May 16, 2024

Warning: Undefined array key "tv_link" in /home/admin/web/timetvusa.com/public_html/wp-content/themes/time-tv/template-parts/header/mobile-topbar.php on line 53
শীতে শ্বাসকষ্ট-হাঁপানি থেকে মুক্তি পেতে করণীয়

শীতে শ্বাসকষ্ট-হাঁপানি থেকে মুক্তি পেতে করণীয়

শীতে শ্বাসকষ্ট-হাঁপানি থেকে মুক্তি পেতে করণীয়

শীতে শ্বাসকষ্ট-হাঁপানি থেকে মুক্তি পেতে করণীয়

শীতের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট-হাঁপানি বা অ্যাজমার সমস্যাও বাড়ে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে অ্যাজমা রোগীরা বছরের যে কোনো সময় সমস্যায় ভোগে, তবে শীতকালে এর প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়। তাহলে চলুন জেনে নিই এই রোগের বিভিন্ন কারণ এবং এই সময়ে করণীয় বাড়তি সতর্কতা সম্পর্কে।

প্রকৃতপক্ষে, আমাদের দেশের পাশাপাশি বিশ্বে অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা বারবার বলছেন, বায়ু দূষণই এই সমস্যার মূল কারণ। এখন নবজাতক থেকে প্রাপ্তবয়স্ক পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই রোগ নিয়ে ভাবতে হবে।

হাঁপানি কি?

আমাদের ফুসফুসে অনেক সরু নালী থাকে যার মাধ্যমে ফুসফুস থেকে শরীরের বাকি অংশে অক্সিজেন সরবরাহ হয়। যাইহোক, যদি ধূলিকণা, অ্যালার্জেন বা অন্যান্য কারণের কারণে শ্বাসনালী পেশী স্ফীত হয় বা ফুলে যায়,তাহলে এই অক্সিজেন বহনকারী শ্বাসনালীগুলি সরু হয়ে যায়। এর ফলে আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাব হয় এবং শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করি, যাকে আমরা হাঁপানি বলি।

উপসর্গঃ

কারো হাঁপানি আছে কিনা কিছু উপসর্গ বলে দিতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ-

১.হাঁপানির ক্ষেত্রে রোগীর শ্বাসনালী সরু হয়ে যায় এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

২. বুকে চাপ অনুভূত হয়।

৩. কাশি, বুকে বাঁশির মতো শব্দ ইত্যাদি।

যে কারণে এই রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে তা হলঃ
  • হাঁপানি শ্বাসনালীর একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনিত রোগ। এটি প্রাথমিকভাবে বংশগত রোগ হলেও সাম্প্রতিক সময়ে অতিরিক্ত পরিবেশ দূষণের কারণে এ সমস্যা বাড়ছে।
  • প্রতি বছর শীতকালে ৮০ শতাংশ শিশু এবং ৪০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কদের হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট হয় এবং এর তীব্রতা বেড়ে যায়।
  • বাতাসে ধুলার পরিমাণ বেড়ে গেলে।
  • চুলার ধোঁয়া (পোড়া কাঠ বা অন্যান্য জ্বালানি থেকে) ।
  • ঠান্ডার কারণে।
  • কুয়াশা বা প্রচন্ড শীত ইত্যাদিতে ভ্রমণে এ রোগ হলে রোগীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।
  • অত্যধিক কাশি বুকে শ্বাসকষ্টের অনুভূতি সৃষ্টি করে। তখন মাঝে মাঝে বুকের মধ্যে বাঁশির আওয়াজ শোনা যায়।
  • শ্বাসনালী স্ফীত এবং সরু হয়ে যায়। ফলে অ্যাজমার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • অ্যালার্জি অ্যাজমার অন্যতম প্রধান কারণ।
  • বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের তীব্র গন্ধ বা গ্যাস হাঁপানির সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
  • কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও হাঁপানির সমস্যা হতে পারে।
  • ঋতু পরিবর্তনের ফলে জ্বর, সর্দি ও কাশির জটিলতার পাশাপাশি হাঁপানির প্রকোপ বাড়তে পারে।
  • যারা খুব বেশি ফাস্টফুড এবং জাঙ্ক ফুড, ঠাণ্ডা পানি বা ঠান্ডা পানীয় খাওয়ার অভ্যাস তাদের হাঁপানির সমস্যা বাড়ায়।
  • এছাড়া অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও বিষণ্ণতা হাঁপানির সমস্যাকে অনেক বাড়িয়ে দেয়।
  • হাঁপানি রোগীদের জন্য ঠাণ্ডা আবহাওয়া, সর্দি, ফ্লু বা সর্দি বড় কষ্ট ও বিপদ ডেকে আনতে পারে।
শ্বাসকষ্ট থেকে রক্ষা পেতে করণীয়ঃ
  • আপনার সর্দি হলে, নাক মোছার জন্য রুমালের পরিবর্তে টিস্যু ব্যবহার করুন।
  • ঘন ঘন নাক, চোখ এবং মুখ স্পর্শ করবেন না।
  • হাঁপানি রোগীরা প্রতি বছর শীতের শুরুতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ফ্লু ভ্যাকসিন নিতে পারেন।
  • কুকুর, বিড়াল বা পোষা পাখিদের শোবার ঘর থেকে দূরে রাখুন। আসবাবপত্র শুকনো রাখুন, ধুলো জমতে দেবেন না।
  • আপনার ইনহেলার, ওষুধ, নেবুলাইজার ইত্যাদির সরবরাহ পর্যাপ্ত এবং কার্যকরী কিনা তা পরীক্ষা করুন।
  • যারা সকালে বা সন্ধ্যায় হাঁটতে বের হন তাদের এই সময় এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ, এ সময় পরিবেশের তাপমাত্রার তারতম্য বেশি থাকে, শিশির থাকে, কুয়াশা থাকে ফলে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কাও থাকে বেশি। বাড়িতে একটু হাঁটা বা ব্যায়াম করুন।
  • এ সময় পরিবেশে ধূলিকণা ও উড়ন্ত ফুলের রেনু ও কণা বেশি থাকে। বাইরে বের হওয়ার সময় সতর্ক থাকুন।
  • ধুলা এড়াতে রাস্তায় চলাচলের সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার করা হয়।
  • যেকোনো স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এড়িয়ে চলুন।
  • মশার কয়েলের ধোঁয়া থেকেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।
  • মশার স্প্রে ছিটানোর সময় নিরাপদ দূরত্বে থাকুন কারণ এটিও বেশ ক্ষতিকর।
  • ফ্রিজ থেকে ঠাণ্ডা খাবার খাবেন না, গরম করে খাবার খান।
  • শীতের কাপড় রোদে শুকিয়ে নিন।
  • বাইরে বেরোনোর সময় অবশ্যই সাথে গরম শীতের কাপড় রাখবেন ।
  • গরুর মাংস, চিংড়ি মাছ,বেগুনে অনেকের অ্যালার্জি হয়, সেই অ্যালার্জি থেকে শ্বাসকষ্টও  হতে পারে । যথাসম্ভব এগুলো এড়িয়ে চলুন।
  • ঘর পরিষ্কার রাখুন।
  • আপনার বাড়িতে পোষা প্রাণী থাকলে অতিরিক্ত সতর্কতা প্রয়োজন। প্রয়োজনে তাদের নাকে-মুখে  সহনশীল কাপড় বেঁধে রাখুন।
  • ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস রাখুন।
  • কাঁথা, বালিশ, লেপ কম্বল নিয়মিত রোদে রাখুন।
  • নিয়মিত পরিষ্কার কাপড় পরুন, বিছানার চাদর নিয়মিত পরিবর্তন করুন।
  • কার্পেট এবং গালিচায় প্রায় সময় লুকিয়ে ধুলা লেগে থাকে । এগুলো ব্যবহারে সতর্ক থাকুন।
  • সর্বোপুরি ইনহেলারসহ প্রাথমিক চিকিৎসা অনুষঙ্গ গুলো রাখুন সাথেই রাখুন।
  • জটিল অবস্থায় অবশ্যই নিকটস্থ হসপিটাল অথবা ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার বিশেষ কিছু কাজঃ
  • ধূমপান চিরতরে ত্যাগ করুন
  • পুষ্টিকর সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খান
  • ব্যায়াম নিয়মিত
  • শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম শিখুন
শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম:

(প্রথমে পিঠ সোজা করে বসুন। ১থেকে ২ গুনতে গুনতে  স্বাভাবিকভাবে নাক দিয়ে শ্বাস নিন। এখন ঠোঁট গোল করে ১ থেকে ৪ পর্যন্ত গুনতে গুনতে  মুখ দিয়ে জোরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন। এক বা দুই মিনিটের জন্য এটি বারবার অনুশীলন করুন। এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াবে।)

চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নিয়ম মেনে চললে হাঁপানিকে দূরে রেখে সুস্থ জীবনযাপন করা সম্ভব। তাই সঠিকভাবে ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন করুন।

হাঁপানি একটি মারাত্মক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিই জানেন জীবনে এগিয়ে যেতে কত কষ্ট করতে হয়।

আরও পড়ুন

শীতে ত্বক সুস্থ রাখার সহজ উপায়

    1 Comment

    Leave a Reply

    Your email address will not be published.

    X