November 22, 2024
ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতার নজর দেশি পণ্যেঃ ঘৃণা উথলে উঠেছে ভারতীয় পণ্যে

ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতার নজর দেশি পণ্যেঃ ঘৃণা উথলে উঠেছে ভারতীয় পণ্যে

ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতার নজর দেশি পণ্যেঃ ঘৃণা উথলে উঠেছে ভারতীয় পণ্যে

ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতার নজর দেশি পণ্যেঃ ঘৃণা উথলে উঠেছে ভারতীয় পণ্যে

দেশী পণ্যে ঈদ করা আমার কাছে ভালো লাগছে।   আপনার কাছে কেমন লাগছে জানিনা। তবে এই কথা সত্য, মানুষ যতটুকুই কিনতে পারুক না কেন । ঈদ বাজারে বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতিতে কম হলেও দেশি পণ্যই কিনছে এবং ভারতীয় পণ্যকে ঘৃণার সাথে বর্জন করছে এদেশের মানুষ। এটা কারো কাছে ভালো লাগুক আর নাই লাগুক বাংলাদেশ ভারতকে কঠিন জবাব দেয়া শুরু করছে মাত্র ।

হ্যাঁ আর মাত্র কয়েকদিন পরেই সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রাজধানীসহ সারাদেশের শপিংমলগুলোতে বেড়েছে সব বয়সী ক্রেতার ভিড়। ধনী-গরীব সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঈদের দিন নতুন পোশাকের কেনাকাটা করছেন। বাজারগুলোতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ভিড় ও ঝামেলা এড়াতে রমজানের শুরু থেকেই ঈদের কেনাকাটা শুরু করেছেন অনেকে। দেশীয়  তৈরি পোশাক কিনতে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। বিশেষ করে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো কিনছে দেশীয় ব্যান্ডিং কাপড়, শাড়ি, কামিজ, পায়জামা-পাঞ্জাবি। এমনকি স্বল্প আয়ের এবং সীমিত আয়ের লোকেরা ফুটপাতে কেনাকাটা করার সময়ও দেশি পোশাকের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।

রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, খুলনাসহ বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের ঈদ বাজারগুলোতে ভারতীয় শাড়ি ও সব ধরনের কাপড়ের বেচাকেনা কমে গেছে। দেশীয় পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে। দেশে আন্তর্জাতিক মানের পোশাক প্রস্তুতকারক ও দেশীয় ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাকের চাহিদা বেশি। ভারত, চীন, থাইল্যান্ডের মতো বিদেশি কাপড় এবার বাংলাদেশের ঈদ বাজারে সুবিধা করতে পারছে না। বিশেষ করে ‘ভারতীয় পণ্য বয়কট’ আন্দোলনের কারণে ভারতীয় পোশাকের বিক্রি একেবারেই  তলানিতে নেমে গেছে।

গতকাল সপ্তাহান্তে রাজধানীর ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, ফার্মগেট, পান্থপথ, গুলিস্তানসহ বেশ কয়েকটি এলাকার শপিংমলগুলোতে ছিল ক্রেতাদের ভিড়। কিছু ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতা বলেছেন যে গতকাল থেকে বিক্রি বেড়েছে, যদিও এখন পর্যন্ত বিক্রি খুব বেশি হয়নি। মলগুলোতে কেনাকাটা করতে আসা অধিকাংশই তরুণ-তরুণী। দেশীয় ব্র্যান্ডের পোশাকের আউটলেটগুলোতে মনোযোগ বেশি। ফেসবুকসহ সর্বত্র ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়ে দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো এখন বেশিরভাগ ক্রেতার পছন্দের তালিকায়। উৎসবের মরসুম যতই ঘনিয়ে আসছে এসব ফ্যাশন হাউসে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে।

বিক্রেতারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে দেশের বাজারে ভারতীয় পোশাকের আধিপত্য ছিল। যা এখন ধীরে ধীরে কমছে কারণ দেশীয় ব্র্যান্ডের পণ্যের মান এখন অনেক ভালো। দেশি কাপড়ের দোকানে ভিড়। এবং ভারতের পণ্য বয়কটেরও প্রভাবও এতে  রয়েছে।

আরেক বিক্রেতা বলেন, আমাদের দেশীয় পণ্যই এখন বিভিন্ন দেশের বাজার দখল করে নিচ্ছে। কেন আমরা এখনও ভারতের পণ্যের দিকে তাকিয়ে আছি? আমাদের এখন থেকে দেশীয় পণ্য ব্যবহারের শপথ নিতে হবে। আমাদের পোশাকের মানও বিশ্বমানের।

ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নিত্যনতুন পোশাক মিলেছে দেশের ফ্যাশন হাউসগুলো। উৎসবের মরসুম যতই ঘনিয়ে আসছে এসব ফ্যাশন হাউসে ক্রেতা সমাগম হচ্ছে। ঈদের সময় দেশীয় ব্র্যান্ডের পোশাকের আউটলেটগুলোতে ক্রেতার ভিড় বাড়ে। আর ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত ফ্যাশন হাউসগুলো।

ভারতীয় পণ্য দীর্ঘদিন ধরে পোশাকের বাজারে আধিপত্য বিস্তার করেছে। এর থেকে আমরা অনেকটাই বেরিয়ে আসতে পেরেছি। এক্ষেত্রে ভারতীয় পণ্যের বর্তমান বর্জন একটি ইস্যু হতে পারে, তবে মানসম্পন্ন দেশীয় পণ্যই প্রধান কারণ বলে জানান বিভিন্ন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।

চট্টগ্রামে জমজমাট ঈদের বাজার। সর্ব সাধারণের বর্জনের মুখে বাজারে এবার কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ভারতীয় পোশাক।। দেশি কাপড়ের ওপর আস্থা রাখছেন ক্রেতারা। ঈদ বাজারেও দেশি ব্র্যান্ডের সব ধরনের পোশাকের বিস্তৃত মজুদ রয়েছে। শাড়ি, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, শিশুদের পোশাকের চাহিদা বেশি। জুতা, প্রসাধনীতে দেশীয় পণ্যের চাহিদাও শীর্ষে। দামও কিছুটা সাশ্রয়ী হওয়ায় বিক্রিও বেশি। বাজারে যারা বিদেশি বিশেষ করে ভারতীয় কাপড় কিনেছেন তারা বিপাকে পড়েছেন।

আজ ১৯ রমজান, ঈদের আর বেশি বাকি নেই। আর তাই জমে উঠছে বন্দরনগরীর ঈদ বাজার। গতকাল সরকারি ছুটির দিনে নগরীর প্রতিটি বাজার ছিল জমজমাট। জুমার পর মার্কেট, শপিং সেন্টার ও শপিংমলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বাজারগুলো বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। সন্ধ্যায় আলোয় ভরা বাজারে ছড়িয়ে পড়ছে অন্যরকম উৎসবের আমেজ। ক্রেতা ধরে রাখতে র‌্যাফেল ড্রসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মার্কেট কর্তৃপক্ষ।

নগরীর অভিজাত শপিংমল ছাড়াও মার্কেটগুলোতেও জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ফুটপাথের দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড়।

গ্রাহকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে প্রতিটি দোকানই আধুনিক সব ফ্যাশন পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে। ব্যবসায়ী ও দোকানিরা জানান, ক্রমান্বয়ে জমে উঠছে বেচা-কেনা। যারা এতদিন  ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন তারাও  এখন কেনাকাটা করছেন। বাজারে ক্রেতাদের আগমনও বাড়ছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাজার খোলা থাকে। বাজারে দেশীয় পণ্যের চাহিদা বেশি।

ভারতীয় পোশাকের ডিজাইনে দেশি অনেক ব্র্যান্ডের মেয়েদের পোশাক রয়েছে। এই পোশাকগুলো দেখতে যেমন ফ্যাশনেবল তেমনি কিছুটা সস্তাও। আর তাই বিক্রিও বেশি। নজিরবিহীন মূল্যস্ফীতির কথা মাথায় রেখে এবার এসব কাপড়ের দাম কিছুটা কম রাখা হয়েছে।

৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের প্রচারণা সারা দেশের মতো সিলেটেও প্রভাব ফেলছে। ভারতীয় পণ্য বয়কটের চলমান প্রচারণা নিয়ে বিএনপির সরাসরি দলীয় কোনো অবস্থান না থাকলেও দলটির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এতে সমর্থন জানিয়েছেন। এতে দলের সাধারণ নেতা  ও কর্মীরা ভারতীয় পণ্য বর্জনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। সেই সঙ্গে সেই ঘৃনা ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরেই সিলেটের মানুষের মধ্যে ভারতবিরোধী মানসিকতা রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় ভারতীয়দের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে তারা  বিরক্ত। সব মিলিয়ে পণ্য বয়কট অভিযান জোরদার হলে সিলেট জুড়ে ভারতীয় পণ্যের বাজার ধস নামবে। কারণ সিলেটে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সংখ্যা বেশি।  এছাড়া সিলেট ধর্মপ্রাণ মানুষের আবাসস্থল। সেসব মানুষের মধ্যে দেশপ্রেমের অভাব নেই।

ঈদের বাজারে আগ্রহ হারাচ্ছে এসব ভারতীয় পণ্য। ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ দেশীয় পোশাক। ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাকের কারণ কিনা বলতে পারব না, তবে ক্রেতারা দেশি কাপড়ের দিকে ঝুঁকছেন।

আরও পড়ুন

ভারতে মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধ উত্তর প্রদেশে আদালতের নির্দেশ

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X