November 22, 2024
জানুয়ারিতে মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশে পৌঁছেছে: জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.৭৮-এ নেমে এসেছে

জানুয়ারিতে মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশে পৌঁছেছে: জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.৭৮-এ নেমে এসেছে

জানুয়ারিতে মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশে পৌঁছেছে

জানুয়ারিতে মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশে পৌঁছেছে: জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.৭৮-এ নেমে এসেছে

নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৮৬ শতাংশে। আগের মাসে তা ছিল ৯.৪১ শতাংশ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ। অন্যদিকে, গ্রামাঞ্চলে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৭০ শতাংশ, যা শহরাঞ্চলে ৯.৯৯ শতাংশ।

বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে। অনেক দেশেই মূল্যস্ফীতি কমছে। শীত মৌসুমে সবজির উৎপাদন ও সরবরাহ বেশি থাকে। এই সময়ে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কম থাকার কথা কিন্তু বাজারের চিত্র ঠিক উল্টো। দেশের বাজারে এর প্রভাব না পড়ার কারণ হিসেবে বাজার ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদরা।

এর বাইরে মুদ্রানীতির সংকোচনের পাশাপাশি শিল্প উৎপাদন হ্রাসকেও তারা একটি বড় কারণ মনে করেন।

২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারের লক্ষ্য ছিল মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭.৫ শতাংশের মধ্যে রাখা, কিন্তু বছর শেষে তা দাঁড়িয়েছে ৫.৭৮ শতাংশে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। বিবিএস প্রকাশিত জিডিপি অনুযায়ী দেশের কৃষি উৎপাদন বাড়লেও শিল্প ও সেবা খাতে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে, কৃষিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.৩৭ শতাংশ বেড়েছে, যা আগের অর্থবছরে অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩.০৫ শতাংশ ছিল। কৃষিতে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও শিল্প ও সেবায় ছিল মন্দার চিত্র। শিল্প খাতে গত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ, আগের বছর তা ছিল ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। সেবা খাতেও প্রবৃদ্ধি কমেছে ৫.৩৭ শতাংশ, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ৬.২৬ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে অর্থাৎ ২০২৩-২৪-এ জিডিপি ৬.০৭ শতাংশে নেমে এসেছে।

যা আগের বছরের একই প্রান্তিকে ছিল ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

বিবিএস জিডিপির প্রান্তিক অনুমান প্রকাশ করে বলেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসাবে, নিয়মিতভাবে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) অনুমান করে। ২৬ নভেম্বর ২০২০ তারিখের সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবং পরে IMF-এর পরামর্শে, BBS দ্বারা ত্রৈমাসিক মোট দেশজ উৎপাদন (GDP) প্রাক্কলন করা হয়েছিল। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো, বিবিএসও উৎপাদনের ভিত্তিতে QGDP অনুমান করে। যাইহোক, বার্ষিক জিডিপি উৎপাদন ও ব্যয় পদ্ধতি ব্যবহার করে অনুমান এবং প্রকাশ করা হয়। ত্রৈমাসিক প্রাক্কলনের একটি উদ্দেশ্য হল দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্রমহ্রাসমান বৃদ্ধির প্রবণতা পরিমাপ করা।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বাংলাদেশ কোভিডের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ক্রমাগত উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রপ্তানি হ্রাস, উৎপাদন হ্রাস এবং দেশের শিল্প ও সেবা খাতের কার্যক্রম দেশের প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলেছে।

আবারও বেড়েছে মূল্যস্ফীতি: অন্যদিকে, আগের দুই মাসে কিছুটা কমলেও জানুয়ারিতে আবারও মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। চলতি মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৮৬ শতাংশে। এ বছর মূল্যস্ফীতি বাড়াতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে খাদ্যবহির্ভূত পণ্য। নভেম্বরে এ ধরনের পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৮.৫২ শতাংশ, যা জানুয়ারিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৪২ শতাংশে। অন্যদিকে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশে। বৃহস্পতিবার বিবিএসের জানুয়ারি মাসের জন্য কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরে মূল্যস্ফীতি বেশি হয়েছে। শহরাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি জানুয়ারিতে ৯.৯৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগের মাসে ডিসেম্বরে ছিল ৯.১৫ শতাংশ। নগরীতে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং অখাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। অন্যদিকে, জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি গ্রামীণ এলাকায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৭০ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৯.৪৯ শতাংশ। গ্রামীণ খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৪১ শতাংশ, যা ডিসেম্বরে ছিল ৯.৬৬ শতাংশ। গ্রামীণ খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯.১৯ শতাংশ, যা ডিসেম্বরে ছিল ৮.৪১ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য ছিল সরকারের। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে তারা আমদানি করতে না পারায় সংকট আরও তীব্র হয়েছে। তবে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতিগত সুদের হার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির জন্য ডলারের মূল্য বৃদ্ধিকে প্রধানত দায়ী করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা চলছে।

রিজার্ভ থেকে ডলার উঠিয়ে দেনা পরিশোধ সহকারে অনেকগুলা ব্যাংক থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা মূলত বর্তমান  মুদ্রাস্ফীতির  অন্যতম কারণ।  আর যার কারণে অর্থনৈতিকভাবে জিডিপিও অনেক কমে গেছে বাংলাদেশের। এহেন

অর্থনীতিকে উত্তরনের জন্য অবশ্যই একটি পরিবর্তিত স্বচ্ছ দায়িত্বশীল সরকার প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X