আমেরিকা

ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, হাজার হাজার মানুষের জমায়েত

মঙ্গলবার, এপ্রিল ৮, ২০২৫, ১২:০৪ রাত সর্বশেষ আপডেট: বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১০, ২০২৫, ১২:৪৫ রাত
ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, হাজার হাজার মানুষের জমায়েত

ক্ষমতা গ্রহণের তিন মাস যেতে না যেতেই সরকার বিরোধী বিক্ষোভ! আমেরিকায় ইতিহাসে বিরল। তাও আবার এতটা বেশি পাওয়ারফুল সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন।  মনে করা হচ্ছে এ আন্দোলন সূচনা মাত্র। বড় আকার রূপ নিতে পারে এই বিক্ষোভ এবং সরকার বিরোধী গণজমায়েতের।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার ধনবের মিত্র এলন মাস্ক দ্রুত সরকারের কাঠামো পরিবর্তন এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করাকে কেন্দ্র করে  ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার  মানুষ। ফেডারেল রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি সহ বিভিন্ন স্থানে এটি ছিল বিশাল ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভ চলেছে। বলা হচ্ছে যে, সারা দেশে প্রায় ১,২০০টি স্থানে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মেঘলা আকাশ এবং বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা ওয়াশিংটন মনুমেন্টের কাছে জড়ো হয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। আয়োজকরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে ২০,০০০ এরও বেশি মানুষ ন্যাশনাল মলে সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এদিকে, প্রায় ১৫০টি অধিকার গোষ্ঠী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছে।

ওয়াশিংটন মনুমেন্টের কাছে জড়ো হওয়া অনেকেই  বলেন যে, তারা ট্রাম্পের অভিবাসন, কর এবং শিক্ষার মতো নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সমাবেশে এসেছেন। তারা  আরও বলেন যে তারা  অনুভব করেন যে,তাদের দেশ ও তাদের সমস্ত প্রতিষ্ঠান, যেগুলো আমেরিকাকে মহান বানিয়ে তুলেছে, সেগুলোর উপর আক্রমণ হচ্ছে।

বেলা বাড়ার সাথে সাথে স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। কিছু লোক ফিলিস্তিনি কেফিয়া পরে এবং "মুক্ত প্যালেস্টাইন" লেখা প্ল্যাকার্ড ধরে বিক্ষোভে অংশ নেয়। একই সাথে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতারা বিক্ষোভে অংশ নেন এবং ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এই বিক্ষোভকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একদিনের বৃহত্তম আন্দোলন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি রাজনীতিতে একটি মোড় হিসেবে বিবেচিত হয়। বিশ্ব রাজনীতিতে ট্রাম্পের নেতিবাচক ভাবমূর্তি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ট্রাম্পের মাফিয়া মনোভাব এবং ইউএস শেয়ার বাজারের পতন এই প্রতিবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এমন অভূতপূর্ব প্রতিবাদ দেখে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দল ভ্রু কুঁচকে গেছে। রাজনৈতিক স্টেকহোল্ডাররা মনে করেন যে, এর প্রভাব আসন্ন নির্বাচনের উপর পড়তে পারে।

রয়টার্স জানিয়েছে যে বৃষ্টির দিনে মেঘলা আকাশের নীচে ওয়াশিংটন স্মৃতিস্তম্ভের আশেপাশের বিশাল এলাকায় বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়েছিল। আয়োজকরা জানিয়েছেন যে, ন্যাশনাল মলে একটি সমাবেশে ২০,০০০ এরও বেশি মানুষ অংশ নিচ্ছেন। প্রাসঙ্গিক ওয়েবসাই

ট অনুসারে, প্রায় ১৫০টি মানবাধিকার সংগঠন এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছে। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছিল, "এটি এমন একটি দেশ যা বুলি, দানব এবং একনায়কদের নয় - মানবতা, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের দেশ। জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিংকন এবং বারাক ওবামার আমেরিকায় জাতি, ধর্ম এবং বর্ণবাদের কোনও স্থান নেই। ট্রাম্প আমার রাষ্ট্রপতি নন।" তারা "গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনুন", "আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার বন্ধ করুন", "ডোনাল্ড ট্রাম্প, চলে যান, বিশ্ব আপনার বোকামিতে ক্লান্ত", "আমার ভবিষ্যত স্পর্শ করবেন না", "এলনকে বহিষ্কার করুন", "কোন ট্রাম্প নেই, কোন মুখোশ নেই, কোন ফ্যাসিবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেই" - এই ধরণের স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ডও বহন করেছিলেন।

বিক্ষোভকারীরা মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (DOGE) এর নেতৃত্বে ব্যাপক নির্বাহী পদক্ষেপ এবং সংস্কারের প্রতি তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন, যা ২০০,০০০ এরও বেশি ফেডারেল চাকরি বাতিল করেছে এবং সুবিধা হ্রাস করেছে। আয়োজকরা বলছেন যে, বিক্ষোভগুলি তাৎক্ষণিক পরিবর্তন নাও আনতে পারে। তবে তারা দেখাতে চান যে, অনেক আমেরিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প যা দাবি করছেন তা সমর্থন করে না।

বারাক ওবামা ট্রাম্পের পদক্ষেপ সম্পর্কে মুখ খুললেন: প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদক্ষেপ সম্পর্কে মুখ খুললেন। হ্যামিল্টন কলেজে এক সাক্ষাৎকারে ওবামা ট্রাম্পের ফেডারেল সরকার পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা, অভিবাসন ও ভিন্নমতের উপর দমন-পীড়ন এবং মিডিয়া ও আইনি প্রতিষ্ঠানগুলিকে ভয় দেখানোর প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা করেছেন।

শনিবার এনবিসি নিউজে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে ওবামা একের পর এক শুল্ক আরোপের সমালোচনা করে বলেন, "আমি মনে করি না এটি আমেরিকার জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে।" তিনি আরও বলেন, "ফেডারেল সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে হুমকি দিচ্ছে যে, যদি তারা প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশ না করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যা খুবই উদ্বেগজনক।"

ওবামা বলেন, "ভাবুন তো, আমি যদি এইসব কিছু করতাম! যারা এখন চুপ করে আছে তারা আমার বা আমার পূর্বসূরীদের ট্রাম্পের মতো আচরণ সহ্য করতো?"

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বলেন, হোয়াইট হাউস যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার হরণ করার প্রচেষ্টা তীব্র করেছে। যারা বাকস্বাধীনতা অনুশীলন করে তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ট্রাম্প আইন পেশার সাথে জড়িতদের হুমকি দিচ্ছেন। এই ধরনের আচরণ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অসাংবিধানিক।

এখন পর্যন্ত, ট্রাম্প বিশ্বের ৭০ টিরও বেশি দেশের উপর বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করে আর্থিক বাজারকে নাড়া দিয়েছেন। এতে তিনি বিভিন্ন দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে ক্ষুব্ধ করার পর ট্রাম্প ফ্লোরিডায় গল্ফ খেলে সময় কাটাচ্ছেন। এদিকে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে প্রায় ৪০০ জন জড়ো হন। বিক্ষোভকারীরা প্ল্যাকার্ড বহন করে লিখেছিলেন যে বাজার নিম্নমুখী এবং ট্রাম্প গল্ফ খেলছেন।

আমেরিকা এর আরো খবর

ট্রাম্পকে বিতর্কের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন মামদানি

ট্রাম্পকে বিতর্কের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন মামদানি

১ সপ্তাহ আগে
আমেরিকা
ট্রাম্প প্রশাসনের পদ নিয়ে আলোচনায় এরিক অ্যাডামস

ট্রাম্প প্রশাসনের পদ নিয়ে আলোচনায় এরিক অ্যাডামস

১ সপ্তাহ আগে
আমেরিকা
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র পদে তহবিল সংগ্রহে এগিয়ে জোহরান মামদানি

নিউইয়র্ক সিটি মেয়র পদে তহবিল সংগ্রহে এগিয়ে জোহরান মামদানি

২ সপ্তাহ আগে
আমেরিকা
হারিকেন ইরিনের পর খুলছে নিউইয়র্ক ও নর্থ ক্যারোলিনার সৈকত

হারিকেন ইরিনের পর খুলছে নিউইয়র্ক ও নর্থ ক্যারোলিনার সৈকত

২ সপ্তাহ আগে
আমেরিকা
নিউইয়র্কে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা: পর্যটকবাহী বাস উল্টে ৫ জন নিহত

নিউইয়র্কে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা: পর্যটকবাহী বাস উল্টে ৫ জন নিহত

৩ সপ্তাহ আগে
আমেরিকা
নিউইয়র্কে উচ্ছেদের হার ২০১৮ সালের পর সর্বোচ্চ

নিউইয়র্কে উচ্ছেদের হার ২০১৮ সালের পর সর্বোচ্চ

৩ সপ্তাহ আগে
আমেরিকা
সর্বশেষ
ডাকসু নির্বাচনে ‘ট্যাগ’ দেওয়ার রাজনীতির ভূমিধস পরাজয় হয়েছে: আসিফ নজরুল

ডাকসু নির্বাচনে ‘ট্যাগ’ দেওয়ার রাজনীতির ভূমিধস পরাজয় হয়েছে: আসিফ নজরুল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বিজয়ী ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা...

নগর ভবন ৪০ দিন বন্ধ, তবু কোটি টাকার তেল খরচ

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনের...

নগর ভবন ৪০ দিন বন্ধ, তবু কোটি টাকার তেল খরচ

হুন্দাই গাড়ির কারখানা থেকে কয়েকশ কর্মী আটক

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় হুন্দাইয়ের একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন কারখানায় অভিযান চালিয়ে...

হুন্দাই গাড়ির কারখানা থেকে কয়েকশ কর্মী আটক

ট্রাম্পকে বিতর্কের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন মামদানি

নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটপ্রার্থী জোহরান মামদানিকে বিতর্কের আহ্বান জানিয়েছেন অ্যান্ড্রু...

ট্রাম্পকে বিতর্কের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন মামদানি

সমগ্র মুসলিম উম্মার ঐক্য আরো সুসংহত হোক: প্রধান উপদেষ্টা

মহানবী (সা.)-এর অনুপম জীবনাদর্শ, সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ আজকের...

সমগ্র মুসলিম উম্মার ঐক্য আরো সুসংহত হোক: প্রধান উপদেষ্টা

নর্থ ক্যারোলিনায় আগুনে পুড়ে একসাথে চার বোনের মৃত্যু: বেঁচে গেল দুইজন

নর্থ ক্যারোলিনার চ্যাডবর্নে চার কিশোরী বোন বাসায় একা থাকাকালীন সময়ে...

নর্থ ক্যারোলিনায় আগুনে পুড়ে একসাথে চার বোনের মৃত্যু: বেঁচে গেল দুইজন