ক্ষুব্ধ দুঃখী ও হতাশাগ্রস্ত দেশের তালিকায় ১২২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম
এমন একটি দেশ পৃথিবীর কোথাও খুঁজে পাবেন না, যে দেশ একদিন পরের চিন্তা করেনা । যা সুযোগ পায় তাই করে ফেলে; এটাই বাংলাদেশের অনাদিকাল থেকে চলা এক অনন্য-অন্যতম রীতি । তাই এদেশের মানুষ কে অভাবে থাকলো, কে কর্মের সুযোগ পেলনা , কেবা অধিকার বঞ্চিত হলো। তার দেখার সুযোগ এ দেশের সরকারগুলোর ছিল না এবং ভবিষ্যতে থাকবে বলে আশাও করতে পারবেন না । তাই যারা নিম্নের জরিপগুলো করেছে তারা যদি আরো কিছু মানুষের সাথে মিশতো তাহলে হয়তোবা ১০০ বছর পূর্ব থেকে এখন পর্যন্ত এবং আগামী কত বছর পর্যন্ত জানিনা বাংলাদেশ প্রথমই হত।
নতুন এক জরিপে উঠে এসেছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুব্ধ, দুঃখী ও হতাশাগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জরিপ সংস্থা গ্যালাপ ১২২টি দেশের এক লাখেরও বেশি মানুষের ওপর একটি সমীক্ষা চালিয়ে এই ফলাফল প্রকাশ করেছে।
‘গ্যালাপ ২০২২ গ্লোবাল ইমোশনস রিপোর্ট’ শিরোনামের প্রতিবেদনে এই আমেরিকান সংস্থাটি বলেছে, জরিপে ১০০ টির মধ্যে ৪৫ নম্বর পেয়ে বাংলাদেশ সপ্তম দুঃখজনক দেশ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। অন্যদিকে, ৫৯ স্কোর সহ শীর্ষ ভুক্তভোগী দেশ হল আফগানিস্তান একটি অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি।
নতুন বৈশ্বিক জরিপ অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দুঃখী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম।
এই অসন্তোষের কারণ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক অসন্তোষ বৃদ্ধির পেছনে উল্লেখযোগ্য পাঁচটি কারণ রয়েছে। সেগুলো হল-
১. দারিদ্র্য,
২. একটি সম্প্রদায়ের নেতিবাচক পরিবেশ,
৩. ক্ষুধা,
৪.একাকীত্ব
৪. এবং ভালো চাকরির বা কাজের সুযোগের অভাব।
‘২০২২ গ্লোবাল ইমোশন্স রিপোর্ট’ শিরোনামের প্রতিবেদনে ১২২টি দেশের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের স্কোর ৪৫। আফগানিস্তান ৫৯ স্কোর নিয়ে দুস্থ দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতিবাচক অভিজ্ঞতা সূচকে উচ্চতর স্কোর ইঙ্গিত দেয় যে দেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এই ধরনের আবেগ অনুভব করছে।১২২ টি দেশের ১২৭০০০ প্রাপ্তবয়স্কদের উপর করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে মানুষ ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১সালে বেশি চাপে ছিল।জরিপে তারা শারীরিক জটিলতা, উদ্বেগ, বিষণ্নতা, চাপ এবং রাগ অনুভব করেছে কিনা সে সম্পর্কিত প্রশ্নগুলিও অন্তর্ভুক্ত করেছে।গ্যালাপের গ্লোবাল ম্যানেজিং পার্টনার জন ক্লিফটন বলেন, বর্তমান বিশ্ব যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি ও মহামারীতে ভুগছে।
এর মধ্যে যে কোনো একটি বিশ্বের উপর আরো স্পষ্ট প্রভাব ফেলবে। যাইহোক, এই বিষয়গুলি আলোচনার অনেক আগেই বিশ্বব্যাপী অসন্তোষ শুরু হয়েছিল। এক দশক ধরে এই অসন্তোষ বাড়ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রায় ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন যে তারা ২০২০ সালের তুলনায় দুই শতাংশ পয়েন্ট বেশি উদ্বেগের সম্মুখীন হয়েছেন।
এটি আরও বলে যে নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই বুঝতে হবে যে কেন এত বেশি মানুষ অসামঞ্জস্যপূর্ণ নেতিবাচক আবেগ অনুভব করে এবং জীবনের সবচেয়ে ইতিবাচক উপায়ে মনোনিবেশ করে।
এটি আরও বলেছে যে জরিপে অংশগ্রহণকারী ১০ জনের মধ্যে ৩ জন শারীরিক জটিলতা (৩১শতাংশ), চারজনের একজনের বেশি মানসিক ক্লান্তি (২৮ শতাংশ) এবং রাগ (২৩ শতাংশ) অনুভব করেছেন।
নেতিবাচক সূচকে আফগানিস্তানের স্কোর ৩২। যার মানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানসিক অবসাদে ভোগে সেখানকার মানুষ। ১৬ বছর আগে গ্যালাপ জরিপ শুরু করার পর থেকে আফগানিস্তানের স্কোর সর্বনিম্ন। ইতিবাচক সূচকে পানামার স্কোর ৮৫। যার মানে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম মানসিক অবসাদে ভুগে সে দেশের মানুষ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বছরের আগেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে দুঃখ, উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কম ছিল।
লাতিন আমেরিকার দেশগুলি বিশ্বের সবচেয়ে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে, প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে উদ্বেগের জন্য সূচকটি দুই পয়েন্ট এবং চাপ এবং বিষণ্নতার জন্য এক পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইতিবাচক আবেগ সূচকে পানামা ৮৫ স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে। ৮০ স্কোর নিয়ে, পানামার পরে প্যারাগুয়ে, এল সালভাদর, হন্ডুরাস এবং নিকারাগুয়া রয়েছে। ল্যাটিন আমেরিকার বাইরের বেশ কয়েকটি দেশ ২০২১ সালে সবচেয়ে ইতিবাচক। তারা হল – আইসল্যান্ড, ফিলিপাইন, সেনেগাল, ডেনমার্ক এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৪২ শতাংশ বলেছেন যে তারা অনেক উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। এবং এই উদ্বেগের পরিমাণ ২০২০ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সালের তুলনায় গত বছর প্রায় দুই শতাংশ বেড়েছে। নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই ভাবতে হবে যে কেন এত মানুষ অভূতপূর্ব মাত্রার নেতিবাচক আবেগের সম্মুখীন হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত বছরের তুলনায় ২০২১ সালে সারা বিশ্বে দুঃখ, উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু মানুষ তার চেয়ে একটু কম ক্ষুব্ধ ছিল।
1 Comment