May 16, 2024

Warning: Undefined array key "tv_link" in /home/admin/web/timetvusa.com/public_html/wp-content/themes/time-tv/template-parts/header/mobile-topbar.php on line 53
ডেঙ্গু স্যালাইন নিয়ে নৈরাজ্য

ডেঙ্গু স্যালাইন নিয়ে নৈরাজ্য

ডেঙ্গু স্যালাইন নিয়ে নৈরাজ্য

ডেঙ্গু স্যালাইন নিয়ে নৈরাজ্য

ডেঙ্গু সহ বিভিন্ন রোগে ব্যবহৃত তরল  আই ভি  তরল বা স্যালাইনের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। হাসপাতাল, ফার্মেসি কোথাও পর্যাপ্ত স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। ন্যায্য মূল্যে তো  নয় ই । গ্রাম-শহর সর্বত্রই ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ। আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য তরল স্যালাইন সবচেয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপাদান। কিন্তু ডেঙ্গুকে ঘিরে স্যালাইনের সংকট তৈরি করা  হয়েছে। আবার যেখানে স্যালাইন পাওয়া যায়, সেখানে কয়েক গুণ দাম দিতে হয়। যার জন্য রোগীর স্বজনরা দিশেহারা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্যালাইনের বড় সরবরাহ প্রয়োজন। এ জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক। এবিএম খুরশীদ আলম। সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের পর থেকে স্যালাইনের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। যা উৎপাদন ও সরবরাহের তুলনায় কম।

সাধারণত আধা লিটার স্যালাইন ৭০ টাকায় এবং এক লিটার স্যালাইন ৯০-১০০ টাকায় ফার্মেসিতে বিক্রি হয়। বর্তমান সংকটের কারণে ৯০ টাকার স্যালাইন ২০০ টাকা পর্যন্ত কিনছেন বলে জানিয়েছেন রোগীর স্বজনরা। সরকারি হাসপাতালে স্যালাইন পাওয়া গেলেও বেসরকারি হাসপাতালে সমস্যায় পড়ছেন ভুক্তভোগীরা। অন্যদিকে বেশ কিছু ফার্মেসিতে ইচ্ছাকৃতভাবে মজুদ বা চড়া দামে বিক্রি করে কৃত্রিম সংকটের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

ডিএনএস স্যালাইন কি?

ডিএনএস (ডেক্সট্রোজ নরমাল স্যালাইন) স্যালাইন হল সোডিয়াম ক্লোরাইড সমৃদ্ধ স্যালাইন, যা হাইপোগ্লাইসেমিয়া রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পুনরুদ্ধার করে। এটি সাধারণত ডেঙ্গু রোগীদের বয়স অনুযায়ী কম বা বেশি মাত্রায় দেওয়া হয়।

ঢাকাতেও ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের ফার্মেসী গুলি, পিজি  হসপিটাল এর সাথে শাহবাগের ফার্মেসি গুলি এবং ঢাকা শহরের অন্যান্য বড় বড় ফার্মেসী গুলিতে গিয়ে রোগীর স্বজনেরা বহু চেষ্টা করেও স্যালাইন পাচ্ছেন না । এবং স্যালাইন এর দাম পাঁচ ছয় গুন পর্যন্ত বাড়িয়ে রাখা হচ্ছে । এই কৃত্রিম সংকটের  পিছনে কাজ করছে বড় ধরনের ক্ষমতার ছত্রছায়ায় মানুষরূপী অমানুষদের সিন্ডিকেট ।এবং ঢাকার বাইরেও বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ সারা বাংলাদেশই  এভাবে মানুষের এই কঠিন রোগকে খেলার ছলে, অবহেলা করে অসাধু ফার্মেসী ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্যালাইনের   কৃত্রিম সংকট  সৃষ্টি  করে রোগীদেরকে মৃত্যুপথে  ঠেলে দিচ্ছে  । কিন্তু এগুলো দেখার মত অবস্থা বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীনদের আছে কিনা জানা নেই।

গতকাল  চট্টগ্রামের ফার্মেসীগুলোতে ১০০ টাকার স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। ডেঙ্গু নিরাময়ের জন্য ডিএনএস স্যালাইন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ  উপাদেয় । ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের সময় স্যালাইনের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু রোগীর স্বজনরা সেই স্যালাইন সংকটে ভুগছেন। একটি অসাধু চক্র কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত দাম আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় এ ওষুধ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে দোকানে কিনতে গেলে বলে স্যালাইন শেষ, অন্য কোথাও দেখেন । এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ডেঙ্গু রোগীর অসহায় স্বজনরা।

ডেক্সট্রোজ নরমাল স্যালাইনের (ডিএনএস) দাম ১০০ টাকা। কিন্তু ফার্মেসিতে বিক্রি হচ্ছে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়। তাছাড়া ফার্মেসিতে ডিএনএস থাকা সত্ত্বেও বেশি দামে বিক্রির জন্য ক্রেতাকে  নাই  বলে ফেরত দিচ্ছে বিক্রেতারা । এভাবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘিরে ডিএনএস নিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। ডিএনএস নিয়ে নৈরাজ্য করা হচ্ছে। ফলে অতিরিক্ত দামে এই স্যালাইন কিনতে হচ্ছে রোগীদের। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ফার্মেসিগুলোতে অভিযান পরিচালনা করলেও ফার্মেসিগুলোতে দৌরাত্ম্য থামছে না। চট্টগ্রামে গত ৮ মাসে ৫৩ জনের মৃত্যু এবং ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৭৮৭ জন। নগরীর হাজারীগলি ও চকবাজার এলাকার ফার্মেসিগুলোতে মজুদ থাকলেও ডিএনএস বিক্রি হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। বাজারে পাওয়া যায় না বলে প্রথমে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, পরে স্ফীত দামে বিক্রি করা হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদের।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ডিএনএস থাকা সত্ত্বেও তা বিক্রি না করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও অমানবিক কাজ। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে অনিয়ম ধরা পড়ে শাস্তির আওতায় আনা হয়।  ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক এস এম সুলতানুল আরেফিন বলেন, আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের কারণে ডিএনএস স্যালাইনের চাহিদা বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি সংকট সৃষ্টি করেনি। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় অনেক সময় সমস্যা দেখা দেয়। ফলে ওষুধের দোকানগুলো দাম বাড়ায়। এটাই কৃত্রিম সংকটের অন্যতম কারণ ।

আরও পড়ুন

ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে, দেশে রেকর্ড, আগস্টেই ৫০ হাজারের বেশি রোগী ভর্তি

জানা গেছে, ডিএনএস স্যালাইন ঘিরে কৃত্রিম সংকটের এ চিত্র গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটের সামনে দেখা গেছে। জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মচারী রোগীর সাজে সেখানে ওষুধের দোকানে গিয়ে ডিএনএস স্যালাইন পাননি। দোকানে স্যালাইন নেই বলে তাদের সাফ  জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে অভিযান চালানোর পরপরই ম্যাজিস্ট্রেট দোকান থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ডিএনএস স্যালাইন বের করেন। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য এ অপকর্ম করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এর পেছনে কাজ করছে ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট। তাদের কারণে স্যালাইনের বাজারে ব্যাপক নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের উপ-পরিচালক নুরুল আলম বলেন, “একটি অশুভ চক্র এইভাবে সংকট দেখানোর পেছনে কাজ করছে। তারা একটি সিন্ডিকেট গঠন করছে। তথ্য-উপাত্ত দেখে বোঝা যাচ্ছে, বাস্তবে কোনোই সংকট নেই।

    2 Comments

    Leave a Reply

    Your email address will not be published.

    X