নিউইয়র্ক সিটি ধীরে ধীরে নিম্নে দেবে যাচ্ছে
বলা যেতে পারে কি বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী শহর হিসেবে পরিচিত নিউইয়র্ক শহর পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে যাবে? হ্যাঁ, এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা। কারণ পরিবেশ ধ্বংস করে এ শহরে গড়ে উঠেছে বিশাল অবকাঠামো। যার বেশির ভাগই হয়েছে মাটির গভীরে খনন করে পরিবেশ নষ্ট করে। এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। পরিবেশ রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন পরিবেশবাদীরা। এতদিনও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের ।
জানা যায়, আমেরিকার বৃহত্তম নিউইয়র্ক সিটি ধীরে ধীরে আকাশচুম্বী ভবনে ভরে যাচ্ছে। আর জমি তার বোঝা সামলাতে পারছে না। মাটি দুর্বল হয়ে গেছে। ফলে বিগ অ্যাপেল ডুবে যাচ্ছে। নতুন এক ভূতাত্ত্বিক গবেষণায় এমন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। ফলে এ শহরে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে ১০ লাখের বেশি ভবন রয়েছে। তাদের মোট ওজন প্রায় ১.৭ ট্রিলিয়ন পাউন্ড। এই ওজন নিউইয়র্ক সিটিকে চারপাশের পানির নিচে ঠেলে দিচ্ছে।
সমীক্ষা অনুসারে, ভবনগুলির চাপের কারণে শহরটি প্রতি বছর এক থেকে দুই মিলিমিটার হারে পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে, কিছু এলাকা বেশি হারে ডুবে যাচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপের প্রধান গবেষক এবং ভূতত্ত্ববিদ টম পারসন্সের মতে, নিউ ইয়র্ক সিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে, যদিও এটি সাধারণ চোখে তাৎপর্যপূর্ণ মনে নাও হতে পারে।
লোয়ার ম্যানহাটন বিশেষ করে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, গবেষণায় দেখা গেছে। ব্রুকলিন এবং কুইন্সের উভয় অংশ নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। এসব এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নিউইয়র্ক বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। উত্তর আমেরিকার আটলান্টিক উপকূল বরাবর, নিউইয়র্ক বিশ্বের গড় সমুদ্রপৃষ্ঠের তিন থেকে চার গুণ বৃদ্ধির ঝুঁকিতে রয়েছে। এবং নিউইয়র্কের ৮.৪ মিলিয়ন মানুষ গুরুতর বিপদে রয়েছে।
গবেষক লিখেছেন, সাম্প্রতিক দুটি হারিকেন নিউইয়র্ক শহরের অনেক ক্ষতি করেছে। ২০১২ সালে, হারিকেন স্যান্ডি শহর প্লাবিত করেছিল। এবং ২০২১সালে হারিকেন এডা এত বেশি বৃষ্টি এনেছিল যে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। তিনি বলেন, আগের চেয়ে এখন হারিকেনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে।
তিনি বলেন, গ্রিন হাউস গ্যাস দৃশ্যত প্রাকৃতিক বায়ুপ্রবাহকে বাধা দিচ্ছে। আর এর ফলে মারাত্মক হারিকেনের ঝুঁকি বাড়ছে
সমীক্ষা অনুযায়ী, নিউইয়র্কের অনেক রিয়েল এস্টেট এই সতর্কতাগুলোকে আমলে না নিয়ে আকাশচুম্বী ভবন নির্মাণের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
3 Comments