November 21, 2024
উইঘুর মুসলিম নির্যাতনকে বৈধতা দিতে চীন ট্রল আর্মি তৈরি করেছে: মুসলিম বিশ্ব নীরব

উইঘুর মুসলিম নির্যাতনকে বৈধতা দিতে চীন ট্রল আর্মি তৈরি করেছে: মুসলিম বিশ্ব নীরব

উইঘুর মুসলিম নির্যাতনকে বৈধতা দিতে চীন ট্রল আর্মি তৈরি করেছে: মুসলিম বিশ্ব নীরব

উইঘুর মুসলিম নির্যাতনকে বৈধতা দিতে চীন ট্রল আর্মি তৈরি করেছে: মুসলিম বিশ্ব নীরব

চীন হল১৪৪ কোটি জনসংখ্যার দেশ যার আয়তন ৯৬ লাখ বর্গকিলোমিটার । জিনজিয়াং ২২ টি প্রদেশের মধ্যে বৃহত্তম। সমগ্র চীনের ৪০,০০০ টি মসজিদের মধ্যে ২৫০০০ টি মসজিদই শিনজিয়াংয়ে ।আজ এক এক করে মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে এসব মসজিদ। মুসলিম বিদ্বেষী জঙ্গী বৌদ্ধ, ইহুদি দল হাসছে। কোথায় আরব, কোথায় ওআইসি, কোথায় মুসলিম ঐক্য? কে ধরিবে হাল আছে কার হিম্মত?!

শিনজিয়াং চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। আয়তন ১৬ লাখ ৪৬ হাজার বর্গকিলোমিটার। মানে প্রায় ১১ বাংলাদেশের সমান।শিনজিয়াং বা  জিনজিয়াং আয়তনে চীনের প্রায় ছয় ভাগের এক ভাগ।

জিনজিয়াংয়ের পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিমে মুসলিম তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান এবং কাজাখস্তান, দক্ষিণ-পশ্চিমে আফগানিস্তান, জম্মু ও কাশ্মীর এবং মঙ্গোলিয়া রয়েছে। প্রদেশটি সোনা, তেল ও গ্যাস সহ প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। আর এই প্রাকৃতিক সম্পদই,  চীনের লোপাতুর জালিম সরকারের কুদৃষ্টিতে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে মুসলিমদের জন্য।

আমরা জিনজিয়াংয়ের নির্যাতিত মুসলিম  নাগরিকদের উইঘুর মুসলিম হিসেবে জানি। আসলে এই জাতি তুর্কি বংশোদ্ভূত  এবং তুর্কি ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্গত উইঘুর ভাষায় কথা বলে, যার  বেশিরভাগই আরবি। ২০০৯ সালের হিসাব অনুযায়ী, শিনজিয়াংয়ে দেড় কোটি উইঘুর বসবাস করেন।এরপর থেকে তাদের প্রকৃত সংখ্যাও চীন সরকার প্রকাশ করছে না।

চীন ছাড়াও কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান, তুরস্ক এবং রাশিয়ায়ও  প্রায় ৪০০০০০ উইঘুর মুসলিম বসবাস করে। জিনজিয়াং একটি ‘স্বায়ত্তশাসিত’ প্রদেশ। কিন্তু তা  আজ চীন কেন্দ্রীয় সরকারের সবচেয়ে নিষ্ঠুর নিয়ন্ত্রণে শাসিত।

মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলেছে, চীন সরকার গোপনে একতরফাভাবে অনেক উইঘুর মুসলিম পণ্ডিতদের বিচার করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে জিনজিয়াংয়ে বিশিষ্ট উইঘুর ব্যক্তিত্বদের আটক বা নিখোঁজ/হত্যা করা হয়েছে।  তাদের মধ্যে  বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ , অর্থনীতিবিদ, নৃতত্ত্ববিদ , সঙ্গীতশিল্পী, ফুটবলার সহ অজানা আরও অনেকে।

২০১৮ সালের শেষের দিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি একটি প্রতিবেদনে বলেছে যে ১০ লাখ  উইঘুর মুসলিমকে  চীনের “সন্ত্রাস সংশোধন” কেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে। আর ২০ লাখ মানুষকে ‘রাজনৈতিক ও দীক্ষা কেন্দ্রে’ থাকতে এবং ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করা হচ্ছে।

অর্থাৎ নারী ও শিশু ছাড়া কেউ বাদ নেই। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, ২৬টি বিদেশী দেশে যাদের আত্মীয়-স্বজন আছে তাদের এসব ক্যাম্পে রাখা হচ্ছে।

 এখন আবার
চীন সরকার তাদের দেশে উইঘুর মুসলমানদের ওপর নির্যাতন, বর্বরতা ও গণহত্যা চালাচ্ছে। তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। এবং তাদের অপকর্মকে বৈধতা দিতে, টুইটার বাহিনী বা ট্রল আর্মি গঠন  যারা চীন সরকারের পক্ষে প্রচারণা চালায়। এই টুইটার বাহিনী বা ট্রোল ফোর্সের কাজ হল সোশ্যাল মিডিয়ায় উইঘুর সম্প্রদায়ের পক্ষে কথা বললে ট্রল করা। সম্প্রতি ডিএফআরসির এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, টুইটার চীনে সোশ্যাল মিডিয়ায় উইঘুর মুসলমানদের পক্ষে ওকালতিকারীদের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এই নতুন বাহিনী হল চাইনিজ টুইটার আর্মি। তারা চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের একটি প্রতারণামূলক ছবি প্রচারে ব্যস্ত। তারা প্রদেশকে শান্তি ও অগ্রগতির আশ্রয়স্থল হিসেবে প্রচার করে। একই সময়ে, এই টুইটার সেনাবাহিনী চীন সরকারের তরফে ইতিবাচক খবর ছড়ানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং যারা উইঘুর মুসলিমদের নিপীড়নের কথা তুলে ধরেন তারাও সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড হন।

চীনের টুইটার সেনাবাহিনীর লক্ষ্য যারা চীনা সরকারের দ্বারা নির্যাতিত বা নির্যাতিত হয়েছে তাদের প্রতি জনগণের সমর্থনকে ক্ষুণ্ন করা। এই বাহিনী অন্যদেরকে চীন সরকারের দ্বারা নির্যাতিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে বাধা দিতে কাজ করে।

উইঘুর মুসলমানদের বিরুদ্ধে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ভিত্তিহীন নয়। কারণ ২০১৮ সালের আগস্টে, উইঘুর সম্প্রদায়ের উপর একটি প্রতিবেদন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে জিনজিয়াং অঞ্চল যেখানে উইঘুর মুসলিমদের বসবাস একটি বিস্তীর্ণ আটক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এই অঞ্চলের প্রায় এক মিলিয়ন মানুষ আটক, বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও যন্ত্রণা সহ্য করছে। দেশে মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হচ্ছে। রমজান মাসে তাদের রোজা রাখা নিষিদ্ধ। এমনকি শি জিনপিং সরকার তাদের দাড়ি রাখাও  নিষিদ্ধ করেছে।

মুসলিমদের ওপর শি জিনপিং সরকারের এই অত্যাচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন। চীন সরকার তাদের মোকাবেলা করার জন্য এই ঘৃণ্য ট্রল বাহিনী গঠন করে।

উল্লেখ্য যে ডিএফআরসি সমীক্ষা উইঘুর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো ১০০ টি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ১০০০ টি টুইট বিশ্লেষণ করেছে। এই গবেষণায় ট্রল বাহিনী উইঘুর মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর ধরণ প্রকাশ করে।

আরও পড়ুন

উইঘুর মুসলিমদের রোজা রাখতে দেয়া হচ্ছেনা

মসজিদ ভাঙ্গা নিয়ে উত্তপ্ত চীন, চলছে কঠোর বিক্ষোভ

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X