November 21, 2024
বেকার আর নারী এই দুই শ্রেণী ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বেশি

বেকার আর নারী এই দুই শ্রেণী ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বেশি

বেকার আর নারী এই দুই শ্রেণী ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বেশি

বেকার আর নারী এই দুই শ্রেণী ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বেশি

দেশের কর্মজীবী মানুষের চেয়ে বেকার আর নারীরা কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ অনুযায়ী, প্রায় ৭৬ শতাংশ বেকার ইন্টারনেট ব্যবহার করে। কিন্তু বেতনভোগী শ্রমিকদের মধ্যে এই হার ৫৫ শতাংশেরও কম। স্ব-নিযুক্তদের মধ্যে এই হার আরও কম। এই ধরনের উপার্জনকারীদের মাত্র ৪৩ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। আর শ্রমবাজারে নেই এমন মানুষের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ৩৮ শতাংশ। সব মিলিয়ে বর্তমানে দেশের ৪৪ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। বেশিরভাগ ইন্টারনেট বাড়িতে বা মোবাইল ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যবহৃত হয়। এর হার প্রায় ৬০ শতাংশ।

ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার সংক্রান্ত সমীক্ষা-২০২২  প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি বিবিএসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। দেশে তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) ব্যবহারের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে এত বড় আকারের জরিপ এই প্রথম। গত মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। কম্পিউটার অ্যাসিস্টেড পার্সোনাল ইন্টারভিউ (সিএপিআই) পদ্ধতি ব্যবহার করে সারা দেশে ৩০ হাজার ৮১৬টি বাড়ি বা পরিবার থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বিবিএসের প্রতিবেদনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের এক বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। এতে তিনি বলেন, আইসিটি জরিপে যেসব তথ্য উঠে এসেছে তা সরকারের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জরিপে তথ্যপ্রযুক্তি বলতে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ফিক্সড ফোন, রেডিও, টেলিভিশন, বিদ্যুত ইত্যাদি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। পাঁচ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। জরিপে বলা হয়েছে, দেশে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করে। ৯৭.৪ শতাংশ মোবাইল ব্যবহার করে। ১ শতাংশেরও কম মানুষ ফিক্সড ফোন ব্যবহার করেন। এ ছাড়া প্রায় ১৩ শতাংশ মানুষ রেডিও ব্যবহার করেন। ৬২  শতাংশ মানুষ টেলিভিশন ব্যবহার করে এবং প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে।

সমীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গ্রামের তুলনায় শহরে ইন্টারনেট ব্যবহার দ্বিগুণেরও বেশি। গ্রামের ৩০ শতাংশেরও কম পরিবারের ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। শহরে এই হার ৬৩ শতাংশের বেশি। সব মিলিয়ে ৩৮ শতাংশ পরিবারের ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক থেকে নারীরা এখনো পুরুষদের থেকে পিছিয়ে। এই প্রবণতা শহর ও গ্রামীণ উভয় ক্ষেত্রেই পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে চিত্র ভিন্ন। গ্রামীণ এবং শহর উভয় এলাকায় মহিলারা মোবাইল ফোন বেশি ব্যবহার করেন। জরিপের তথ্য অনুযায়ী, শহরের ৯০ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। শহরের নারীদের মধ্যে এই হার ৯১.২ শতাংশ। অন্যদিকে, গ্রামে হার প্রায় একই – ৯০ শতাংশের একটু কম। প্রতিবেদনের কার্যনির্বাহী সারাংশ অনুসারে, জরিপটি সরকার, নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য আইসিটি সূচকগুলির তথ্য এবং প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যান সরবরাহ করবে।

আরও খবর

গ্যাসের চুলা নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র

গুপ্তচর গরু

ইন্টারনেটের মতো কম্পিউটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে গ্রামীণ-শহরের ব্যবধান ৮ গুণেরও বেশি। কম্পিউটারসহ গ্রামে খাবারের হার ৩৫ শতাংশ। শহরে এই হার প্রায় ২৬ শতাংশ। সারা দেশে এখন ৮ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়িতে কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু টেলিভিশনের ক্ষেত্রে গ্রামীণ ও শহরের মধ্যে ব্যবধান খুবই কম। কমপক্ষে ১ টি টেলিভিশন সহ গ্রামে এর  হার প্রায় ৫৭ শতাংশ। শহরে তা ৭৭.৫ শতাংশ। আবার গৃহকর্তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী আইসিটি ব্যবহার কমবেশি হয়।

তবে করোনাভাইরাস মহামারী বাংলাদেশে আঘাত হানার পর থেকে নারীদের ইন্টারনেট ব্যবহার বেড়েছে। সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনে  ভিডিও কল, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার এবং অনলাইন ভিডিও দেখার বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মূলত ডিজিটাল লিটারেসি বা জ্ঞানের অভাবে ইন্টারনেট অনিরাপদ হয়ে পড়ছে। কখনও কখনও অপরাধী অজান্তে ইন্টারনেটে অন্যদের কাছে ক্ষতিকারক সামগ্রী ছড়িয়ে দিচ্ছে, এবং কখনও কখনও ভিকটিম অজান্তেই তার ইন্টারনেট ব্যবহারকে অনিরাপদ করে তুলছে।

একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ইন্টারনেট হয়রানির শিকার ৮৬.৯০ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। আক্রান্তদের ৮.৯৩ শতাংশের বয়স ১৮ বছরের কম। নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার করলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সাইবার জগতে এমন হয়রানির ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। ইন্টারনেটে বিভিন্ন আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা ভিকটিমদের পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষতি করছে।

করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের ৮৬ শতাংশ তরুণ ইন্টারনেটে বেশি সময় ব্যয় করছে। তাদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ যুবক দিনরাত সব সময় ইন্টারনেট ব্যবহার করে। সন্ধ্যায় ১৫ শতাংশ , দিনে অনেক কম মাত্র ২ শতাংশ।

2 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X