January 29, 2025
কারাগারে বিএনপি নেতাদের ওপর অত্যাচার জুলুম চলছে: রিজভী

কারাগারে বিএনপি নেতাদের ওপর অত্যাচার জুলুম চলছে: রিজভী

কারাগারে বিএনপি নেতাদের ওপর অত্যাচার জুলুম চলছে: রিজভী

কারাগারে বিএনপি নেতাদের ওপর অত্যাচার জুলুম চলছে: রিজভী

বিএনপি নেতাদের কারাগারে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর তিন দিনব্যাপী ঢাকা অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচির আজ প্রথম দিন। প্রথম দিনে নানা ঘটনা-নির্যাতনের মধ্যেও বিএনপি ও সমমনা দলগুলো তাদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, জনগণ এই স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষে নয়। অবৈধ সরকার রাজ্য দখল করে নিয়েছে। আর এটা নিতে গিয়ে জনগণকে ত্যাজ্য করেছে। জনগণকে ত্যাজ্য করেই তারা গণতন্ত্রের শক্তির উপর জুলুম নির্যাতন হামলা মামলা নারকীয় তাণ্ডব চালাচ্ছে। নেতাকর্মীদের স্বজনরা যেভাবে সাক্ষাৎ করে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন তাতে মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে বাংলাদেশ থেকে বিরোধী শক্তিকে ধ্বংস করার যাবতীয় পরিকল্পনা করেছে।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা দুঃশাসনের মাফিয়া চাকরেরআস্ফালন দেখাচ্ছে। নির্বাচনী মাঠকে একতরফা করতে তারা কত পদক্ষেপ নিয়েছে, প্রথম ধাপ হচ্ছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়া এবং পূর্ব পরিকল্পিত নাশকতার মাধ্যমে নেতাকর্মীদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া। এরপরও যদি বিরোধীদলকে দমন না যায় কারাগারে অসুস্থ নেতাকর্মীদেরকে চিকিৎসা না দিয়ে মেরে ফেলা। মিছিলের মধ্যে গুন্ডা আওয়ামী লীগের ক্যাডার লেলিয়ে দিয়ে একভাবে মেরে ফেলা হচ্ছে। পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। জেল কাস্টডিতে প্রতিদিনই মৃত্যুর হার বাড়ছে। আমরা এগুলো প্রতিদিনই বলছি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে এগুলো কোন সাজানো গল্প নয়।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে ওবায়দুল কাদের, হাসান মাহমুদসহ তাদের নেতাদের কথা-আচরণ আদিম সমাজের মানুষের মতো। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

রিজভী বলেন, জনগণের শেষ ভরসা আদালত, সেই আদালত এখন আওয়ামী পাড়ায় পরিণত হয়েছে। সেই কোর্ট এখন আওয়ামী খেলাঘরে পরিণত হয়েছে। এটা এই দেশের জন্য এই জাতির জন্য খুবই দুঃখজনক।

বিএনপি নেতা বলেন, “আওয়ামী লীগ প্রতিদিন নাশকতার পরিকল্পনা করছে এবং সেখানে বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম দিচ্ছে। কিন্তু ১৩, ১৪, ১৫ সালের মতো যেখানেই নাশকতা হয়েছে সেখানে প্রথম ধরা পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বা যুবলীগ ছাত্রলীগ। ২০১৫ সালে যখন নাশকতা করে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের নাম দেওয়া হয়েছিল তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কয়েকজন বলেছিল যে ঘটনা ঘটায় আমরা আর নাম হয় বিএনপির। এগুলোর সব তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে আছে”।

রিজভী বলেন, এইযে আওয়ামী নেতারা মাইক্রোবাসে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ধরা পড়েছে র‍্যাবের কাছে। প্রথমে কিন্তু র‍্যাব এটা বুঝতে পারেনি পরে তারা বুঝতে পেরেছে। এর উত্তর কী দিবেন হাছান মাহমুদ সাহেবরা। নিজেদের শিক্ষা রুচি জলাঞ্জলি দিয়ে আপনারা ওই পর্যায়ে নিয়ে গেছেন আপনাদের নেতৃবৃন্দসহ আপনারা সবাই।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করছে। তিনি বলেন, এখন দেখা যাচ্ছে শেখ হাসিনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষা কতটা নির্মম হতে পারে। তারা আওয়ামী লীগের কর্মীবাহিনীতে পরিণত হয়েছে। হিটলারের নাৎসিদের কাছ থেকে দর্শন নিয়ে নিজেদের দেশেই বিরোধীদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে।

উল্লেখ্য,

২৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে এক লিখিত বক্তব্যে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল

বলেন, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপিসহ বিরোধী দলের মহাসমাবেশে সরকার ও সরকারি দলের পরিকল্পিত সহিংসতা ও নাশকতার নজিরবিহীন দুঃখজনক ঘটনার পর এ পর্যন্ত ৮৩৭টির বেশি হয়রানিমূলক অনুপস্থিতির ঘটনা ঘটেছে। এসব মামলায় ২০ হাজার ৩২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আসামি করা হয়েছে ৭৩ হাজার ১২৩ জন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীকে। আহত হয়েছেন ৮ হাজার ২৪৯ জন নেতাকর্মী। এতে এক সাংবাদিকসহ বিএনপির ১৭ সদস্য নিহত হন। আর গত তিন মাসে ৩৫টি মিথ্যা মামলায় ৬৩৬ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

কায়সার কামাল বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও বিএনপির সহযোগী গণসংগঠনের পাঁচ লাখের বেশি কর্মী-সমর্থককে দেড় লাখের বেশি মামলায় আসামি করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এই অবৈধ ফ্যাসিবাদী সরকার বর্তমান সরকারের অবৈধ গ্রেফতার ও হয়রানি থেকে সাধারণ মানুষ-রাজনৈতিক কর্মীদের আইনি সহায়তায় বাধা দিতে আইনজীবীদের হয়রানি ও গ্রেফতার করছে; যা আইনের শাসন, মানবাধিকার ও সংবিধানের পরিপন্থী। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের আত্মীয়স্বজন, অসুস্থ, প্রতিবন্ধী এমনকি নাবালকদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর করা হচ্ছে। এমনকি গভীর রাতেও বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X