December 5, 2024
কানাডা আর বাংলা বধের পর পাকিস্তানকে হারিয়ে অন্যতম উচ্চতায় যুক্তরাষ্ট্র

কানাডা আর বাংলা বধের পর পাকিস্তানকে হারিয়ে অন্যতম উচ্চতায় যুক্তরাষ্ট্র

কানাডা আর বাংলা বধের পর পাকিস্তানকে হারিয়ে অন্যতম উচ্চতায় যুক্তরাষ্ট্র

কানাডা আর বাংলা বধের পর পাকিস্তানকে হারিয়ে অন্যতম উচ্চতায় যুক্তরাষ্ট্র

দুর্দান্ত পারফর্মেন্স আর পুরো ম্যাচে ভালো খেলেই জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখানে অভাবনীয় ও অপ্রত্যাশিত শব্দ বলে কিছুই নেই। তবে হ্যাঁ এ যেন বাংলাদেশ দলের জন্য বিরাট বড় সান্তনা! বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর বাংলাদেশ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হয়। আজ ডালাসে সুপার ওভারে পাকিস্তানকে ৫ রানে হারিয়ে বড় চমক দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।এতে বাংলাদেশ দলের জন্য বিশাল স্বস্তির জায়গা সৃর্ষ্টি হয়েছে।

আচ্ছা, কে ভেবেছিল বিশ্বকাপের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে হারিয়ে দেবে। আসলে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্যতম আয়োজক সেটাই করে দেখালেন।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের অভিষেক ইতিহাস গড়ল। একাধিক রেকর্ড ভেঙে কানাডাকে হারিয়েছে তারা। সেই ম্যাচে জয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে বিশ্ব ক্রিকেটকে চমকে দিয়েছে আমেরিকা। এবারও বাংলাদেশের মতো সিংহের থাবায় পড়েছে পাকিস্তান। পূর্ণ সদস্য দেশের সাথে তাদের প্রথম জয় বাংলাদেশের বিপক্ষে। মনক প্যাটেলের দল ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে। এবার বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে আরেকটি পূর্ণ সদস্য চ্যাম্পিয়ন দেশ পাকিস্তানকে হারিয়েছে তারা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় ম্যাচ সুপার ওভারে নিয়ে যায় স্বাগতিকরা। এরপর ইউএসএ যোগ্য দল হিসেবে বাবর আজমের দলকে অপ্রত্যাশিত ভাবনায়  প্রত্যাশিতভাবে হারিয়ে দেয়।

সাবেক অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি বলেছেন, পাকিস্তানের পেস আক্রমণ বিশ্বের সেরা। শাহীন শাহ আফিদি, মোহাম্মদ আমির, নাসিম শাহ এবং হারিস রউফের আক্রমণকে যুক্তরাষ্ট্র বেকার করে দিয়েছে । যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই পরাজয় ভুলে যেতে চাইবেন বাবর।

দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে ১৫৯ রানে থামায় যুক্তরাষ্ট্র। প্রথমেই  দারুণ শুরু করে তারা। প্রথম ৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৪৪ রান করে তারা। স্টিভেন টেলর ১৬ বলে ১২ রান করে পাকিস্তানের প্রথম শিকার হন। তাকে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দেন নাসিম।

এরপর পাকিস্তানের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে ওঠে মনক প্যাটেল ও আন্দ্রেস গাউস। দলীয় স্কোর ১৩ তম ওভারে সেঞ্চুরি হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ৬৮ রানের এই জুটি ভাঙেন হারিস। গাউসের অফস্টাম্প ভেঙে দেন পাকিস্তানি পেসার।

তার আগে শাহীন আফ্রিদিকে টানা চার-ছক্কা মেরে ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন মনক। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক। রিজওয়ান আমিরের হাতে ধরা পড়েন এবং তিনি ৩৮ বলে ৫০ রান করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬ বলে ৪৯ রান প্রয়োজন। আমির, শাহীনের টাইট বোলিং চাপে ফেলে স্বাগতিকদের। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৫ রান। প্রথম তিন ওভারে মাত্র ২৩ রান হারিসের কাঁধে পড়ে দলকে এগিয়ে নেন । প্রথম তিন বলে ৩ রান দিলেও চতুর্থ বলে ফাউলের ​​শিকার হন কানাডার বধের নায়ক অ্যারন জোন্স। ম্যাচে ফের উত্তেজনা। শেষ দুই বলে ছয় রান দরকার। পঞ্চম বলে জোনস একটি সিঙ্গেল নেন এবং নীতীশ কুমার শেষ বলে চার মেরে সুপার ওভারে ম্যাচ সিল করে দেন। ইউএসএ ৩ উইকেটে ১৫৯ রান করে। জোন্স ২৬ বলে দুই চার ও ছয়ে ৩৬ রানে অপরাজিত ছিলেন এবং নীতীশ ১৪ রানে খেলছিলেন।

সুপার ওভারে বোলিং করেন আমির। এই পেসারের বোলিং ছিল বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা। প্রথম বলেই চার মারেন জোন্স। দ্বিতীয় বলে দুই রান নেন আমেরিকান ব্যাটার। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নেন তিনি। পরেরটি ওয়াইড, যোগ করেছেন দুই রান। আরও দুটি ওয়াইড দিলেন পাকিস্তানি পেসার। শেষ বলে রান আউট হন জোন্স। ১৯ রানের কঠিন টার্গেট দেয় স্বাগতিকরা।

সেই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়েছিলেন ফখর জামান ও ইফতেখার আহমেদ। বোলিংয়ে আসেন সৌরভ নেত্রভালকর। তিনি প্রথম বলটি ডট করেন। দ্বিতীয় বলেই চার মারেন ইফতেখার। পরেরটি ছিল প্রশস্ত। তৃতীয় লিগ্যাল বলে দুর্দান্ত ক্যাচ দিয়ে ইফতিখারকে ফেরান নীতীশ। পরেরটি ওয়াইড, তারপর লেগ বাই থেকে চার রান যোগ হয়। পঞ্চম বলে দুই রান নেন শাদাব খান। শেষ বলে লাগে ৭ রান। ছক্কা মেরে আরেকটি সুপার ওভারে  নিতে পারেননি পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান। পাকিস্তানের সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৩ রান।

সুপার ওভারে ৫ রানে জিতে আরেকটি ইতিহাস গড়ার আনন্দে গ্যালারি উল্লাসে মেতে ওঠেন ক্রিকেটাররা। পাকিস্তান প্রথমবারের মতো অপূর্ণ সদস্য দেশের কাছে হেরেছে।

‘এ’ গ্রুপে দুটি ম্যাচ খেলে ১০০% সাফল্য নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে টেক্সাসে আগে ব্যাট করে বিপদে পড়েছিল পাকিস্তান। ২৬ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে টেনে নেয় বাবর (৪৪) ও শাদাব (৪০) । নাস্তুশ কেনজিগে তিন উইকেট নেন ১৫৯ রানে। দুই প্যান সৌরভ।

ম্যাচে ব্যক্তিগত যত রেকর্ড

  • এই ম্যাচে দুটি উইকেট নেন সৌরভ নেত্রভালকর। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে ২৯ উইকেট নিয়ে এই পেসার সর্বকালের সেরা বোলার। পেছনে ফেলেছেন নিসর্গ প্যাটেল যিনি নিয়েছেন ২৭ উইকেট।
  •  স্টিভেন টেলর টি-টোয়েন্টিতে ১০  টি ক্যাচ নিয়ে মার্কিন ফিল্ডার হিসাবে নিসর্গকে (৯) ছাড়িয়ে গেছেন।
  •  বাবর আজম টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবে বিরাট কোহলিকে ছাড়িয়ে গেছেন। পাকিস্তানি অধিনায়কের রান ৪০৬৭। দুইয়ে কোহলি ৪০৩৮ রান নিয়ে।
আরও পড়ুন

জোন্সের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ওপেনিং ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের হাই-ভোল্টেজ ম্যাচ জয়

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X