November 21, 2024
ইউক্রেনকে আরও আকাশ প্রতিরক্ষা দেবে যুক্তরাষ্ট্র, পুতিনকে থামতেই হবে ন্যাটো সম্মেলনে বাইডেন

ইউক্রেনকে আরও আকাশ প্রতিরক্ষা দেবে যুক্তরাষ্ট্র, পুতিনকে থামতেই হবে ন্যাটো সম্মেলনে বাইডেন

ইউক্রেন , আকাশ প্রতিরক্ষা , যুক্তরাষ্ট্র, পুতিন , থামতে , ন্যাটো সম্মেলন , বাইডেন

ইউক্রেনকে আরও আকাশ প্রতিরক্ষা দেবে যুক্তরাষ্ট্র, পুতিনকে থামতেই হবে: ন্যাটো সম্মেলনে বাইডেন

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন যে তিনি রাশিয়ার “নৃশংস হামলা” ঠেকাতে ইউক্রেনকে আরও পাঁচটি কৌশলগত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাটো নেতাদের সামনে দেওয়া এক জোরালো ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, পুতিনকে থামাতে পারে একমাত্র ইউক্রেন; এবং তাই  হবে. উদ্বোধনী ভাষণে জো বাইডেন বলেন, ‘পুতিন ইউক্রেনের পুরো ভূখণ্ড দখল করতে চায়। সে ইউক্রেনকে মানচিত্র থেকে পুরোপুরি মুছে দিতে চায়। কিন্তু এটা কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না। শুধুমাত্র ইউক্রেনই পুতিনকে থামাতে পারে এবং তাই  হবে।

একটি সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায়, বাইডেন বলেন, সামরিক জোট ন্যাটো “আগের চেয়ে এখন শক্তিশালী”; ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সবার চোখ এখন এই জোটের দিকে।

গতকাল বুধবার বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার হামলায় বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস এবং রোমানিয়ার সাথে ইউক্রেনে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার ব্যাটারি এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করবে।

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার হামলায় একটি শিশু হাসপাতালকে সম্পূর্ণভাবে সমতল করার দুই দিন পর এই ঘোষণা আসে। কিয়েভের মেয়র ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এই হামলাকে ‘সবচেয়ে খারাপ’ বলে বর্ণনা করেছেন।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবারের হামলায় অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছে; আহত হয়েছেন শতাধিক। রাশিয়া হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থা যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছে। এ অবস্থায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমা দেশগুলোকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন।

ন্যাটোর পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা ইউক্রেনকে আগামী বছর পাঁচটি কৌশলগত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করবে; পাশাপাশি কয়েক ডজন ছোট, কৌশলগত বিমান হামলারোধী ব্যাটারিও দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জো বাইডেন বলেছেন, ইউক্রেন স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ থাকাকালীন এই যুদ্ধ শেষ হবে। ৮১বছর বয়সী বাইডেন , যিনি তার বয়স নিয়ে চিন্তিত ছিলেন, স্পষ্ট কণ্ঠে ১৩ মিনিটের বক্তৃতা দিয়েছেন। নভেম্বরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে টেলিভিশন বিতর্কে একটি হতাশাজনক প্রদর্শনের পরে,এ সম্মেলনে তিনি কেমন করবেন– সেদিকে দৃষ্টি রয়েছে সবার। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি যে উতরে গেছেন, এটা পরিষ্কার।

বার্তা সংস্থা এপি জানায়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অস্ত্র উৎপাদন বাড়াতে যাচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটো। এ জন্য জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তিও হয়েছে। এ অবস্থায় ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীল ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা খাতের সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধার্থে এবং দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে ওয়াশিংটনে একটি ছোট অফিস খুলতে যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরবর্তী নির্বাচনের পর – জো বাইডেন বা ডোনাল্ড ট্রাম্প – যেই ক্ষমতায় আসুক না কেন, কিয়েভ চায় তাদের সম্পর্ক অটুট থাকুক; তারা যেন সামরিক সহায়তা পেতে থাকে।

ইউক্রেনের মন্ত্রী আলেকজান্ডার কামিশিন বলেছেন যে ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের আগে তারা কৃষি কাজে ব্যস্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি কৃষিকাজ করছিলাম; আমি সামরিক বিষয়ে কিছুই জানতাম না।’ পরিস্থিতি এখন অনেক বদলে যাচ্ছে। ইউক্রেনে এখন একটি ড্রোন তৈরির কারখানা রয়েছে; দেশটি দেশীয়ভাবে প্রচুর অস্ত্র উৎপাদন করছে। এ ছাড়া তারা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়েছে।

এ অবস্থায় ন্যাটোর বিদায়ী মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ সম্মেলনে বলেন, ন্যাটো সদস্য দেশগুলো স্ট্রিংগার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরির চুক্তি করেছে। তিনি বলেন, শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির কারখানা থাকা প্রয়োজন।

স্ট্রিংগার হল এক ধরনের বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরানো যায়; সেনাবাহিনী তা প্রতিহত করতে পারে। এছাড়া স্বল্প দূরত্বের যানবাহনেও এই ব্যবস্থা চালানো যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে শুরু হয়েছে ন্যাটো সম্মেলন। ন্যাটোর ৭৫ তম বার্ষিকীতে বিশ্ব নেতারা জড়ো হচ্ছেন এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মূল ইস্যু ইউক্রেন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত দেশটিকে সমর্থন করার জন্য সব ধরনের তৎপরতা চলছে। অন্যরা কিয়েভকে আর্থিক এবং মৌখিকভাবে সমর্থন করার জন্য সমাবেশ করেছে। বুধবারের সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা ইতিমধ্যে ইউক্রেনের কাছে অতিরিক্ত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ন্যাটো সম্মেলনে এই সমর্থনের ঘোষণা দেন। নেদারল্যান্ডস, রোমানিয়া, ইতালি, জার্মানি এবং ইউক্রেনের নেতারা পরে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করেন। তারা আগামী মাসে ইউক্রেনে কয়েক ডজন কৌশলগত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করার পরিকল্পনা করছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা ইউক্রেনকে অতিরিক্ত কৌশলগত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রদান করতে যাচ্ছি।”

Read more…

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X