পতাকা বৈঠক করে ছাগল ফেরত দেওয়া শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ তামাশা: রিজভী
পতাকা বৈঠকের পর বাংলাদেশে তিনটি ছাগল ফেরত দেওয়ার ঘটনাকে ‘শতাব্দীর সেরা তামাশা’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সীমান্তে বাংলাদেশিদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। আর মঙ্গলবার বাংলাদেশের তিনটি ছাগল ভারতের সীমান্তের ভেতরে চলে গেছে।
পতাকা বৈঠকের পর বিএসএফ (ভারতীয় বর্ডার গার্ড ফোর্স) ছাগলটি ফিরিয়ে দিয়েছে। বিএসএফের কাছে ছাগলের দাম আছে, কিন্তু মানুষের দাম নেই। তিনটি ছাগল ফিরিয়ে দেওয়া শতাব্দীর সেরা তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। গতকাল বুধবার গুলশান-১ ও ২ এলাকায় ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ লিফলেট বিতরণ ও গণযোগাযোগ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে তিনি এসব কথা বলেন। ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনকে ‘ডামি’ আখ্যা দিয়ে বাতিলের দাবির পাশাপাশি প্রচারপত্রে সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানানো হয়। ছয় দিনব্যাপী কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে গতকাল লিফলেট বিতরণ করা হয়। ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি সকল উপজেলা, থানা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গণযোগাযোগ ও লিফলেট বিতরণের মধ্য দিয়ে ছয় দিনের কর্মসূচি শেষ হবে। এর মধ্যে রয়েছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং ভারত ও মায়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার প্রতিবাদে ১৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী প্রার্থনা কর্মসূচি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে আজ তামাশা করা হচ্ছে। টেকনাফ সীমান্তে চলছে গোলাগুলি। ভয়ে সীমান্তে কাজ করতে পারছেন না বাংলাদেশের কৃষকরা। তারা চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে আর সরকার নির্বিকার বসে আছে। প্রতিবাদ করার সাহস তাদের নেই। এ অবস্থা চলতে পারে না।
সারাদেশে সামাজিক নৈরাজ্য চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যৌন আনন্দের উৎসবে পরিণত করেছে। কুষ্টিয়ায় এক যুবককে ১০ টুকরো করার কথা স্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা সজীব নিজেই। এখন শুধু বিএনপির ওপর হামলা নয়, লুটের টাকা ভাগাভাগি করতে তারা আত্মহত্যা করছে। এ অবস্থায় দেশ এক ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আজ অবৈধ ও ডামি সরকার জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। দখলদার সরকার ভেবেছিল ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন করে তারা বাংলাদেশের জমিদার হয়ে গেছে। এই ভূস্বামীতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই থামবে না। কারণ, এই ক্ষমতা জনগণের কাছে ফেরত দিতে হবে। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো যে আন্দোলন করছে তা হলো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম, জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফেরানোর সংগ্রাম। এ লড়াই চলবে।
এ সময় রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: মোঃ রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, তাঁতি দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ। যুবদলের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন সিদ্দিকী প্রমুখ।
সারাদেশে ‘দেশ বাঁচাও, জনগণ বাঁচাও’ শিরোনামে প্রচারপত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে গণসংযোগ কর্মসূচি শুরু করেছে বিএনপি। ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘ডামি’ আখ্যা দিয়ে বাতিলের দাবির পাশাপাশি প্রচারপত্রে সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানানো হয়।
ছয় দিনব্যাপী কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে আজ এ লিফলেট বিতরণ করা হয়। ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি সকল উপজেলা, থানা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গণযোগাযোগ ও লিফলেট বিতরণের মধ্য দিয়ে ছয় দিনের কর্মসূচি শেষ হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি গৃহবধূ চায়না বেগম তার তিনটি ছাগলকে ঘাস খাওয়াতে বাড়ির সামনে সীমান্ত রেললাইনের কাছে রেখে যান। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়। কিন্তু ছাগলের বাড়ি ফেরার নাম নেই। রেললাইনের আশেপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। ধারণা করা হচ্ছে, রেললাইন পেরিয়ে ছাগলগুলো ভারতে প্রবেশ করেছে। চায়না বেগম রাতে জিরো লাইনে টহলরত বিজিবি সদস্যকে ছাগল হারানোর খবর দেন। পরে বিজিবি বিএসএফকে খবর পাঠায়। মঙ্গলবার দুপুরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পতাকা বৈঠকের পর তিনি নিজের ছাগলগুলো ফেরত পান চায়না।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিএসএফ হিলি ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক রাজেস বালুদাহ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের ৬ নম্বর বিজিবি পোস্ট সংলগ্ন জিরো লাইনে বিজিবি হিলি আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার ফজলুর রহমানের কাছে ছাগলগুলো হস্তান্তর করেন। পরে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে ছাগলের মালিক চায়না বেগমকে বিজিবি ছাগলগুলো বুঝিয়ে দেয়।
ভারত সব সময় নিজেদেরকে মোড়ল ভেবেই চলছে।এবং তাদের সাথে সীমান্তবর্তী যে ক’টি দেশ আছে কারোর সাথে সম্পর্ক কোনভাবেই ভালো নেই । শুধুমাত্র তাদের থেকে লাভের আশাই ভারত করে থাকে। কারো কোন উপকারের চিন্তাভাবনা এই দেশটি করেইনা, আর মানুষকে তো মানুষই মনে করে না এই ভারত নামক ইন্ডিয়া।