গর্ভাবস্থায় নিরাপদ খাবার
সন্তান গর্ভে আসার সাথে সাথে মায়ের দায়িত্ব শুরু হয়। অনাগত শিশু এবং নিজের স্বাস্থ্যের জন্য সব ধরনের সচেতনতা থাকতে হবে। নিরাপদ এবং সঠিক খাবার খাওয়া এই সচেতনতার অংশ। মা সঠিক খাবার বা পুষ্টি না পেলে শিশুর বিকাশেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এ সময়ে কী খাবেন তা অবশ্যই জানা দরকার। অনেকে না বুঝে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে নিজের শরীরকে ঠিক রাখতে চান। চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভবতী মায়েদের জন্য নিরাপদ সাত ধরনের খাবার সম্পর্কে-
কখন খাবেন? কিভাবে খাবেন? কী পরিমাণে খাবেন? তাতো আপনার পার্সোনাল অযাসিস্টেন্ট বা চিকিৎসা অবশ্যই বলে দিবেন। এখানে শুধুমাত্র এই খাবারগুলো আপনার পাতে বেশি পরিমাণে থাকবে, এবং সবসময় রাখার চেষ্টা করবেন সেগুলো এখানে তুলে ধরা হলো।
পানি:
শুধুমাত্র পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত নয়। সেই পুষ্টিগুলো যেন ঠিকমতো হজম হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তাই প্রচুর পানি পান করা উচিত। আপনি চা বা কফি পান করতে পারেন, তবে পরিমিত পরিমাণে। কারণ অতিরিক্ত ক্যাফেইন শরীরে প্রবেশ করলে মা ও সন্তান উভয়েরই ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
দুগ্ধজাত খাবার:
দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। যা শরীর গঠনে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি এতে জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। দুগ্ধজাত খাবারের মধ্যে সবচেয়ে ভালো হলো দই। এই দই হজম শক্তি ঠিক রাখে। প্রোবায়োটিকের পাশাপাশি ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া শরীরে বসতি স্থাপন করতে পারে না।
ফাইবার:
প্রোটিন সমৃদ্ধ যেকোনো ধরনের ডাল খাওয়া এই সময়ে একান্ত প্রয়োজন। শিমের পাশাপাশি সয়াবিন খাওয়া উচিত কারণ এতে আয়রন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও উপাদান রয়েছে। শিমের বিচির মতো খাবারও বেছে নেওয়া যেতে পারে। তাদের মধ্যে অনেক ভিটামিন এ রয়েছে, যা শরীরের বিকাশ এবং গঠনে সহায়তা করে। এটি প্রায়ই শিশুদের জন্মের পরে আদর্শের চেয়ে কম হতে সাহায্য করে।
মিষ্টি আলু:
মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন থাকে, যা শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ শরীরের কোষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে ভিটামিন এ খাওয়ার জন্য উদ্ভিদের উৎস বেছে নেওয়াই ভালো।
ডিম, সামুদ্রিক মাছ, মাংস:
সামুদ্রিক মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা শরীরের জন্য অপরিহার্য। এটি মস্তিষ্ক ও চোখের উপকার করে। তবে সপ্তাহে দুই দিনের বেশি খাবেন না। এ সময় ডিম খাওয়া প্রয়োজন। তবে ডিমগুলো যেন পুরোপুরি সেদ্ধ হয় তা নিশ্চিত করা জরুরি। এ সময় মুরগি বা মাংস খাওয়া যেতে পারে। তবে পরিমিতভাবে।
সবুজ শাকসবজি:
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে রয়েছে। এছাড়াও এতে আয়রন, ফসফরাস, প্রাকৃতিক জিঙ্ক এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। শাক সবজি যেমন পালং শাক, ব্রকলি খেতে হবে।
ফল:
ফল যেকোনো খাবারে ভিটামিনের অন্যতম প্রাকৃতিক উৎস। লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি। আপেলে রয়েছে আয়রন। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী ফল খাওয়া খুবই জরুরি। অনেকেই শুকনো ফল পছন্দ করেন। আপনি তাদের চয়ন করতে পারেন. তবে রক্তে শর্করার মাত্রা যেন না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।