শীতে শরীর গরম রাখবে যে খাবারগুলো
শীত এসেছে। ঠাণ্ডায় শরীর গরম রাখতে প্রথমেই যেটা মাথায় আসে তা হল গরম কাপড়। তবে গরম কাপড়ের পাশাপাশি আরও একটি কাজ করা জরুরি। অর্থাৎ খাবার খেতে হবে। শীতকালে এমন কিছু খাবার আছে যা শরীরকে গরম রাখে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে ভেতর থেকে গরম রাখে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো কি-
ডিম
ডিমকে বলা হয় ‘শক্তির বাতিঘর’। ডিম শুধু আপনার শরীরকে উষ্ণ রাখে না, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ভিটামিন, যা আপনার শরীরকে শীতকালে বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করবে। তাই এই শীতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তত একটি করে ডিম রাখা উচিত।
মধু
মধুর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সবাই জানেন। মধু ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখে। এটি শরীরে তাপ উৎপাদনে সাহায্য করে। ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ঘি
ঘি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনবদ্য ভূমিকা পালন করে। শীতে শরীর গরম রাখতে নিয়মিত খাদ্য তালিকায় সামান্য ঘি পাতে রাখতে পারেন।
আদা
শীতের সকালে তুলসি পাতা দিয়ে আদা চা পান করলে শরীরে উষ্ণতা অনুভব করা যায়। আদা এবং তুলসি শরীরে থার্মোজেনেসিস প্রক্রিয়া বাড়ায়, হজম ও রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। তাই শীতে আদা চা পান করুন।
যখনই চা খাবেন, আদা চায়ে চুমুক দিতে ভুলবেন না। আদা এমনিতেই সর্দি-কাশির জন্য উপকারী। আদা চা’তে তাপ মিলবে। আদা শরীরে তাপ সরবরাহ করে।
গরম স্যুপ
খনিজ ও ভিটামিন সমৃদ্ধ যেকোনো গরম স্যুপ শীতে শরীরকে উষ্ণ রাখে। শীতকালে রাতের খাবার হিসেবে স্যুপ খেতে পারেন। এতে চিকেন বা সয়াবিন যোগ করলে বেশি ফল পাওয়া যাবে। এমন মৌসুমে এক বাটি গরম সবজির স্যুপের চেয়ে আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যকর আর কিছু হতে পারে না। সকাল, বিকেল বা রাতে যেকোনো সময় খেতে পারেন গরম সবজির স্যুপ। দুই বা ততোধিক সবজি যোগ করুন। স্যুপ আপনাকে গরম রাখবে।
মাংস
গরু, গরু বা হাঁসের যে কোনো মাংসই শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। শীতকালে, আপনি প্রতিদিন যে কোনও সময় মাংস রাখতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত খাওয়া না হয়।
কমলা, গাজর, পেয়ারা
শীতকালে অতিরিক্ত ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। ভিটামিন ‘সি’ ও ‘এ’-এর প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে।এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তা ছাড়া এ সময় ত্বক রুক্ষ থাকে।তাই খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ‘সি’ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কমলা, গাজর বা পেয়ারার মতো ফলের ওপর নির্ভর করতে পারেন।
তিল বীজ
অনেকে অফিসে বা বাইরে ব্যাগে করে স্ন্যাকস নিয়ে যান। যেহেতু শীতে একটু ভিন্ন খাবার খেতে হয়, তাই তিল-ময়দার কম্বিনেশনের খাবারের দিকে নজর দিন। তিল বা তিসি শরীরে তাপ উৎপন্ন করে। এগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টেও সমৃদ্ধ। এছাড়াও তিল শরীরে আয়রনের অভাব পূরণ করে।
দুধে হলুদ গুঁড়ো
প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করুন। তবে শীতের উপলক্ষ্যে অতিরিক্ত সামান্য পরিমাণে হলুদ গুঁড়ো যোগ করুন। এক গ্লাস দুধে এক চা চামচ বা অল্প পরিমাণ হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে খান। এতে শরীরে তাপ ছড়াবে।
ডাল বা শস্য
মূলত, উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ এসব উদ্ভিজ্জ খাবার শরীরে যথেষ্ট জ্বালানি জোগায়। তাই ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচতে এই খাবারগুলো খুবই উপকারী। মসুর ডাল, মুগ বা মাশকলাই যাই খান না কেন, শীতে একটু বেশিই খান। শরীরে শক্তি থাকবে এবং তাপ হারাবে না।
শুকনো ফল
পেঁপে এবং আনারস শরীরে তাপ প্রদান করে বলেও বিশ্বাস করা হয়। এ ছাড়া শীত মৌসুমে শুকনো ফল খুবই উপকারী। গরমের জন্য খেজুর খেতে পারেন। এ ছাড়া অন্যান্য শুকনো ফলও সমান উপকারী। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তা ছাড়া এ সময় ত্বক রুক্ষ থাকে।
ঝাঁঝালো মসলা
রান্নাঘরে আছে দারুচিনি, এলাচ বা লবঙ্গ। এগুলি চা বা তরকারিতে ব্যবহার করুন। এই মশলা তাদের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনন্য। এতে শরীরের তাপমাত্রাও বাড়বে।
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
আপনার হাত পা সবসময় ঠান্ডা থাকলে আপনার আয়রনের ঘাটতি বা রক্তশূন্যতা হতে পারে। শরীরের সমস্ত অংশে অক্সিজেন বহনের জন্য আয়রন সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। তাই শরীর গরম রাখতে পর্যাপ্ত আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। লাল মাংস , কলিজা, হাঁস এবং মুরগির মাংসেও আয়রন থাকে। এছাড়াও খেতে পারেন কলা, সবুজ মটরশুটি, সবুজ মটরশুটি, মূলা, মটরশুটি, ছোলা, ছোলা, সবুজ মটরশুটি, ফুলকপির ডাঁটা, ধনে পাতা, কালো মটরশুটি, শালগম, পাকা তেঁতুল, মটরশুটি, স্ট্রবেরি, তরমুজ, আপেল, পেয়ারা, বেদানা, ও , লাল চাল. কিশমিশ, কুমড়ার বীজ, খেজুর, আখরোট, বাদামেও শুষ্ক ফলের মধ্যে আয়রন থাকে। এগুলো খাওয়ার ফলে শরীর যথেষ্ট আয়রন পাবে এবং এর মাধ্যমে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে।
1 Comment