একাট্টা নিউইয়র্কের ধনকুবের করপোরেটরা
মামদানীকে ঠেকাতে বিলিয়ন ডলারের তহবিল!
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট প্রার্থী জোহরান মামদানির বিজয় ঠেকাতে ‘বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক—রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে’ একাট্টা হয়েছেন স্টেটের শীর্ষ ধনী ও করপোরেট ব্যবসায়ীরা। নিউইয়র্কের ধনকুবের ও কর্পোরেটরা অন্তত ২ কোটি ডলারের একটি প্রতিরোধ তহবিল গঠন করতে যাচ্ছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘নিউইয়র্কার্স ফর আ বেটার ফিউচার মেয়র ২৫’ নামে নতুন একটি স্বাধীন ব্যয়ভিত্তিক গোষ্ঠী এই প্রচারণা শুরু করেছে। নির্বাচন বোর্ডে রেজিস্ট্রেশনের পর গত মঙ্গলবার থেকেই তাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক মহলের অনেকেই এই উদ্যোগে জড়িয়ে পড়েছেন। পারশিং স্কয়ারের সিইও বিল অ্যাকম্যান, সাবেক মেয়র রুডি গিলানি, বিনিয়োগকারী গ্যারি বারনেটসহ অনেকেই মিলিতভাবে মামদানিকে পরাজিত করতে কোটি কোটি ডলার ঢালার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আলাদা একটি গ্রুপে রুডি গিলানির সঙ্গে সাবেক গোয়েন্দা বো ডিটল প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহের পরিকল্পনা করছেন। তাঁদের একটাই লক্ষ্য এই ছেলেটাকে থামাতেই হবে!
গত মাসের ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী বাছাইয়ে সবাইকে চমকে দিয়ে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রম্ন কুমোকে হারিয়ে দেন মামদানি। এরপর থেকেই নিউইয়র্কের ধনীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে একজন সমাজতন্ত্রী যদি সিটি হল দখল করে বসেন, তবে ব্যবসাবান্ধব নীতিগুলো ধসে পড়বে।
এই অবস্থায় ‘জেপি মরগ্যান চেজ’—এর সিইও জেমি ডাইমন এক বক্তব্যে মামদানিকে ‘মাক্সর্বাদী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং তাঁর নীতিমালাকে বাস্তবতা বিবর্জিত আদর্শিক আবোল—তাবোল হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তবে কৌশলগতভাবে মামদানিকে কীভাবে পরাজিত করা হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক পরামর্শদাতারা বলছেন, বিরোধী শিবিরের প্রচারণা বিশৃঙ্খল ও নেতিবাচক, যা উল্টো ভোটারদের মনে সন্দেহ জাগাতে পারে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস্টার ফুকস বলছেন, মানুষ সহজ সমাধান খেঁাজে জটিল সমস্যার জন্য। কিন্তু ভোটারদের আস্থা ছাড়া অর্থ খরচ করে লাভ নেই।
এদিকে মামদানি নিজেও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলছেন। তিনি নিউইয়র্ক সিটির করপোরেট সংগঠন ‘পার্টনারশিপ ফর নিউইয়র্ক সিটি’—এর একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এই সংগঠনের সদস্য হিসেবে রয়েছে সিটি গ্রুপ, মরগ্যান স্ট্যানলি, এমনকি জেপি মরগ্যান চেজের মতো প্রতিষ্ঠানও।
ডেমোক্রেটিক টিকিট পেলেও মামদানিকে মোকাবিলা করতে এখনো মাঠে আছেন বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস, সাবেক ইউএস অ্যাটর্নি জিম ওয়ালডেন, অ্যান্ড্রম্ন কুমো ও রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া। তাঁদের মধ্যে ডেমোক্র্যাট—দলীয় কুমো ও অ্যাডামস কেউই এখনো প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। ফলে ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোট গঠনেও জটিলতা তৈরি হয়েছে।
ভাড়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ, নগর পরিচালিত গ্রোসারি দোকান প্রতিষ্ঠা মামদানির এই ধরনের প্রতিশ্রুতিগুলো শহরের ধনী শ্রেণির কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। মামদানি বিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে অ্যাডামস স¤প্রতি ম্যানহাটনে এসএল গ্রিনের একটি রুফটপ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এক মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছেন। এখানে উপস্থিত ছিলেন টিভি ব্যক্তিত্ব ড. ফিল, যিনি স্পষ্ট বলেন, ‘বিনা মূল্যে কিছুই নয়, বন্ধু!’
শেষ পর্যন্ত মামদানির বিরুদ্ধে কারা প্রার্থী হবেন বা কে হবেন তাঁর মুখ্য প্রতিদ্বন্দ্বী, তা এখনো অনিশ্চিত। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, নিউইয়র্কে এই মেয়র নির্বাচন হতে যাচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও উত্তেজনাপূর্ণ রাজনৈতিক লড়াইগুলোর একটি।
আমেরিকা এর আরো খবর

নিউইয়র্ক স্টেট জাসাস এর উদ্যোগে দোয়া মাহফিল
.jpeg)
‘বাংলাদেশের স্বপ্ন ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে বক্তারা / দেশে সংস্কারের মাধ্যেমে নতুন বন্দোবস্ত সময়ের দাবী

ফোর্থ জুলাইয়ে ‘পার্টি আয়োজনেই সীমাবদ্ধ’ বাংলাদেশী—আমেরিকানরা / যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস পালন নিয়ে কমিউনিটিতে নানা প্রশ্ন

২৫ বছর পূর্তি পালনের প্রস্তুতি / জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভা

নিউইয়র্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
