যে কাজগুলো খাওয়ার পর করা উচিৎ নয়
আমরা প্রায়শই খাওয়ার পরে এমন অনেক কাজ করি যা আমাদের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এমন অনেক কাজ আছে যা অন্য সময়ে করলে উপকারী কিন্তু খাওয়ার পর করলে ক্ষতিকর। এটি ঘটে কারণ আমরা যা খাই তা আমাদের শরীরকে প্রভাবিত করে। এবং প্রভাবের সুবিধা এবং অসুবিধা সঠিক নিয়মের উপর নির্ভর করে।
আপনি কি খাওয়ার পরে ব্রাশ করেন, বিশেষ করে দুপুরের খাবারের পরে? নাকি, সিগারেট খাওয়া? আপনি কি হজমের জন্য হাঁটছেন? তাই আপনি যদি এখনই আপনার অভ্যাস পরিবর্তন না করেন তবে একটি ভয়ঙ্কর ভবিষ্যত আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। ডাক্তাররা দুপুরের খাবার খাওয়ার পরপরই বেশ কিছু কাজ বা অভ্যাস বন্ধ করার পরামর্শ দেন। ভাত আমাদের প্রিয় এবং প্রধান খাবার। অনেকেই আছেন যারা একবেলা ভাত না খেয়ে কোনো কাজ করতে পারেন না। কিন্তু ভাত খাওয়ার পরপরই আমরা এমন কিছু করে ফেলি যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অনেকেই দুপুরের খাবারের পর বিশেষ অভ্যাসের দাস। আর এই অভ্যাস শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকরা বলছেন, অভ্যাস বদলানো না হলে বড় বিপদও হতে পারে। কি সেই অভ্যাস?
খাদ্য আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে এবং আমাদের শরীরকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে অবশ্যই নিয়ম মেনে খাওয়া উচিত। ভুল উপায়ে খাবার খেলে শরীরের আরও ক্ষতি হয়। আর সঠিক উপায়ে খাবারের পরও যদি নিচের অভ্যাসগুলো পরিত্যাগ করতে না পারি । তাহলে আমাদের শারীরিক বিভিন্ন রকমের ক্ষতির সম্মুখীন হব। জেনে নেই সেই অভ্যাসগুলো।
রোদে যাওয়া
প্রয়োজনে আমরা খাওয়ার পর বাইরে যাই। তবে তা চট জলদি করা ঠিক হবে না বলে মনে করছেন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা। প্রাচীন চিকিৎসা বলছে, খাওয়ার পর রোদে বের হলে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। ফলে পেটে বা শরীরের অন্যান্য অংশে রক্ত চলাচলের হার কমে যায়। এতে হজমের সমস্যা হয়। খাবারে ক্ষতিকর উপাদান নষ্ট হয় ন । ফলে শরীর সেই খাবার থেকে সঠিক পরিমাণে পুষ্টি শোষণ করতে পারে না। তাই আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা খাওয়ার ৩০ মিনিট পর রোদে বের হওয়ার পরামর্শ দেন।
ঘুমানো
আমাদের অনেকেরই খাওয়ার পর পরই ঘুমানোর অভ্যাস আছে। কিন্তু তা করলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। কারণ খাওয়ার পর ঘুমালে খাবার হজমে সমস্যা হয়। ফলে পেটে গ্যাসের সমস্যা হয় এবং শরীরে টক্সিন জমতে থাকে। তাই খাওয়ার অন্তত ৩ ঘণ্টা পর ঘুমানো উচিত।
ধূমপান
অনেকে খাওয়ার পর ধূমপান করেন। ধূমপান এমনিতেই শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আর খাওয়ার পর ধূমপান করলে তা শরীরের আরও ক্ষতি করে। খাওয়ার পর ধূমপান রক্তে বিষ যোগ করার মতোই ক্ষতিকর।
ফল খাওয়া
ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কিন্তু খাওয়ার পর ফল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এমনটা করলে গ্যাস ও বদহজম হতে পারে। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, ফল খাওয়ার আদর্শ সময় হল খাওয়ার ১ ঘণ্টা আগে বা পরে।
চা পান করা
খাওয়ার পর চা পান করার অভ্যাস অনেকেরই দেখা যায়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চায়ে ক্যাফেইন থাকায় এটি হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয় এবং শরীরে টক্সিন বাড়ায়। তাই খাওয়ার পর অন্তত এক ঘণ্টা পর চা খাওয়া উচিত।
ব্যায়াম
ব্যায়াম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু খাওয়ার পর পরই ব্যায়াম করা খুবই ক্ষতিকর। চিকিৎসকদের মতে, খাওয়ার পর আরাম পেতে ধীরে ধীরে হাঁটুন। কিন্তু জোরে জোরে হাঁটা এবং ব্যায়াম শরীরের ক্ষতি করতে পারে।
গোসল করা
খাওয়ার পর গোসল করলে রক্ত শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর ফলে হজমের সমস্যা হতে পারে। হজমের জন্য প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়। এবং যেহেতু রক্ত শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে শক্তি ব্যয় করে, তাই হজমের জন্য পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায় না। তাই খাওয়ার পর গোসল করলে তা আপনার স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি করে।
হাঁটা
অনেকেই দুপুরের খাবারের পর হাঁটাহাঁটি করেন। তাদের মতে, এটি করলে হজমশক্তির উন্নতি ঘটে। একদমই না. বরং হজমের ব্যাঘাত বাড়ে। কারণ দুপুরের খাবার হজমের জন্য বিশ্রামের প্রয়োজন। ব্যায়াম হজম হয় না।
ব্রাশ করা
অনেকেই দুপুরের খাবারের পর ব্রাশ করেন। তারা বিশ্বাস করে যে আপনি যদি দিনে অনেকবার দাঁত ব্রাশ করেন তবে আপনার দাঁত সুস্থ থাকবে। সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। দুপুরের খাবারের পর দাঁত ব্রাশ করা মানে আপনার দাঁতের চরম ক্ষতি। স্পেশাল ভাত খাওয়ার পর টক কিছু খেয়ে ফেললে ব্রাশ করলে দাঁতের এনামেল উঠে যেতে শুরু করে। ফলে দাঁতের ক্ষয় শুরু হয়। এ কারণে আমাদের শরীরের পরিপাকতন্ত্র খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে না।
প্রচুর পানি পান করা
শরীরকে সতেজ রাখতে পানি পানের বিকল্প নেই। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, পানি পান করার নির্দিষ্ট সময় আছে। যেমন খাবারের পর পানি পান করা খুবই ক্ষতিকর। খাবারের পর প্রচুর পানি পান করলে তা হজমে প্রভাব ফেলে। ফলে পেটের নানা সমস্যা শুরু হয়। আলসারও হতে পারে।