November 23, 2024
প্রেসিডেন্টের ক্ষমা গ্রহণ করতে নারাজ ইমরান খান

প্রেসিডেন্টের ক্ষমা গ্রহণ করতে নারাজ ইমরান খান

প্রেসিডেন্টের ক্ষমা গ্রহণ করতে নারাজ ইমরান খান

প্রেসিডেন্টের ক্ষমা গ্রহণ করতে নারাজ ইমরান খান

ইমরান আহমেদ খান নিয়াজী=ইমরান খান (জন্ম ৫ অক্টোবর ১৯৫২) একজন পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ এবং সাবেক ক্রিকেটার। তিনি আগস্ট ২০১৮ থেকে এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত পাকিস্তানের ২২ তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ১৯৯৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এর চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৮০-এর দশক থেকে ১৯৯০-এর দশকের শুরুর ভাগ পর্যন্ত পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন।

লাহোরে জন্মগ্রহণকারী ইমরান খান অক্সফোর্ডের ক্যাবল কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৭১সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন। তিনি ১৯৯২ সাল পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যান এবং ১৯৮২ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্নভাবে অধিনায়কত্ব করেন। তার নেতৃত্বে, পাকিস্তান ১৯৯২ ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতেছিল, সেটিই ছিল  বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের একমাত্র বিশ্বকাপ জয়।

৯ মে, ২০২৩-এ, ইমরান খানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার করেছিল। তার সমর্থকরা পাকিস্তান জুড়ে মিছিল করে, যার ফলে সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং তার সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার পর খান তার গ্রেফতারের জন্য সেনাপ্রধান অসীম মুনিরকে দায়ী করেন। বিদেশে কূটনৈতিক সফরের সময় গ্রহীতা রাষ্ট্রের হেফাজতে উপহার ক্রয়-বিক্রয়ের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে তাকে ৫ আগস্ট ২০২৩-এ তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়ে। ২৯ শে আগস্ট, ২০২৩-এ, আদালত ইমরান খানের তিন বছরের জেলের সাজা বাতিল করে এবং একজন পাকিস্তানির আবেদনে তাকে জামিন দেয়। যাইহোক, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস আইন লঙ্ঘনের জন্য কূটনৈতিক সাইফার মামলায় কারাদণ্ড হয়েছে। ৩০ জানুয়ারী, ২০২৪-এ, ইসলামাবাদের একটি বিশেষ আদালত ইমরান খানকে ওয়াশিংটনে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক সরকারের কাছে পাঠানো একটি গোপন বার্তা ফাঁস করার জন্য ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়।

শত বাধা-বিপত্তি পার করে, জেল জুলুম হুলিয়াকে উপেক্ষা করে এবং সরকারের হাজার কৌশল ও নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞাকে হেও প্রতিপন্ন করে; ইমরানের দল স্বতন্ত্র থেকে দাঁড়িয়ে পেয়েছে ৯৭ টি আসন এটাই ইমরান খানের  জন্য একটি বড় ধরনের সাফল্য।

সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্য কোনো মিডিয়ার চাপে প্রেসিডেন্ট। আরিফ আলভি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান খানকে ক্ষমা করতে পারেন বলে ধারণা  করা হচ্ছে । কিন্তু ইমরান খান নিজেই এর বিরোধিতা করছেন। পিটিআই মুখপাত্র বলেছেন যে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে এমন ক্ষমা গ্রহণ করবেন না।

তবে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া রাষ্ট্রপতি কাউকে ক্ষমা করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা দ্বিধাবিভক্ত। এরই মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান বিভিন্ন মামলায় মোট ৩১ বছরের জেল খাটছেন।পিটিআই-এর তথ্য সম্পাদক রউফ হাসান বলেন, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন পক্ষ থেকে ইমরান খানের ক্ষমা পাওয়ার  দাবি উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইমরান খান রাষ্ট্রপতিকে এ ধরনের কোনো অনুরোধ বিবেচনা না করার পরামর্শ দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি একটি বিষয়ের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক ক্ষমতা রয়েছে যে কোনো আদালতের দেওয়া যেকোনো শাস্তি ক্ষমা করার। কিন্তু পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা এ ধরনের ক্ষমা কখনোই মেনে নেবেন না।

ইসলামাবাদ হাইকোর্ট গত বছর তোশাখানা মামলায় ইমরান খানের সাজা স্থগিত করলেও, জাতীয় জবাবদিহি ব্যুরো (এনএবি) দ্রুত তাকে তোশাখানা সহ তিনটি পৃথক মামলায় অভিযুক্ত করে। এর মধ্যে রয়েছে সাইফার সংক্রান্ত মামলা বা কূটনৈতিক বার্তা সংক্রান্ত মামলা এবং অনৈসলামিক বিবাহ সংক্রান্ত মামলা। তোসাখানা, সাইফার ও বিয়ের মামলায় ইমরানকে যথাক্রমে ১৪, ১০ ও সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সংবিধানের ৪৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কারাবন্দী ইমরানকে ক্ষমা করার অধিকার রাষ্ট্রপতির রয়েছে। ওই ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আরোপিত যেকোনো দণ্ড ক্ষমা, মওকুফ বা স্থগিত করতে পারবেন।

তবে অনেক সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞ এবং আইন জানেন এমন ব্যক্তিরা বিশ্বাস করেন যে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি যে কোনো শাস্তি ক্ষমা, মওকুফ বা স্থগিত করতে পারেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই রাষ্ট্রপতি এটা করতে পারেন। ইসলামাবাদের একটি জেলা আদালত গত বছরের আগস্টে তোশাখানা মামলায় ইমরান খানকে অভিযুক্ত করার পরে, সিনিয়র আইনজীবী লতিফ খোসা বলেছিলেন যে সংবিধানের ৪৫ অনুচ্ছেদের অধীনে রাষ্ট্রপতি তার নিজের কর্তৃত্বে বা প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে যে কোনও শাস্তি ক্ষমা করতে পারেন। রাষ্ট্রপতির ক্ষমা মঞ্জুর করার ক্ষমতার উপর কোন বাধা নেই। সারা বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের ক্ষমা করার, লঘু করার , যেকোন সাজা বাতিল করার ক্ষমতা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X