November 25, 2024
স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্য থেকে মাছ-মাংস বাদ দিতে হচ্ছে

স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্য থেকে মাছ-মাংস বাদ দিতে হচ্ছে

স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্য থেকে মাছ-মাংস বাদ দিতে হচ্ছে

স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্য থেকে মাছ-মাংস বাদ দিতে হচ্ছে

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে নিম্ন আয়ের মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে। মাংস এবং মাছ তাদের খাদ্য থেকে বাদ দিতে হচ্ছে। তবে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ ডলার হলে মাছ-মাংস কীভাবে ‘বিলাসিতা পণ্য’ হতে পারে, এটি একটি প্রশ্ন। গতকাল অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি: উদ্বেগ ও কর্মের ক্ষেত্র’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন সানেম-এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান। তিনি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেলিম রায়হান বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে প্রধান উদ্বেগের বিষয় হলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি। ফেব্রুয়ারি থেকে মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ৯ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। মূল্যস্ফীতি আসলে বেশি। তবে কম দেখা যাচ্ছে এমন বিতর্কও রয়েছে। কিন্তু ভিয়েতনাম, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় মূল্যস্ফীতির হার বাংলাদেশের চেয়ে কম।

গত অক্টোবরে ভারতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬.৭৭ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ৫.৭১ শতাংশ এবং ভিয়েতনামে ৪.৩০ শতাংশ। আর বাংলাদেশে ছিল ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ।

রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের ওপর ধারাবাহিক জরিপের ফলাফল তুলে ধরে সানামের নির্বাহী পরিচালক বলেন, পোশাক শ্রমিকদের খাদ্য নিরাপত্তা সূচক কম। তার মানে গার্মেন্টস শ্রমিক ও তাদের সন্তানরা আগের চেয়ে কম খাবার খাচ্ছে। শ্রমিকদের মাসিক মজুরিও কমেছে। ক্রয় আদেশ কমে যাওয়ায় শ্রমিকদের কর্মঘণ্টা কমে গেছে। সানামের নির্বাহী পরিচালক বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং প্রকৃত মজুরি হ্রাস খাদ্য নিরাপত্তায় ঝুঁকি তৈরি করেছে। গত ১১মাসে, রিজার্ভ গড়ে $ ১ বিলিয়ন কমেছে।

তিনি বলেন রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ও আগামী দিনে ভালো খবর নয়। তবে পণ্য আমদানিতে ঋণ কমেছে। এর মধ্যে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও মধ্যবর্তী কাঁচামাল আমদানি কমে যাওয়ায় চলতি অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে। বৈদেশিক ঋণের কাঠামোও বদলে যাচ্ছে। আগামী দিনে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় না বাড়লে কয়েক বছর পর এই ঋণ পরিশোধে অর্থনীতির ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। সেলিম রায়হান বলেন, বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে স্বল্প মেয়াদে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে।

কারণ, অনেকেই আবার খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বেন। মজুদের অবক্ষয় রোধ করতে হবে। আর মধ্য মেয়াদে সরকারকে রাজস্ব ও ব্যাংকিং খাতে সংস্কার আনতে হবে। তা ছাড়া বর্তমান সংকট উত্তরণে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করতে হবে। ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে সেলিম রায়হান বলেন, দেশে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা কম। কিন্তু বারবার দুর্ভিক্ষের কথা বললে ভয় তৈরি হয়। একটি গোষ্ঠী এর সুবিধা নিতে পারে। দুর্ভিক্ষ না হলেও কিছু কিছু জায়গায় সাময়িক সময়ের জন্য খাদ্য ঘাটতি হতে পারে। এমন আশঙ্কা থাকলে আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

X