পল্লি চিকিৎসক খোরশেদ ১০ বছরে ৫২ হাজার তালগাছ লাগিয়েছেন
এটা নিজেকে খেয়ে বনের ইঁদুর তাড়ানোর মতো। ঠাকুরগাঁ জেলার ডাক্তার খোরশেদ আলম দশ বছরের জমি বিক্রির টাকায় রাস্তার ধারে একের পর এক তাল গাছ লাগিয়েছেন। আর তিনি মোটরসাইকেলে ঘুরে ঘুরে গাছের পরিচর্যা করেন।
এক দশকে ৫২ হাজার তালগাছ লাগানোর পর এখন ভাবছেন এক লাখ গাছ লাগানোর পর থেমে যাবেন তিনি। খোরশেদ বলেন, পরিবেশ রক্ষা এবং বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু রোধে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পাহাড়ভাঙ্গা গ্রামের খোরশেদ আলম পেশায় পল্লী চিকিৎসক। তিনি শহীদদের স্মরণে এক লাখ তালগাছ লাগানোর প্রতিশ্রুতি দেন। সেই লক্ষ্যে ২০১৩ সাল থেকে তিনি রাস্তার পাশে চারা রোপণ করে আসছেন।
খোরশেদ আলম বলেন, খোচাবাড়ি বাজার থেকে তালের বীজ সংগ্রহ করে প্রতি বছর ৫ থেকে ১২ হাজার তালের বীজ বপন করা হয়। ১ লাখ পাম বীজ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। অনেকে নানা অজুহাতে তাল গাছ কাটছে। যা আমার জন্য কষ্টের । ভাদ্র ও আশ্বিন মাস তালের বীজ রোপণের উপযুক্ত সময়।
নিজের জমি বিক্রির টাকায় সদর উপজেলার চিলারং, আখানগর, রিহমানপুরের রাস্তার পাশে ৫২ হাজার চারা রোপণ করেন। পারিবারিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তিনি রোগী দেখার অজুহাতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
যদিও তার ছেলেরা শুরুতে এই কাজটি প্রতিরোধ করেছিল, এখন তারা বলে যে তারা এটি পছন্দ করে। খোরশেদ আলমের ছেলে আব্দুল মতিন জানান, প্রথমে বাবার কাজ খারাপ হলেও এখন তাল গাছ দেখে খুশি। তালগাছ লাগিয়ে বাবা অনেক টাকা নষ্ট করেছেন।
এই কাজ শুরু করার পর খোরশেদকে পাগল ভাবা হলেও এলাকাবাসী এখন তার স্বপ্ন নিয়ে গর্বিত।
এমন নিঃস্বার্থ কাজের স্বীকৃতি দিতে উপজেলা প্রশাসন মো. উপজেলা জেলা কর্মকর্তা আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামান জানান, খোরশেদ আলম দীর্ঘদিন ধরে নিজ উদ্যোগে তালগাছ লাগানোর কাজ করে আসছেন। বিষয়টি জানার পর আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করি। উপজেলার সহযোগিতায় তাকে স্বীকৃতি দিয়ে কাজ করছি।
1 Comment