November 21, 2024
বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি পেতে দোয়া চাই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি পেতে দোয়া চাই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি পেতে দোয়া চাই: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি পেতে দোয়া চাই: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস

একতো রমজান মাস আবার সরকারের নতুন মেয়াদ মাত্র শুরু। এরই মধ্যে চলছে খালেদা জিয়ার মত ডক্টর ইউনুস সাহেবেরও বাসা টু আদালতে আসা-যাওয়ার গতি। আর সে কারণে তিনি বালা-মুসিবত থেকে বাঁচার দোয়া চেয়েছেন সকলের কাছে।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসমাছ জগলুল হোসেন চার্জশিট গ্রহণ করে মামলাটি বিশেষ জজ আদালতে পাঠানোর পরের দিন ধার্য করেছেন ২ মে।

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন বিশেষ পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল, মীর আহমেদ আলী সালাম, মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

আজ বিকেলে আদালতে হাজির হয়ে ড. ইউনুস। এ মামলায় গত ৩ মার্চ তিনি জামিন পান। শুনানি শেষে বেরিয়ে আসেন ড. ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আইনের শাসন দেখতে পাচ্ছি না। এখন পবিত্র রমজান মাস। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন, বালা-মুসিবত থেকে যেন আমরা বাঁচি। মানুষ যেভাবে বাঁচতে চায় সেভাবে বাঁচতে পারে না। আমাদের অনেক কষ্ট হয়। আমার ওপর ব্যক্তিগত বালা-মুসিবত, সহকর্মীদের ওপর এবং দেশের ওপরও। সবাই এর থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করবেন। মানুষকে পালানোর পথ খুঁজতে হবে। তা ছাড়া ঈদ আসছে, আনন্দের দিন। আমরা যেন সত্যিকারের আনন্দের ঈদ উদযাপন করি। সেই সাথে পহেলা বৈশাখ। আরও সুখের বিষয়, সবকিছু একসাথে হবে।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো: শাহজাহান, নুরজাহান বেগম, এসএম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, আইনজীবী ইউসুফ আলী, জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকমের সভাপতি মো. শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন। কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, প্রতিনিধি মাইনুল ইসলাম ও গ্রামীণ টেলিকমের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান।

ড. ইউনূসসহ অন্য সবাই আদালতে হাজির হলেও অসুস্থতার কারণে হাজির হননি মো. শাহজাহান। তাই আদালত শাহজাহানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এ প্রসঙ্গে আদালত বলেন, শাহজাহান অ্যাম্বুলেন্সে হাজির হলে বিচারিক আদালত থেকে জামিন পেতে পারেন।

১লা ফেব্রুয়ারি দুদক ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় কোটি টাকা আত্মসাতের। গ্রামীণ টেলিকম কর্মীদেরলভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা । প্রধান বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ৩০ মে দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার বাদী হয়ে এ মামলা করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের অধীনে একটি অপরাধ।

এ পর্যন্ত মামলা হয়েছে ১৬৮টি

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৬৮টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।  এর মধ্যে দুটি ফৌজদারি এবং বাকিগুলো শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন।

তার বিচারাধীন মামলাগুলো হলো

গ্রামীণ টেলিকমের ৬৪টি, গ্রামীণ কল্যাণের ৬৯ টি, গ্রামীণ কমিউনিকেশনের ২৫ টি, গ্রামীণ ফার্মাসিউটিক্যালের ৮ টি, আয়করের ৮ টি এবং ফৌজদারি ২ টি সহ মোট ১৬৮ টি মামলা রয়েছে।

এদিকে শ্রম আদালতে ড. ইউনূসের বিচার শুরুর পর থেকেই বিদেশ থেকে বক্তব্য আসছে। বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটনসহ নোবেলজয়ী সব পক্ষই বিচার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। যদিও সরকার এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য স্পষ্ট করেছে।

বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষকে শ্রম আইনের অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে।   তারা বলেছেন  অবিলম্বে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের হয়রানি ও ভয়ভীতি বন্ধ করুন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেছে, ন্যায়বিচারের নামে এই প্রতারণা বন্ধ করার এখনই সময় সরকারের।

গ্রামীণ টেলিকম বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কর্মসংস্থান আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর অধীনে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে। ওই বোর্ডের অন্য তিন সদস্য (আশরাফুল হাসান, নুরজাহান বেগম, মোহাম্মদ শাহজাহান) একই অভিযোগে অভিযুক্ত।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৫০টিরও বেশি মামলার মধ্যে এটি একটি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বাস করে যে মুহম্মদ ইউনূস এবং তার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘বেসামরিক ও প্রশাসনিক’ ক্ষেত্রের বিষয়ে ফৌজদারি কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। শ্রম আইন এবং বিচার ব্যবস্থার এই অপব্যবহার তার কর্ম এবং ভিন্নমতের জন্য রাজনৈতিক প্রতিশোধের একটি রূপ।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, মুহাম্মদ ইউনূসের মামলাটি বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রতীক, যেখানে কর্তৃপক্ষ স্বাধীনতা খর্ব করেছে এবং সমালোচকদের বশ্যতা স্বীকার করতে বুলডোজ করেছে। আইনের অপব্যবহার এবং ন্যায়বিচারের অপব্যবহার প্রতিশোধ গ্রহণে বেমানান। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির সাথেও অসামঞ্জস্যপূর্ণ, যার অন্তর্ভুক্ত ‘আন্তর্জাতিক চুক্তি অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস’-এ অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশও সেই চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষ। বিচারের নামে এই প্রতারণার অবসান ঘটানো সরকারের এখনই সময়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X