November 24, 2024
রাজপথের কঠিন কর্মসূচিতে ফিরতে চায় বিরোধীরা

রাজপথের কঠিন কর্মসূচিতে ফিরতে চায় বিরোধীরা

রাজপথের কঠিন কর্মসূচিতে ফিরতে চায় বিরোধীরা

রাজপথের কঠিন কর্মসূচিতে ফিরতে চায় বিরোধীরা

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সরকারের অধীনে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে। কিন্তু এত মামলা, গ্রেফতার, চাপ ও প্রলোভনের পরও বিএনপি দল ভাঙেনি এবং জনগণ সেভাবে নির্বাচনে সাড়া দেয়নি; দলের অনেকেই এটাকে সাফল্য হিসেবে দেখছেন। বিএনপি টানা ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে। এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এক শতাব্দীরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে। গত দেড় বছর ধরে সরকার পতনের নানা কর্মসূচিতে ছিল দলটি। নির্বাচনের আগে আন্দোলনে কিছুটা ভাটা পড়লেও এবার আর একই ভুল করতে চায় না দলগুলো। তাই আন্দোলনের নতুন রোডম্যাপ তৈরি করে নেতাকর্মীদের শক্ত রাখতে চান তারা।

আবারও রাজপথের কর্মসূচিতে ফিরতে চান নেতারা। আন্দোলনকে কাঠামোবদ্ধ রূপ দেওয়ার চিন্তাভাবনা মাথায় রেখে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হচ্ছে। তবে আপাতত একযোগে আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলো দলগতভাবে কর্মসূচি পালন করবে। পরে একযোগে কর্মসূচি দেওয়া হবে।

জানা গেছে, দীর্ঘ পাঁচ মাস পর ঢাকায় দুটি সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে মে দিবসে বড় শোডাউন কর্মী সমাবেশের পরিকল্পনা করছে দলের হাইকমান্ড। এ জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তারা। নেতারা ঘরোয়া বৈঠক ও মতবিনিময় সভাসহ প্রস্তুতিমূলক সভাও করছেন। আর আগামী মাসের যেকোনো সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে রাজধানীতে সমাবেশ করবে দলটি।

এ ছাড়া আগামী ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানা গেছে।

এছাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে নতুন কর্মসূচির কথাও ভাবছে বিএনপি। জনসাধারণকে ভোটে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিতরণ ও পথসভার পক্ষে মত দিয়েছেন দলটির নেতারা। এছাড়া নির্বাচনে যেসব দলের নেতারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাদের কাউন্সিলিং করা হবে। খুব শিগগিরই এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই বৈঠকে তারেক রহমান উপজেলা নির্বাচন নিয়ে নেতাদের মতামত জানতে চান। এছাড়া বিএনপি শুধু ভোট বর্জন করবে নাকি নির্বাচনকালীন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে তাও জানতে চান তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচি দেওয়ার পক্ষে মত দেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক।

সূত্রটি আরও জানায়, বৈঠকে উপস্থিত সকল নেতা কর্মসূচী এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে এখন এটি কঠোর কর্মসূচি নয়। নেতারা জনগণকে ভোটে বিরত থাকার আহ্বান জানাতে লিফলেট বিতরণ ও পথসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির কথা বলেছেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনেকেই হয়তো ভাবছেন বিএনপি ও বিরোধী দলের আন্দোলন শেষ। তবে আমরা সংগ্রাম আরও জোরদার করব। আর এই সরকারকে পরাজিত করা হবে আন্দোলনের মাধ্যমেই।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক বলেছেন, বিএনপিকে হিসাব করা যাবে না। পিছু হটেনি বিএনপি, আন্দোলন শক্তি পেয়েছে। আন্দোলনের মাধ্যমেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। জয় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের হবেই। বিএনপি প্রস্তুতি নিচ্ছে। যত মামলা, অত্যাচার-নির্যাতন কর না কেন, তাতে কোনো লাভ হবে না।

এদিকে, এ সময় যুগপৎ আন্দোলনের বিভিন্ন দল ও জোটও বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে। এদিকে গণতন্ত্র মঞ্চ ২৯ এপ্রিল থেকে ৮ জুন পর্যন্ত বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা করবে। এই কর্মসূচি শেষে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে সমাবেশ ও সভা করার কথা ভাবছে তারা। এরপর জনসম্পৃক্ততার বিভিন্ন ইস্যুতে ঢাকায় কর্মসূচি পালন করবে গণতন্ত্র ফোরাম। আর যৌথভাবে কর্মসূচি ঠিক করতে বিএনপির সঙ্গে একযোগে আন্দোলনের দল ও জোটের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হচ্ছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আন্দোলন নিয়ে আলোচনা চলছে। আন্দোলনের নতুন পর্ব শুরু হবে। এখন দলে দলে কর্মসূচি চলছে। আগামীতে এ কর্মসূচি আরও জোরদার করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X