মৃতদেহের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক ভারতে অপরাধ গণ্য না হওয়া দুর্ভাগ্যজনক: কর্ণাটক হাইকোর্ট
গত বুধবার ২৫ বছর বয়সী এক তরুণীকে হত্যার পর হাইকোর্টে ধর্ষণ মামলার শুনানি চলছিল।
স্থানীয় নিম্ন আদালত খুনের পর ওই নারীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজে পায়। কিন্তু হাইকোর্ট অভিযুক্তকে শুধু খুনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে। ধর্ষণের অভিযোগে তিনি খালাস পান। হাইকোর্ট যুক্তি দিয়েছে যে, মৃতদেহের সাথে ‘আপত্তিজনক ঘনিষ্ঠতা’ ভারতীয় সংবিধানের অধীনে অপরাধ নয়। এটি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারার অধীনে অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হয় না।
কর্ণাটক হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ করেছে যে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩৭৭ (অস্বাভাবিক যৌন আচরণ) এর অধীনে মৃতদেহের উপর যৌন নিপীড়ন ব্যাখ্যা করা যায় না। কারণ আইনে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা নেই। তাই কেন্দ্রীয় সরকারকে বিষয়টি নিয়ে ভাবার পরামর্শ দিয়ে কর্ণাটক সরকারকে একাধিক নির্দেশ দিয়েছে ওই রাজ্যের হাইকোর্ট। নির্দেশে বলা হয়েছে, ৬ মাসের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের মর্গে সিসিটিভি বসাতে হবে, যেখানে লাশ রাখা হয়। পুলিশ প্রশাসনকে আরো কঠোর নজরদারি চালাতে হবে।
উল্লেখ্য, অনেক সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের মর্গে মরদেহ পাহারা দেওয়ার জন্য নিয়োজিত কয়েকজন ওইসব লাশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একে ‘নেক্রোফিলিয়া’ বলে। কর্ণাটক হাইকোর্ট ‘নেক্রোফিলিয়া’ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি করে কেন্দ্রীয় সরকারকে ভারতীয় দণ্ডবিধি সংশোধনের সুপারিশ করেছে।
বিচারপতি ভি বিরাপ্পা এবং বিচারপতি নায়েকের একটি ডিভিশন বেঞ্চ নেক্রোফিলিয়াকে অপরাধী করার জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধিতে একটি নতুন আইনেরও আহ্বান জানিয়েছে। আদালত ইংল্যান্ড, কানাডা, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার আইন উল্লেখ করে বলেছে, ওইসব দেশে নেক্রোফিলিয়া একটি অপরাধ। কিন্তু ভারতে এটা অপরাধ নয়। হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ করেছে, ‘দুর্ভাগ্যবশত ভারতীয় দণ্ডবিধিতে মৃতদেহ এবং এর সাথে সম্পর্কিত অপরাধের বিষয়ে কোনও নির্দিষ্ট আইন নেই।’
1 Comment