November 21, 2024
কোরআন পোড়ানোর ঘটনার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভোট দেয়া, না দেয়া দেশগুলো চিনে রাখি

কোরআন পোড়ানোর ঘটনার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভোট দেয়া, না দেয়া দেশগুলো চিনে রাখি

কোরআন পোড়ানোর ঘটনার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভোট দেয়া, না দেয়া দেশগুলো চিনে রাখি

কোরআন পোড়ানোর ঘটনার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভোট দেয়া, না দেয়া দেশগুলো চিনে রাখি

একমাত্র সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত মহাগ্রন্থ,ঐশী গ্রন্থ আল কুরআন। এবং যেটির একটি অক্ষরও পরিবর্তিত এবং পরিবর্ধিত হয়নি।  এবং এটা ভবিষ্যতে কোন সময় কেউ পরিবর্তনের সাহস করতে পারবে না।

উল্লেখ্য,সুইডেনের ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওমর মুস্তফা মনে করেন, সুইডিশদের দৃষ্টিভঙ্গিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। তিনি বলেন, সুইডেনে ইসলামোফোবিয়া বাড়ছে। আর এর বহিঃপ্রকাশ শুধু ইন্টারনেটেই নয়, বাস্তবে তা মুসলমানদের জীবনে প্রতিনিয়ত ঘটছে।

সাম্প্রতিক কোরআন পোড়ানোর ঘটনার পর তিনি গণমাধ্যমে বিভিন্ন বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ডের বিবরণ দেন। এর মধ্যে রয়েছে রাস্তায় মুসলিম নারীদের হয়রানি, মুসলমানদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া এবং মসজিদে লুকিয়ে হামলা করা।

ইরাকি বংশোদ্ভূত একজন ব্যক্তি যিনি ঈদ-উল-আযহার পবিত্র দিনে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের প্রধান মসজিদের সামনে প্রকাশ্যে কুরআনে আগুন দিয়েছেন।সালওয়ান মমিকা পাঁচ বছর আগে একজন অভিবাসী হিসেবে সুইডেনে এসে গণমাধ্যমকে জানান, তার এখন সুইডিশ পাসপোর্ট রয়েছে। সে নিজেকে নাস্তিক বলে দাবি করে।সে বলেছিল  কোরআন শরীফ পশ্চিমা সমাজে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও নারীর অধিকারের নীতির সাথে সাংঘর্ষিক এবং তাই এটি নিষিদ্ধ করা উচিত।

তবে সুইডেনে প্রকাশ্যে কোরান অবমাননাকারী তিনিই প্রথম নন।এর আগেও সুইডেনে বেশ কয়েকবার কোরান পোড়ানো হয়েছে। গত এপ্রিলে, স্টর্ম কুরস নামে একটি উগ্র ডানপন্থী সংগঠন মালমোতে কোরআন পোড়ায়, যা সারা দেশে ব্যাপক প্রতিবাদের জন্ম দেয়।

স্ট্রাম কুর্জ অভিবাসন বিরোধী এবং ইসলাম বিরোধী হিসাবে পরিচিত এবং সংগঠনটির নেতৃত্বে রয়েছে রাসমুস পালুদান নামে একজন চরমপন্থী।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে এবং ২০২০ সালে সুইডেনে একই ধরনের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি সুইডেন ও জার্মানিতে ইসলাম ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ আল-কুরআনের কিছু পাতা পুড়িয়ে ফেলা হয়। বিশ্বের মুসলিম দেশগুলো এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। প্রতিবাদ করেছে বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা। আর পাকিস্তান ও ওআইসির অনুরোধে জাতিসংঘে বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবাদের  এর পক্ষে ও বিপক্ষে ভোট দেওয়া হয়েছে। পক্ষে ভোট বেশি। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ১২টি দেশ।

সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি) ধর্মীয় বিদ্বেষ ও গোঁড়ামির বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশ সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এছাড়া আরও অনেক অমুসলিম দেশও এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছিল।

বুধবার এ প্রস্তাব পাস হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর বিরোধিতা করেছে। তারা বলেন, জাতিসংঘের প্রস্তাব মানবাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে তাদের অবস্থানের সাথে সাংঘর্ষিক।

গত মাসে স্টকহোমের প্রধান মসজিদের বাইরে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় পাকিস্তান ও অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) মুসলিম দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে। সে সময় পবিত্র ঈদুল আযহার সময় এক ইরাকি অভিবাসী কোরআন অবমাননা করে। এর ফলে মঙ্গলবার জাতিসংঘের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থায় জরুরি আলোচনা হয়।

আরও পড়ুন

বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে মুসলমান, পঞ্চাশ বছরের মধ্যে খ্রিস্টানদের ছাপিয়ে যাবে

মসজিদহীন তিনটি দেশ

মসজিদ ভাঙ্গা নিয়ে উত্তপ্ত চীন, চলছে কঠোর বিক্ষোভ

এরপর সুইডেনে কোরান পোড়ানোর বিরুদ্ধে জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভোট দেন- আলজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, বাংলাদেশ, বলিভিয়া, ক্যামেরুন, চীন, কিউবা, ইরিত্রিয়া, গ্যাবন, গাম্বিয়া, ভারত, আইভরি কোস্ট, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মালাউই, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ। মরক্কো, পাকিস্তান, কাতার, সেনেগাল, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান এবং ভিয়েতনাম। মোট ২৮টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে।

জাতিসংঘে প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে ১২টি দেশ। সেই দেশগুলি হল বেলজিয়াম, কোস্টারিকা, চেক প্রজাতন্ত্র, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মন্টিনিগ্রো, রোমানিয়া, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

কোরান পোড়ানোর বিরুদ্ধে জাতিসংঘের প্রস্তাবে মোট সাতটি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। সেই দেশগুলো হলো বেনিন, চিলি, জর্জিয়া, হন্ডুরাস, মেক্সিকো, নেপাল ও প্যারাগুয়ে।

মঙ্গলবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি জেনেভা ভিত্তিক মানবাধিকার কাউন্সিলকে একটি ভিডিও বিবৃতির মাধ্যমে বলেছেন, “আমাদের অবশ্যই পরিষ্কারভাবে দেখতে হবে যে এই (কোরআন পোড়ানো) ঘটনাটি আসলে কী।” এটা ধর্মীয় বিদ্বেষ, বৈষম্য ও সহিংসতা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা।

তিনি বলেন, সরকারি অনুমোদন নিয়ে এ ধরনের (জঘন্য) কাজ করা হয়েছে। এছাড়া এই (ঘৃণ্য) কাজের দায়মুক্তিও দেওয়া হয়েছে।

সে সময় বিলাওয়াল ভুট্টোর মতো ইরান, সৌদি আরব ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কোরআন পোড়ানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।

এ প্রসঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি বলেছেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার অপব্যবহার বন্ধ করুন। আর  এ বিষয়ে নীরব থাকা (পবিত্র কুরআন পোড়ানোর মতো) জটিলতা সৃষ্টি করছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক ইউএনএইচআরসিকে বলেছেন যে মুসলমানদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্ম বা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এই উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড সত্যিই আপত্তিকর এবং অপমানজনক। এটি করা একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং ভুল কাজ।

একই সঙ্গে কোরআন পোড়ানোর নিন্দা জানিয়েছে সুইডিশ সরকার। তবে তারা এও বলেছে যে তাদের দেশে সমাবেশ, মতপ্রকাশ ও প্রতিবাদ করার স্বাধীনতা রয়েছে। এই অধিকারগুলো সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত।

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X