November 24, 2024
রমজান মাসে মজুদদারি এবং মূল্য বৃদ্ধি: ইসলামে কঠিন সতর্কতা

রমজান মাসে মজুদদারি এবং মূল্য বৃদ্ধি: ইসলামে কঠিন সতর্কতা

রমজান মাসে মজুদদারি এবং মূল্য বৃদ্ধি: ইসলামে কঠিন সতর্কতা

রমজান মাসে মজুদদারি এবং মূল্য বৃদ্ধি: ইসলামে কঠিন সতর্কতা

প্রতি বছরই আমাদের দেশে রমজান মাস আসলে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর  প্রবণতা দেখা যায়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রমজান মাসে এলেই  টাকার পাহাড় বানানোর সুযোগ খোঁজে।

বিশেষ করে রমজান মাসে রোজাদারদের ইফতার ও সেহরিতে ব্যবহৃত খাবারের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা দেখা যায়। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনও কঠিন হয়ে পড়ে।

যেখানে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ রমজান উপলক্ষে পণ্যের প্রাপ্যতার ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়। সেখানে আমাদের দেশে এর ব্যতিক্রম।

পবিত্র রমজান মাসে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে রোজাদারদের কষ্ট দেওয়া ইসলামে মহাপাপ।

রমজানের মতো ইবাদতের মাসও তাদের জন্য মুনাফা অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ হয়ে দাঁড়ায়। এখন  নীতিহীনদের স্বেচ্ছাচারিতা সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এ ধরনের প্রবণতা ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না, বরং তা রমজানের শিক্ষার পরিপন্থী। যারা অধিক মুনাফার আশায় পণ্য মজুদ করে এবং চড়া দামে বিক্রি করে তাদের উপর মহানবী (সাঃ) এর অভিশাপ।

বিখ্যাত সাহাবী হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আমলে একবার জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গিয়েছিল। লোকেরা বলল, হে  রাসুলুল্লাহ! আপনি আমাদের জন্য মূল্য নির্ধারণ করে দিন ।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা মূলত দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রক, রিযিক সংকীর্ণকারী, রিযিকের সম্প্রসারণকারী এবং রিযিক দাতা। আমি আমার প্রভুর সাথে এমনভাবে সাক্ষাতের আশা করি যাতে তোমাদের কারো রক্ত বা সম্পদের ব্যাপারে আমার বিরুদ্ধে কোন দাবী না থাকে।

হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশে মুসলমানদের লেনদেনে হস্তক্ষেপ করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে কিয়ামতের দিন আগুনের পাহাড়ে উঠিয়ে শাস্তি দেবেন।

অন্য এক হাদিসে বর্ণিত, মহানবী  (সা.) বলেছেন, কোনো শহরবাসী কোনো গ্রামবাসীর পক্ষ হয়ে বিক্রি করবে না। মানুষকে তাদের স্বাভাবিক অবস্থায় ছেড়ে দাও, যেন আল্লাহতায়ালা তাদের একের মাধ্যমে অন্যের রিজিকের ব্যবস্থা করেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “শহরের বাইরে গিয়ে কাফেলার লোকদের সঙ্গে আগে মাল কেনার উদ্দেশ্যে সাক্ষাত করা জায়েয নয়, যদি কেউ তা করে। , কাফেলাদের এখতিয়ার থাকবে তারা শহরে আসার পর বিক্রয় চুক্তি বহাল বা বাতিল করার।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যারা ন্যায্য মূল্যে জিনিস সরবরাহ করে তারা বরকতময় এবং যারা মজুদ করে সংকট সৃষ্টি করে তারা অভিশপ্ত’।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে চল্লিশ দিন খাদ্যশস্য মজুত করে, সে ব্যক্তি আল্লাহর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত এবং আল্লাহ তার ওপর অসন্তুষ্ট হন’।

তাই  অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। খাদ্যে ভেজাল, মজুদ, মুনাফাখোর ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। অশ্লীলতা, অপকর্ম বন্ধ করতে হবে।

সমাজের প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রেখে আত্মশুদ্ধি অর্জন ও নৈতিক চরিত্র গঠনে এগিয়ে আসা উচিত।

সর্বোপরি রমজানের সুফল যাতে সকল নাগরিক উপভোগ করতে পারে সেজন্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X