সাংবাদিকের সঙ্গে সাকিবের অভদ্র আচরণ
মাঠের ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান সাম্প্রতিক সময়ে অনেকটাই বিবর্ণ। এদিকে আরেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এই এমপি।এক দৈনিক পত্রিকার ক্রীড়া প্রতিবেদকের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন সাকিব। তার মোবাইল নিয়ে বাংলাদেশ দলের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে তুলে দিলেন তিনি।
গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ১ ওভার বোলিং করার পর ৪ বলে ৩ রান নেন সাকিব।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক বিশ্বকাপ কভার করতে দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। খেলোয়াড়রা যখন টিম বাসে ওঠে তখন সাংবাদিকরা সাধারণত সবসময় পাশে থাকে। হয়তো তারা বিভিন্ন ফুটেজ নিতে বা কারো সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। তবে এদিন ভিডিও করা নিষেধ থাকায় কোনো সাংবাদিক তা করেননি। এদিকে বাসের একপাশে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন সাকিব। তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের সঙ্গে ছিলেন তিনি।
এরপর প্রতিবেদক ভিডিওটি করছেন বলে সন্দেহ করেন সাকিব। তার কাছে মোবাইল এবং ট্রাইপড ছিল, কিন্তু তিনি আসলে কোনো ভিডিও করেননি। তবে সাকিব সাহেবের সন্দেহ হলে তিনি এসে জিজ্ঞেস করেন ভিডিও করছেন কিনা। এরপর প্রতিবেদক সাকিবকে বলেন, তিনি কোনো ভিডিও করছেন না। তারপরও সাকিবের সন্দেহ হলে বলে ‘দেখো, তোমার মোবাইল দেখি’ বলে সে তা নিয়ে যায়। কিন্তু সাকিব নিজে কখনো মোবাইল চেক করেননি। তিনি সেটি বাংলাদেশ দলের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে হস্তান্তর করেন। কিন্তু মোবাইলে তাদের কোনো ভিডিও পাওয়া যায়নি। এরপর নিরাপত্তারক্ষী এসে প্রতিবেদককে মোবাইল ফোন ফেরত দেন।
কিন্তু তারপরও সাকিবের সন্দেহ কাটেনি। তিনি বারবার সাংবাদিককে বলেন, ভিডিও করলে মুছে দেবেন। যদিও ভিডিও আইডিয়ার মতো কিছুই হয়নি সেখানে। পুরো বিষয়টি সেখানে উপস্থিত সবার কাছেই ছিল আশ্চর্যজনক। মূলত পুরো ঘটনায় শাকিবের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ মোটেও ভালো না হওয়ায় তাকে দেখে সবাই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন।
লজ্জায় অবসর নিতে হবে সাকিবের: বীরেন্দ্র শেবাগ
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অবিসংবাদিত সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই দেশকে সেরাটা দিয়ে আসছেন এই অলরাউন্ডার। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে নিজের ছায়া হয়ে উঠেছেন তিনি। বোলিংয়ে আগের মতো ধার নেই, ব্যাটিংও ঢালু। কয়েকদিনেই ‘বোঝা’ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ দল! এটা এখন বন্ধ হওয়া উচিত বলে মনে করছেন অনেকে।
চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সাকিব বলেছিলেন যে তিনি ২০২৬ সালের পরবর্তী সংস্করণেও খেলার আশা করছেন। আগামী বছর পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে চান তিনি। কিন্তু এই বিশ্বকাপে সাকিবের পারফরম্যান্স দেখে চমকে গেলেন ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দ্র শেবাগ। সোমবার বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ চলাকালীন জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, চলতি বিশ্বকাপের পর, বিশেষ করে গত বিশ্বকাপের পর সাকিবের অবসর নেওয়া উচিত ছিল।
চলতি মৌসুমে ব্যাট হাতে বিবর্ণ সাকিব, বল নিয়েও একই অবস্থা। বিশ ওভারের ক্রিকেটে এক নম্বর অলরাউন্ডার হওয়া সত্ত্বেও তিনি প্রথম দুই ম্যাচে ৪ এবং ৩ রান করেছেন। আউটের প্রকৃতিও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। দলের কঠিন সময়ে লাগামহীন হয়ে সমালোচনা হজম করছেন তিনি। তিনি বল হাতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৩ ওভারে ৩০ রান দেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম ওভারে ৬ রান দেওয়ার পর বোলিংয়ে ফেরেননি। সেরা ক্রিকেটারকে বিশ্বাস করতে না পেরে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত তিন ওভার বোলিং করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে দিয়ে ।
এটাকে দলের জন্য বড় সমস্যা হিসেবে দেখছেন তামিম ইকবাল। ক্রিকইনফো অনুষ্ঠানে এই তারকা ওপেনার বলেন, ‘সাকিব আমাদের সেরা বোলার। তার চার ওভার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি একজন অভিজ্ঞ বোলার। তিনি বছরের পর বছর ধরে শীর্ষস্থানীয় অলরাউন্ডার। ফলে সে যদি চার ওভার বল করতে না পারে, তাহলে সেটা অবশ্যই সমস্যা।’ ব্যাট হাতে দলকে আরও বড় সমস্যায় ফেলেছেন সাকিব । অপ্রয়োজনীয় পুল শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন তিনি । যা দেখে শেবাগ বলেন, ‘এই উইকেটে তার অন্তত কিছুটা সময় নেওয়া উচিত ছিল। আপনি হেইডেন বা গিলক্রিস্টের মতো নয়, যে শট হিসাবে পুল শট খেলতে পারে। তুমি শুধু বাংলাদেশের একজন খেলোয়াড়। তোমার মান অনুযায়ী খেলো।’
তিনি ২০২১সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমানে ৬ ম্যাচে ১১৩ রান করেছিলেন, কিন্তু পরের বছর অস্ট্রেলিয়ায় ৫ ম্যাচে ৪৪ রান করেছিলেন। বিবর্ণ অতীত তুলে ধরে শেবাগ বলেন, ‘গত বিশ্বকাপে ভেবেছিলাম, তার আর টি-টোয়েন্টি খেলা উচিত নয়। আপনি এত সিনিয়র ক্রিকেটার ছিলেন, অধিনায়কও ছিলেন, পরিসংখ্যানের এই অবস্থার পরে, আপনার নিজেরই লজ্জিত হওয়া উচিত। বনিজেরই বলা উচিত, আমি এই সংস্করণ থেকে অবসর নিচ্ছি।’