ফ্যাসিস্ট আ.লীগকে ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: জিরো পয়েন্টে সারজিস আলম
সকল প্রকার রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে গিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সরজিস আলম বলেন, গুজব লীগ দেখছে রাজপথে তাদের কিছু করার সামর্থ্য নেই। যখন তারা দেখছে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিবেকবোধসম্পন্ন ছাত্র-জনতা রাস্তায় আছে, তখন মুখ দেখানোর মতো অবস্থা তাদের নেই। এই মুখেই বিগত ১৬ বছরে তারা চুনকালি মেখেছে।
সারজিস আলম বলেন, ‘এই গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট তো দূরের কথা, এর আশপাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেও গুজব লীগ যেন না নামতে পারে। মাঠে নামা তো দূরের কথা, কোনও জায়গায় বিন্দুমাত্র গুজবের চেষ্টাও যদি তারা করে, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করবো।’
তিনি বলেন, “গুজব লীগ দেখছে, রাজপথে তাদের কিছু করার সামর্থ্য নেই। তাদের জননী নেতাকর্মীদের চুনকালি মাখিয়ে, নিজে মেখে পালিয়েছে। এই দেশের পুরো ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে নেমেছে। রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে”।
রোববার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় সরজিস আলম আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের নির্যাতন ও বর্বরতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এখনও কিছু সুশীল ১৬ বছরকে ভুলে ৩ মাসের পেছনে লেগেছে। ৫ আগস্টের পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।”
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আন্দোলনের পূর্ণ ফল ঘরে তুলতে নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগ নাৎসি বাহিনীর চেয়েও বেশি নৃশংস মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের জনসমক্ষে হাজির হওয়ার কোনো অধিকার নেই। পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে আমরা আওয়ামী লীগের বর্বরতা দেখেছি। আলেম সমাজের ওপর আওয়ামী লীগের বর্বরতা দেখেছি। গত ১৬ বছরে বিএনপি-জামায়াতসহ প্রতিটি ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলকে গুম, হত্যা, নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতে দুই হাজার মানুষকে হত্যা করেছে দাবি করে সরজিস বলেন, ছাত্র বিদ্রোহে আমাদের প্রায় অর্ধ লাখ ভাই-বোন আহত হয়েছে। এই ২৪ দিনে আমরা কীভাবে রক্তাক্ত হয়েছিলাম তা কেবল স্মৃতিতে নয়। সেই স্মৃতি সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে।আপনাদের কাছে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ আপনাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো লিখুন।
রোববার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে রোববার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর জিরো পয়েন্টে গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে তারা দুপুর ১২টায় গণসমাবেশ করেন।
এ সময় বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের দেখা গেলেও জিরো পয়েন্টের শহীদ নূর হোসেন চত্বরে কর্মসূচি দেওয়া আওয়ামী লীগকে দেখা যায়নি। তবে বেশ কয়েকজন গুপ্তচর আওয়ামী লীগ সমর্থককে উত্তম মাধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে
তৎকালীন এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ মিছিলে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর পুলিশের গুলিতে নিহত হন নূর হোসেন।
তার বুক ও পিঠে লেখা ছিল, ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান।