গাজায় ৫০,০০০ গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারী চরম ঝুঁকিতে, হাসপাতালেও চলছে আক্রমণ

২০ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসন অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের উপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলছে। মধ্য গাজা শহরের দেইর আল-বালাহতে অবস্থিত আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, খাদ্য ও জরুরি ওষুধের তীব্র ঘাটতির কারণে বর্তমানে প্রায় ৫০,০০০ নারী চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, ইসরায়েলি বাহিনী আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের ছাদে আক্রমণ করেছে। মন্ত্রণালয় এই আক্রমণকে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস করার লক্ষ্যে একটি "পরিকল্পিত নীতির" অংশ হিসাবে বর্ণনা করেছে।
হাসপাতালের মুখপাত্র খলিল আল-দাকরান ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফাকে বলেছেন যে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় গর্ভপাতের হার ছয়গুণ বেড়েছে। একই সাথে, অকাল জন্মের সংখ্যাও নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলস্বরূপ, নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটগুলি ভেঙে পড়ার পথে।
তিনি বলেন যে, ইসরায়েলি আক্রমণ গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে প্রায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে, যা রোগীদের গুরুতর বিপদে ফেলেছে।
খলিল আল-দাকরান আরও বলেন যে, চলমান ইসরায়েলি আক্রমণের কারণে গাজার ২৩টিরও বেশি হাসপাতাল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বাকিগুলো আংশিকভাবে কার্যকর। এর প্রধান কারণ হলো জরুরি চিকিৎসা সরবরাহ এবং জ্বালানির অভাব।
ফলস্বরূপ, গাজায় ১২,০০০ এরও বেশি ক্যান্সার রোগী চিকিৎসা পাচ্ছেন না। প্রতিদিন প্রায় ৫ জন ক্যান্সার রোগী মারা যাচ্ছেন। প্রয়োজনীয় ডায়ালাইসিস চিকিৎসার অভাবে কিডনি রোগীও মারা যাচ্ছেন।
গাজার বৃহত্তম, কিন্তু ইতিমধ্যেই বিধ্বস্ত আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ আবু সালমিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অবিলম্বে রক্ত সরবরাহ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, রক্তের অভাবে প্রতিদিন অনেক আহত রোগী মারা যাচ্ছে।
এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে, উত্তর গাজায় একজন রিজার্ভিস্ট সৈন্য নিহত হয়েছে। ইসরায়েল আরও জানিয়েছে যে, আগের দিন হামাসের পাল্টা আক্রমণে আরও তিনজন সৈন্য নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৪০ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা ৫৫০০০ জন ছাড়িয়েছে।
এছাড়াও, আজ ভোরে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৯ জন ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশন (ASRA) জানিয়েছে, তাদের মধ্যে কিছু রাজনৈতিক কর্মীও রয়েছেন। এই সবই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে গভীর মানবিক সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আর এই দিকে গাজায় শিশু হত্যা বন্ধে জাতিসংঘের প্রস্তাবে ১৪ টি দেশ সাড়া দিলেও আমেরিকা এ প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে কেন যেন শিশু হত্যা চালিয়ে যাওয়ার পরোক্ষ অনুমোদন দিয়েছে।
আরও পড়ুন- বোমা হামলায় পুড়ে মারা গেল জীবন্ত শিশুরা
আন্তর্জাতিক এর আরো খবর

জুলাইয়ের ১২ দিনেই রেমিট্যান্স ১৩ হাজার কোটি টাকা

আইনশৃঙ্খলা চ্যালেঞ্জিং হলেও নির্বাচন সম্ভব : বিবিসি বাংলাকে সিইসি

নির্বাচন না থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি: মির্জা ফখরুল

সরকার কেন অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না— প্রশ্ন তারেক রহমানের

মিটফোর্ড হাসপাতালে ভাঙারি ব্যবসায়ী খুন: অস্ত্রসহ চারজন গ্রেপ্তার
