November 9, 2024
সারাদেশে ‘হিট স্ট্রোকে’ ৫ জনের মৃত্যু

সারাদেশে ‘হিট স্ট্রোকে’ ৫ জনের মৃত্যু

সারাদেশে ‘হিট স্ট্রোকে’ ৫ জনের মৃত্যু

সারাদেশে ‘হিট স্ট্রোকে ৫ জনের মৃত্যু

আবারো  রাজধানীসহ সারা দেশের ৬৪ জেলায় তাপপ্রবাহ বেড়েছে। বাতাসে অতিরিক্ত জলীয় বাষ্পের কারণে অস্বস্তি হয়। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) তীব্র গরমে ‘হিট স্ট্রোকে’ রাজধানীসহ সারাদেশে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে অসুস্থতার খবর পাওয়া গেছে।

সিলেটে হিট স্ট্রোকে শফিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। নগরীর জিন্দাবাজারে সিটি সেন্টার শপিং সেন্টারের সামনে হিট স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়। তিনি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার নয়াগ্রামের বাসিন্দা আবু আহমেদের ছেলে।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় হিট স্ট্রোকে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন, উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের কৃষক বিষ্ণুপদ মজুমদার (৫১) ও বিনায়েকপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ছাইদুল ইসলাম লাবলু (৫৭)। দুজনেই প্রখর রোদে ধান কাটছিলেন।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর হাটে প্রচণ্ড গরমে রবি চন্দ্র সরকার (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে আজ দুপুর ১২টার দিকে। তবে পরিবারের দাবি, হিট স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত রবি কামারপাড়া ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের ফণিভূষণ সরকারের ছেলে।

বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনে আবু তালেব (৫৫) নামে এক আনসার সদস্য হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হিট স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে তীব্র গরমে বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৬ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে 25 জনকে স্কুলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ্য মন্ডল জানান, একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করে সুস্থ করে বাসায় পাঠানো হয়েছে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী হিট স্ট্রোক এড়াতে যতটা সম্ভব গরম এড়িয়ে চলুন। বেশি করে তরল খাবার খান। পাতলা কাপড় পরুন। ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের সূর্যের এক্সপোজার এড়ানো উচিত। এই রোগীরা বাইরে যাওয়ার সময় সমস্যা অনুভব করলে তাদের উচিত ঠান্ডা জায়গায় যাওয়া।

প্রচণ্ড গরমে মানুষ দুর্ভোগ ও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ অন্য সবার চেয়ে বেড়েছে। গরমে  যেসব রোগ হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, জ্বর-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, পানিশূন্যতা, হিট স্ট্রোক ইত্যাদি।এ অবস্থায় একটু অসাবধানতাই বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাপপ্রবাহে অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। এমতাবস্থায় চিকিৎসকরা প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না বেরোনোর পাশাপাশি প্রচুর বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন।

এদিকে, তাপ  বেড়েই  যাচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। এরই মধ্যে প্রখর রোদ উপেক্ষা করে যাত্রী বহন করছে রিকশাচালকরা। সূর্যের তাপ এত বেশি যে খোলা আকাশের নিচে হাঁটলেও মুখে গরম বাতাস লাগে। অনেকে মাথায় ছাতা নিয়ে গরম থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন। স্বস্তি পেতে শ্রমজীবী মানুষ রাস্তার পাশে খাচ্ছেন, কেউ কেউ হাতে-মুখে পানি ছিটিয়ে ঠান্ডা করার চেষ্টা করছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবদেহের ৭০ শতাংশই পানি। অতিরিক্ত তাপ শরীরে পানির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এই সময়ে সুস্থ থাকতে হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে। লেবুর রস, স্যালাইন খান এবং সমৃদ্ধ ফল ও সবজি পান করুন। এ ছাড়া অতিরিক্ত তেল ও মশলা যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

প্রয়োজনে হালকা রঙের ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। রোদে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। ধুলোর সংস্পর্শে এড়াতে মাস্ক পরতে হবে। চোখে সানগ্লাস দিতে হবে। আর ছাতা অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে কালো রঙের ছাতা এড়িয়ে চলাই ভালো।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণ

মাথা ঘোরা, বমি, ক্লান্তি এবং দুর্বলতা, মাথাব্যথা এবং পেশীতে খিঁচুনি হতে পারে। এ সময় রোগীর দৃষ্টি ঝাপসা দেখা যেতে পারে। দীর্ঘক্ষণ সূর্যের সংস্পর্শে থাকলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যদি এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি প্রদর্শিত হয় তবে রোগীর শরীরের তাপমাত্রা একটি থার্মোমিটার দিয়ে পরিমাপ করা উচিত। শরীরের তাপমাত্রা ১০১ থেকে ১০২ ডিগ্রী ফারেনহাইটে নামা পর্যন্ত রোগীকে ছায়াযুক্ত জায়গায় ঠান্ডা করা দরকার। রোগীর শরীর থেকে ভারী কাপড় খুলে ফেলতে হবে। শরীরে ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে। অথবা ওই সময়  স্পঞ্জ করা উচিত। আপনি রোগীর বগলে এবং উরুর ভাঁজে ঠান্ডা  বরফ বা কাপড় ভিজিয়ে লাগাতে পারেন।

আরও পড়তে

গরমে শরীর ভালো রাখার উপায়: হিট স্ট্রোকে করণীয়

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X