November 25, 2024
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের চেষ্টা: চবি শিক্ষক মতিনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের চেষ্টা: চবি শিক্ষক মতিনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের চেষ্টা: চবি শিক্ষক মতিনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের চেষ্টা: চবি শিক্ষক মতিনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল মতিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর আজ তাকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে সিন্ডিকেটের ৫৪৮তম (জরুরি) সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সিন্ডিকেট সভায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত হয়নি।

অপসারণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিন্ডিকেট সদস্য ও বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় যৌন হয়রানি ও হয়রানি প্রতিরোধ কেন্দ্রের সুপারিশে ওই শিক্ষককে অপসারণ করা হয়েছে। কোনো সুপারিশ না থাকায় মামলার বিষয়টি ফয়সালা হয় না।

গত ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরিন আখতারের কাছে এক ছাত্রী চিঠি দিয়ে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ তোলেন। চিঠিতে ছাত্রী উল্লেখ করেছে যে অভিযুক্ত অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে তিনি তার স্নাতকোত্তর থিসিস করছেন। থিসিসের শুরু থেকেই ওই অধ্যাপক তাকে নানাভাবে যৌন হয়রানি করে আসছেন। একাধিকবার ল্যাবে ও তার কক্ষে ডেকে নিয়ে প্রফেসর তার শরীরের স্পর্শকাতর অংশ স্পর্শ করা, জড়িয়ে ধরে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন করে আসছিল।

অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, গত ৬ জানুয়ারি ওই শিক্ষক তাকে পরীক্ষাগারে একা পেয়ে যৌন হয়রানি করেন। এরপর ১৩ জানুয়ারি তাকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

ওই ছাত্রী জানায়, ঘটনা প্রকাশ না করার জন্য ওই শিক্ষক তাকে ও তার সহপাঠীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেন।

পরে গত মঙ্গলবার যৌন হয়রানি ও নির্যাতন প্রতিরোধ কেন্দ্রে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এরপর এই কমিটি আজ সকালে বৈঠক করে বৈঠক শেষে জরুরি সিন্ডিকেট ডাকেন উপাচার্য শিরীন আখতার। সিন্ডিকেট এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। জানতে চাইলে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন প্রতিরোধ কেন্দ্রের সদস্য সচিব অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল ফারুক  বলেন, যাচাই-বাছাই করে সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন তারা সিন্ডিকেটের কাছে পাঠিয়েছেন। ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এরপর সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নেয়।

ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় গত ৩১ জানুয়ারি থেকে ক্লাস বর্জন করছেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তারা মূলত দুটি দাবি করেছে। একটি হল ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে অপসারণ করা; আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দলীয় বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের পর রসায়ন বিভাগের তিন শিক্ষার্থী সমকালকে বলেন, বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনো তাদের জানায়নি। আগামী রোববার লিখিত নোটিশ দেয়ার পর তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

থিসিসের কাজের জন্য আমাকে রুমে ডেকে নিয়ে ছোবল ছাত্রী আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল

এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠে  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। তার বিচারের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ছাত্ররা রসায়ন বিভাগের সামনে ‘দুর্জন বিদ্যান হলেও তাকে বর্জন’-এর মতো বিভিন্ন প্রতিবাদী ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করে।

অভিযোগের বিষয়ে ওই অধ্যাপক বলেন, আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমি বয়স্ক  হয়ে গেছি এখন আমি  কেন এমন ঘটনা করব?

ক্লাস-পরীক্ষা  বর্জন করে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে এ আন্দোলন করছিলেন তারা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। অভিযোগ আনা হয় বিজ্ঞান অনুষদের রসায়ন বিভাগের অর্গানিক শাখার অধ্যাপক ড. অভিযুক্ত ছাত্রও রসায়ন বিভাগের। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল থেকে রসায়ন বিভাগ ক্লাস বর্জন   করে শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) উপাচার্য শিরীন আখতারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। সেখানে যৌন হয়রানি, যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ করেন তিনি। এরপরই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

অভিযোগে ওই ছাত্রী লেখেন, আমি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ছাত্রী। বর্তমানে আমি বায়োকেমিস্ট্রিতে মাস্টার্স পড়ছি। আমি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে মাস্টার্স থিসিস করছি। থিসিস চলাকালীন আমি আমার সুপারভাইজার দ্বারা যৌন হয়রানি ও হয়রানির শিকার হয়েছিলাম। থিসিসের শুরু থেকেই তিনি আমাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসছেন।’

উপাচার্যকে লেখা চিঠিতে ওই ছাত্রী আরও অভিযোগ করেন,‘জোর করে হাত-পা চেপে ধরা, শরীরের বিভিন্ন অংশে জোরপূর্বক ও অতর্কিত স্পর্শ করা, অসঙ্গত ও অনুপযুক্ত শব্দ ব্যবহার করেছেন। কেমিকেল আনাসহ আরও বিভিন্ন বাহানায় তিনি আমাকে তার রুমে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক জাপটে ধরতেন। গত ৬ জানুয়ারি সকাল ১০ টা ১০ মিনিটে আমি ল্যাবে একা কাজ করা অবস্থায় তিনি আমাকে জোর করে জড়িয়ে ধরেন। এরপর ১৩ জানুয়ারি নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।’

ওই ছাত্রী আরও উল্লেখ করেছে যে, শিক্ষক তাকে এবং তার সহপাঠীদের ঘটনাটি প্রকাশ না করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছেন। এ অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান ওই ছাত্রী। এই গবেষণাগারে থিসিসের কাজ চালিয়ে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করেন ওই ছাত্রী।

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X