May 16, 2024

Warning: Undefined array key "tv_link" in /home/admin/web/timetvusa.com/public_html/wp-content/themes/time-tv/template-parts/header/mobile-topbar.php on line 53
বিষের বোতল হাতে নিয়ে ভাইভা বোর্ডে চাকরি প্রার্থী

বিষের বোতল হাতে নিয়ে ভাইভা বোর্ডে চাকরি প্রার্থী

বিষের বোতল হাতে নিয়ে ভাইভা বোর্ডে চাকরি প্রার্থী

বিষের বোতল হাতে নিয়ে ভাইভা বোর্ডে চাকরি প্রার্থী

প্রহসন, পরীক্ষার আগেই নিয়োগ হয়ে যাওয়া, দুর্নীতি,ঘুষ দিয়ে চাকরি, অযোগ্যদের সুপারিশের মাধ্যমে চাকরি দেয়া,  ব্যবসা-বাণিজ্য টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া ।এগুলো বাংলাদেশের নিত্যনৈমিত্তিক সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।  যেগুলো পৃথিবীর আর কোথাও আছে বলে মনে হয় না  । তাই আজকে ভাইবা পরীক্ষায় একটি সাধারণ মালির পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য এবং স্থায়ী নিয়োগ পাওয়ার জন্য  বিষের বোতল হাতে নিয়ে পরীক্ষার ভাইভাতে উপস্থিত হতে  হয়েছে।

যা বাংলাদেশ এর জন্য এবং সমস্ত শিক্ষা ব্যবস্থা  আর  নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায়  । এর চেয়ে বড় কথা হলো চাকরির নিশ্চয়তার ক্ষেত্রে কি পরিমান  শঙ্কা নিয়ে চাকরির ভাইভাতে যেতে হয়।  সেটা এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভালোভাবেই অনুমেয়।  মহান সৃষ্টিকর্তা এ সকল ঘটনা থেকে সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় করে দিন।  তা নিয়েই আজকের লেখার আয়োজন।

শিক্ষার ক্ষেত্রে, যেখানে জ্ঞান এবং সততা সর্বাগ্রে,সেখানে বাংলাদেশে  অহরহ  প্রহসন মূলক  ভাইভা পরীক্ষার ঘটনাটি নৈতিক মান ক্ষয়ের জন্য একটি বিরক্তিকর প্রমাণ হিসাবে দাঁড়িয়েছে। ভাইভা পরীক্ষা, একটি মৌখিক মূল্যায়ন যা একজন শিক্ষার্থীর বোঝাপড়া, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং যোগাযোগের দক্ষতা মূল্যায়ন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যখন তা  দুর্নীতির শিকার হয় তখন কলঙ্কিত হয়ে যায়।

একটি কলুষিত, প্রহসন মূলক ভাইভা পরীক্ষা মেধার প্রতিস্থাপন পক্ষপাতিত্ব, প্রতারণা এবং অসততার দ্বারা হয়। যেখানে শিক্ষার মূল সারাংশকে ক্ষুণ্ন করে। এই ধরনের ঘটনা শুধুমাত্র নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টাকে অবমূল্যায়ন করে না বরং শিক্ষা ব্যবস্থার  বিশ্বাসযোগ্যতাও নষ্ট করে। যখন স্বজনপ্রীতি বা ঘুষ ভাইভা পরীক্ষাকে প্রভাবিত করে, তখন যোগ্যরা প্রায়শই অযোগ্যদের দ্বারা ছেপে  যায়, শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহের সৃষ্টি করে।

উপরন্তু, একটি দূষিত ভাইভা পরীক্ষা মধ্যমতার একটি চক্রকে স্থায়ী করে, যা শিক্ষার্থীদের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য প্রচেষ্টা করতে নিরুৎসাহিত করে। যখন সাফল্য প্রকৃত বোঝাপড়া এবং কঠোর পরিশ্রমের উপর ভিত্তি করে হয় না, তখন উৎকর্ষ সাধনের প্রণোদনা হ্রাস পায় এবং জ্ঞানের অন্বেষণ দুর্নীতি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।

যে ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে;

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সাক্ষাৎকারে হাসমত নামের এক প্রার্থী বিষের বোতল নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। শনিবার (১২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে মালি নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে।

যদিও  বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে ওই প্রার্থী এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন। চাকরি না দিলে তিনি বিষপান করে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দেন বোর্ডের সদস্যদের। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় ওই প্রার্থীর অঙ্গীকারনামা নিয়ে বিষের বোতল প্রক্টরের দপ্তরে জমা রাখা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, হাসমত বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করেন। তিনি দীর্ঘ ২০-২২ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রি শাখায় অস্থায়ীভাবে দৈনিক মজুরিভিত্তিতে কাজ করে আসছেন। সবশেষ মালি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে স্থায়ী চাকরির আশায় তিনি আবেদন করেন। আর চাকরি হওয়া অনিশ্চিত বুঝতে পেরে আবেগের বশে তিনি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল কে এম সালেহ এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘ওই লোক নিয়োগ পাওয়ার জন্য বিষের বোতল নিয়ে ভাইভা দিতে আসে। পরে ওসিকে খবর দেওয়া হয়। ওসির উপস্থিতিতে তার কাছে অঙ্গীকারনামা লিখে নেওয়া হয়। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

প্রক্টর অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘দুপুরের দিকে উপাচার্যের একান্ত সচিব আমাকে বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থলে যাই। আমি সেখানে গিয়ে দেখলাম, একটি বিষের বোতল রাখা আছে। এরপর নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের মাধ্যমে জানতে পারি ওই ব্যক্তি নিয়োগ পাওয়ার জন্য বিষের বোতল নিয়ে ভাইভা দিতে আসেন। এমনকি তিনি নিয়োগ না দিলে বিষপান করবেন বলে হুমকি দেন। পরে আমরা বিষের বোতল এবং ওসির উপস্থিতিতে তার অঙ্গীকারনামা লিখে প্রক্টর অফিসে জমা রেখেছি।’

এ বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আননূর যায়েদ বিপ্লব বলেন, ওই ব্যক্তির অঙ্গীকারনামা এবং বিষের বোতল প্রক্টরের কাছে জমা রয়েছে। আমাদের কাছে তারা হস্তান্তর করেননি। হস্তান্তর করলে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় এগোতে পারবো।

দীর্ঘদিন ধরে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়ে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীরা। অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদ নামে তারা একটি সংগঠনও খুলেছেন। এ দাবিতে প্রধান ফটক আটকানো, উপাচার্যের কার্যালয়ে হামলা, নিয়োগ বোর্ড আটকানো, উপাচার্যের ফাঁস হওয়া অডিও বাজিয়ে আন্দোলন ও তার পদত্যাগ দাবিসহ বিভিন্নভাবে আন্দোলন করে আসছেন তারা।এ বিষয়ে ইবি থানার ওসি আননূর যায়েদ বিপ্লব বলেন, তাকে আমাদের কাছে ইবি প্রশাসন হস্তান্তর করেনি। হস্তান্তর করলে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় পদক্ষেপ নিতে পারব।

আরও পড়ুন

ফের ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি, নরসিংদীর ৯ যুবক নিখোঁজ

এ পুরো ঘটনার জন্য হয়তোবা লোকের অজান্তেই বিষ বহনকারী সেই ব্যক্তিটির শাস্তি হয়ে যেতে পারে । কিন্তু ঘুনে ধরা এই সমাজের বিপ্লবী আমূল পরিবর্তনের জন্য এবং এই সমাজের হাল ধরার জন্য যে সকল বিপ্লবের প্রয়োজন তা আদৌ হবে কিনা জানা নেই।

একটি কলুষিত ভাইভা পরীক্ষা যোগ্যতা আর  শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে আঘাত করে, জ্ঞান, ন্যায্যতা এবং সততার আদর্শকে বিষাক্ত করে। এই ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং শিক্ষা প্রক্রিয়া ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার  পবিত্রতা রক্ষা করা শিক্ষাবিদ, শিক্ষার্থী এবং সামগ্রিকভাবে সমাজের দায়িত্ব।

    Leave a Reply

    Your email address will not be published.

    X