April 29, 2024

Warning: Undefined array key "tv_link" in /home/admin/web/timetvusa.com/public_html/wp-content/themes/time-tv/template-parts/header/mobile-topbar.php on line 53
পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে জীবন শেষ সিএনজি চালকের

পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে জীবন শেষ সিএনজি চালকের

পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে জীবন শেষ সিএনজি চালকের

পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে জীবন শেষ সিএনজি চালকের

পুলিশ, চৌরাস্তায় চেকপোস্ট। কাজ বৈধ। কিন্তু বৈধ চেকপোস্ট থাকলেও তারা অন্য কাজে ব্যস্ত। তারা আইনের নামে অবৈধ কর্মকান্ডে লিপ্ত। গাড়ি থামিয়ে তল্লাশির নামে চাঁদাবাজি করাই তাদের মূল কাজ। কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে চাঁদা আদায় হয় না এমন কোনো চেকপোস্ট রাজধানীশ দেশে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

নির্ধারিত জায়গায় লুকিয়ে রাখা হচ্ছে অনেক টাকা। পকেটে টাকা থাকলে গাড়ি নির্দিষ্ট গন্তব্যে চলে যায়। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে এমন দৃশ্য প্রায়ই দেখা যায়। চেকপোস্টের নামে এই চাঁদাবাজির উৎসব এখন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে।

ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের বেশ কিছু বিপথগামী দুর্নীতিবাজ সদস্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাক-লরি আটক করে চাঁদাবাজি করছে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে থেকে আসা লেগুনা, সিএনজি এমনকি রিকশা থেকেও নিয়মিত ফি আদায় করা হয়। দাবিকৃত চাঁদা না দিলে তারা গাড়ি জব্দ করে এবং বিভিন্নভাবে হয়রানি করে মামলা করে। হুমকিও দেওয়া হয়।

এমন একটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে আজকে। ঘটনাটি হল। চট্টগ্রামের চন্দনাইশে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক নিহত হয়েছেন। পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কায় বিস্ফোরণের পর আগুন লাগলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়িতে থাকা তিন যাত্রী বের হতে পারলেও ভেতরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান চালক আব্দুস সবুর।

সোমবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার গাছবাড়িয়া কালঘর এলাকায় এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এতে সড়কে দীর্ঘ যানজটেরও সৃষ্টি হয়।

নিহত সবুরের বাড়ি সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিম ঢেমশার ইছামতি আলীনগর এলাকায়। তার মৃত্যুর খবর শুনে শিশুসহ পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের কান্নায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তারা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, আব্দুস সবুর যাত্রী নিয়ে পটিয়া থেকে সাতকানিয়া যাচ্ছিলেন। চন্দনাইশের গাছবাড়িয়া বরগুনি সেতুতে সড়কে ট্রাফিক পুলিশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তারা তাকে ধরলে তাকে টাকা দিতে হবে, এই ভয়ে দ্রুত তিনি গাড়ি ঘুরিয়ে নেওয়ার সময় পেছন থেকে বালুবাহী একটি ডাম্প ট্রাক ধাক্কা দেয়। তাতে পেছনের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। অটোরিকশায় আগুন দেখে পুলিশের গাড়ি পালিয়ে যায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা জড়ো হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে। গাছের গুঁড়ি ফেলে এবং ব্যারিকেড দিয়ে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানানো হয়। পুলিশের একটি গাড়ি পার হওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীরা তা ভাঙচুরের চেষ্টা করে। পরে চন্দনাইশ থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ। এ সুযোগে জেলা ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা নিয়মিত অটোরিকশা জব্দ করে চালকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আপনি যদি তাদের অর্থ প্রদান করেন তবে আপনি হাইওয়েতে একটি থ্রি-হুইলার চালাতে পারবেন।

ঘটনাস্থলে সাইফুল নামে এক ব্যক্তি জানান, পুলিশ সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন আটক করছে। দূর থেকে দেখে আব্দুস সবুর অটোরিকশা ঘুরানোর চেষ্টা করলে দুর্ঘটনা ঘটে। অপর এক ব্যক্তি বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতাকে জড়ো হতে দেখে পুলিশ পালিয়ে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেকজন বলেন, সার্জেন্ট গোলাম হোসেন সবুজ মাঝেমধ্যে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে দুই ট্রাফিক পুলিশ সদস্য নিয়ে সেখানে যান। তিনি অটোরিকশা নিয়ে চন্দনাইশ থানায় পাঠিয়ে দেন। তিনি প্রতিটি অটোরিকশা থেকে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা না দিলে মামলা দেয় সে ।

হাইওয়ে পুলিশের দোহাজারী থানার ওসি খান মোহাম্মদ এরফান বলেন, হাইওয়ে পুলিশের কোনো দল ঘটনাস্থলে ছিল না। দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।তবে চট্টগ্রাম জেলা ট্রাফিক সার্জেন্ট গোলাম হোসেন সবুজের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। হাইওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, দুপুর দেড়টা থেকে গাছবাড়িয়ার বরগুনি ব্রিজ এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসায়।

অভিযোগের বিষয়ে সার্জেন্ট সবুজ বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। রমজানে আমাদের রাস্তাঘাটে চেকপোস্ট বন্ধ থাকে। আমি জানি না মানুষ কেন অভিযোগ করছে। মহাসড়কে তিন চাকার গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ। তাই কোনো গাড়ি আটক করা হলে আমরা মামলা করি এবং চন্দনাইশ থানায় পাঠাই। আমি আজ (গতকাল) কোনো গাড়ি আটক করিনি।’

জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) এএনএম ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, “এখন চেকপোস্ট বন্ধ করার নির্দেশনা রয়েছে। এবং জেলা ট্রাফিক পুলিশ বক্সটি দোহাজারীতে রয়েছে। ঘটনাস্থলটি আরও এক কিলোমিটার দূরে। আমি চেকপোস্ট স্থাপনের অভিযোগ পেয়েছি। সবুজের নেতৃত্বে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    Leave a Reply

    Your email address will not be published.

    X