November 24, 2024
হিট এলার্ট বাংলাদেশেঃ ৪২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা

হিট এলার্ট বাংলাদেশেঃ ৪২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা সারাদেশে হিট স্ট্রোকে ৬ জনের মৃত্যু

হিট এলার্ট  বাংলাদেশেঃ ৪২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা

দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। এই তাপপ্রবাহ আজ শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অর্থাৎ তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। সারাদেশে আজ ৭২ ঘণ্টার তাপ সতর্কতা বা হিট এলার্ট  জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সারাদেশে গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত, ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুরা। সারাদেশে তাপপ্রবাহ বইছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে গরমের তীব্রতা বাড়তে থাকে। তীব্র গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার তাপ সতর্কতা জারি করে বলেছে যে, সারাদেশে চলমান তাপপ্রবাহ আরও তীব্র হতে পারে এবং আগামী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। গতকাল শুক্রবার আবহাওয়া সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, দেশে চলমান তাপপ্রবাহ ১৯ এপ্রিল থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এসময় তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। উপরন্তু, অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প অস্বস্তি বাড়াতে পারে। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে যে অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প অস্বস্তি বাড়াতে পারে।

প্রচণ্ড গরমে মানুষ দুর্ভোগ ও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ অন্য সবার চেয়ে বেড়েছে। গ্রীষ্মকালে যেসব রোগ হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, জ্বর-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, পানিশূন্যতা, হিট স্ট্রোক ইত্যাদি।এ অবস্থায় একটু অসাবধানতাই বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাপপ্রবাহে অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। এমতাবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না বের হতে এবং প্রচুর বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

এদিকে আবহাওয়াঅফিস জানায়  চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ জেলায় টানা তিন দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর অঞ্চলের তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার মধ্যে তেমন পার্থক্য না থাকায় এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা খুবই স্বাভাবিক ।

চিকিৎসকরা বলছেন, এত প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হওয়া স্বাভাবিক, তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে এই গরমেও নিরাপদ ও ভালো থাকতে পারবেন। বাইরে বেরোনোর সময় বা রোদে যাওয়ার সময় সতর্ক থাকুন। প্রচুর পানি, লেবুর রস, স্যালাইন ও তরল খাবার খান। তৈলাক্ত ও মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। শরীরের কোন অংশ দীর্ঘ সময় সরাসরি সূর্যালোক উন্মুক্ত করা উচিত নয়। বাইরে যাওয়ার সময় ঢিলেঢালা পোশাক, সানগ্লাস ও ছাতা, মাথায় টুপি পরুন। খোলা রাস্তার খাবার পানি বা শরবত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কোথাও যাওয়ার আগে নিরাপদ পানি নিতে হবে।

এই গরমে যারা সরাসরি সূর্যের আলোতে কাজ করেন তাদের প্রচুর ঘাম হয়, ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে আসে। শরীর থেকে পানি ও লবণ কমে গেলে পানিশূন্যতা বা ডি-হাইড্রেশন হয়। শরীর থেকে পানি ও লবণ কমে গেলে মানুষ শক করতে পারে, রক্তচাপ কমে যেতে পারে, মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে, অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে, কিডনি অচল হয়ে যেতে পারে, ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। প্রচণ্ড গরমে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের ঝুঁকি বেশি। এ সময় প্রচুর পানি পান করুন, ফলের রস খাওয়া যেতে পারে। সহজে হজমযোগ্য তরল খাবার খান। প্রচুর ঘাম হলে স্যালাইন বা হালকা লবণ পানি পান করুন। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া যাবে না।

এখনো ঝড় ও বন্যার মতো তাপ সতর্কতাকে দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারিনি। এখন আমাদের উপলব্ধি করার সময় এসেছে যে তাপ সতর্কতা একটি বড় স্বাস্থ্য বিপর্যয়। তাপ সতর্কতা ঘোষণা করেই দায়িত্ব শেষ করাই যথেষ্ট নয়, প্রচণ্ড গরমকে দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করে শ্রমজীবী মানুষের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।

এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় কার্যকর স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদী কৌশল গ্রহণেরও আহ্বান জানিয়েছেন  চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা ।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০০২ সালে চুয়াডাঙ্গায় প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপিত হওয়ার পর ২০০৫ সালের ২ জুন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তারপর ২১ মে, ২০১৪ তারিখে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেলসিয়াস। এই জেলায় এটাই ছিল  সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। গত বছর ২০২৩ সালে, বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৯ এবং ২০এপ্রিল রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন এ জেলার মানুষ। তীব্র গরম ও সূর্যের তাপে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশাচালকরাও কাজ করতে না পেরে অলস সময় কাটাচ্ছেন। স্বল্প আয়ের মানুষ কিছুটা শান্তির সন্ধানে গাছের ছায়া আর শীতল পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়কে মানুষের চলাচল সীমিত হয়ে আসছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন।

এদিকে আবহাওয়াঅফিস জানায়  চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ জেলায় টানা তিন দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর অঞ্চলের তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার মধ্যে তেমন পার্থক্য না থাকায় এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা খুবই স্বাভাবিক ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X