গ্রাম-শহর সব স্থানে হাত পাখা কেনার হিড়িক
হাতপাখার বাতাসে প্রান জুড়ানোর সময় চলে এসেছে বাংলাদেশে। গঞ্জে, নগরীতে, রাস্তাঘাটে চলার পথে,সকল স্থানে হিড়িক পড়েছে হাতপাখা কেনার। ধরে নিতে পারেন ১৫ বছরের সুশাসনে বিদ্যুৎ উন্নয়নেরই সুফল এগুলো । কারণ বাংলাদেশ লোডশেডিং এর মজার যাতা-কলে পৃষ্ট হয়ে চলে গিয়েছে ৭০-৮০ এর দশকে।
বাংলাদেশে এখন গ্রীষ্মের তীব্র তাপ। জনজীবনে হতাশা। বাড়ি থেকে কর্মস্থল কোথাও শান্তি নেই। ক্লান্ত মন-প্রাণ, সবাই কিছু শীতলতা খুঁজে পেতে ব্যাকুল। ঠান্ডা জলেও তৃষ্ণা মেটে না। কোথাও শীতল ছায়া নেই। লোডশেডিংয়ের তীব্রতা কমার কোনো আশঙ্কা নেই। এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলেও চার ঘণ্টাও তার দেখা নেই।
রাতের বেলায় ভয়াবহ লোডশেডিং । ধনীদের বাড়িতে বা অফিসে শীতল ব্যবস্থা থাকলেও দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে সাধারণ মানুষ । দেশের বেশির ভাগ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হতে চলেছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো শিগগিরই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ অবস্থায় কোথাও স্বস্তি পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। সরকারি প্রতিষ্ঠান পিডিবিও প্রায় ব্যর্থ।
বিকল্প খোঁজার উপায় নেই। ব্যাটারি চালিত চার্জিং ফ্যান অত্যন্ত ব্যয়বহুল কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্যানের চার্জ করাও সম্ভব নয়। ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে আইপিএস ইউপিএস সিস্টেমগুলিও ব্যাহত হয়েছে। তাই এখন সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা প্রাচীন হাতপাখা বাঙালির ঐতিহ্যবাহী জীবনের সঙ্গে একীভূত একটি ঐতিহ্য। ৭০-৮০ এর দশকে শুধুমাত্র হাত পাখা ছিল সকলের জীবনধারায় একটি অপরিহার্য জিনিস।
এমনকি বিয়ের উপহার হিসেবে হাতপাখাও পাওয়া যেত। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেলেও এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এসব হাত পাখা।
হাত পাখা এখন খুবই মূল্যবান জিনিস। কোথাও কোথাও খেজুর পাতা বিক্রি হচ্ছে আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত। বেত বা কাপড়ের হাতের পাখা একটু কম দামে পাওয়া গেলেও টেকসই কম। এছাড়া বাজারে প্লাস্টিক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন পাখা তৈরি হচ্ছে। তাই ব্যক্তি ও পকেটের অবস্থান বুঝে সবাই পছন্দের হাত পাখা নিতে পছন্দ করেন। অবশ্যই হাত পাখার একটি ইতিবাচক দিক আছে। কোনো বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে না। তাই জনজীবনে একমাত্র শেষ ভরসা এখন এই হাত পাখা।