে কিনা তা এখনও অনিশ্চিত। কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) অস্ত্র রাখার শর্ত হিসেবে রাজনৈতিক স্বীকৃতি চায়। তবে, দেশজুড়ে এই দাবির তীব্র বিরোধিতা করা হচ্ছে।
এরদোগানের ঘনিষ্ঠ একজন নেতা আমিরাত-ভিত্তিক সংবাদপত্র দ্য ন্যাশনালকে বলেছেন, "তিনি (এরদোগান) হয়তো আরও অনেক বছর নেতৃত্ব দিতে চান না। তবে তিনি একটি বেসামরিক, সন্ত্রাসমুক্ত তুরস্ক ছেড়ে যেতে চান।" তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে, সাংবিধানিক পরিবর্তন এরদোগানের ক্ষমতায় থাকার পথ প্রশস্ত করতে পারে।
আরও পড়তে- বাবার মুক্তির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ চাইছেন ইমরান খানের দুই ছেলে
রাজনীতি এর আরো খবর

রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হাজার হাজার মানুষের স্বস্তি / সাড়ে ১০ হাজারেরও বেশি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত

'নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন' নিয়ে তরুণ রাজনীতিকের প্রতিক্রিয়া / পতিতাবৃত্তির মতো মর্মান্তিক নির্যাতন কখনোই পেশা হতে পারে না: সরজিস আলম

নির্বাচনী প্রচারণার সময় ফেসবুক লাইভে গুলিতে নিহত মেক্সিকোর মেয়র প্রার্থী

ফ্যাসিস্ট ও খুনি দলকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজপথে জনতা / আ.লীগ নিষিদ্ধ না করলে সংসদ নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না: এনসিপি

ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই দাবি নির্বাচন নির্বাচন / নির্বাচনের জন্য আন্দোলনের প্রয়োজন নেই: নজরুল ইসলাম খান
