November 22, 2024
সাপ খাইঃ কারণ আয় ও খাবার নাই

সাপ খাইঃ কারণ আয় ও খাবার নাই

সাপ খাইঃ কারণ আয় ও খাবার নাই

সাপ খাইঃ কারণ আয় ও খাবার নাই

অবাক হলেও সত্য কুড়িগ্রামের এই ঘটনা। মোজাহার মিয়া। (৪৮) পেশায় তিনি একজন দিনমজুর। তিনি সাপ বা সাপ খেলেন না।

সাপে কাটা রোগী পাওয়া গেলে বা কেউ ডাকলে মোজাহের মিয়া ক্ষতস্থান থেকে বিষ চুষে খায়। কেউ সাপের উপদ্রবে ভুগলে সে সাপ ধরতে যায়। তার কোন প্রয়োজন নেই, তারা বিনিময়ে  যা দেন তাই নেন ।

তিনি ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, বিচ্ছু, কাঁচা গরুর মাংস এবং বিচ্ছু খাচ্ছেন। সাপ, ইঁদুর ও ব্যাঙের মতো অখাদ্য প্রাণী খেয়ে সমালোচনার শিকার হয়েছেন মোজাহার মিয়া। এই অভ্যাসটি তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের একটি অংশ হয়ে গেছে। সাপ খাওয়ার কারণে দাম্পত্য জীবনে বিপাকে পড়েছেন তিনি। একাধিক বিয়ে করেও তিনি কোনো স্ত্রীকে রাখতে পারেননি। ফলে এই সাপ খাওয়া মানুষটি বাড়িতে একাকী দিন কাটান।

মোজাহার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।  ব্যাঙ, কাঁকড়া, শামুক, ইঁদুর, বিচ্ছুসহ কাঁচা মাংস খাওয়ার নেশায় আসক্ত। বর্তমানে তিনি দুই স্ত্রী এবং এক দত্তক পুত্রের পিতা। বাড়িতে ছেলের দুই নাতিও আছে।

মোজাহার মিয়া বলেন, আমি ক্লাস টুতে পড়ার পর থেকেই সাপ-বিচ্ছু খাই।  বিষধর সাপ আমার প্রিয়। বিষধর সাপ এবং যেকোনো বড় সাপের স্বাদ ছোট সাপের চেয়ে অনেক ভালো। এই সাপ খেতে গিয়ে হাজার বিড়ম্বনায় পড়ে গেলাম। তবে মন মানে না। এটা আমার নেশা হয়ে গেছে। আমার কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। তিনি বলেন  দারিদ্র্যের সংসারে শৈশবে ক্ষুধার যন্ত্রণা সইতে না পারায় তিনি এসব খেতে শুরু করেন । ক্ষুধা মেটে এটাই বড় কথা। সাপের বিষ আমাকে কাবু করতে পারবে না। তাই বিষ  চুষে  অনেক সাপে কাটা রোগীকে বাঁচিয়েছি। জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং জেলার বাইরে থেকেও  আমার কাছে  ফোন আসে। কয়েকদিন আগে ফরিদপুরে গিয়েছিলাম একটি বাড়িতে সাপ ধরতে। ওই বাড়িতে সাপের উপস্থিতি দেখে সবার মন খারাপ হয়ে যায়। আমি সাপটিকে ধরে সহজেই খেয়ে ফেললাম। বিনিময়ে টাকাও  পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, বিষধর সাপের পেটে কৃমি হয় না। এ কারণে বিষধর সাপের স্বাদ তুলনামূলকভাবে বেশি। সাপ না খেলে শরীরে এনার্জি আসে না। মোজাহার মিয়া জানান, যখন সাপ পাওয়া যায় না তখন সাপের অভাবের কারণে কাঁচা গরুর রক্ত ও কাঁচা ভূরি খেয়ে বেঁচে থাকি।

কিন্তু এখন তিনি স্বাভাবিক মানুষের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করছেন । মোজাহার মিয়া জানান, সাপের সরবরাহ কমে গেছে। লোকেরাও  এটিকে ভালভাবে নেয় না, তারা এটিকে ঘৃণা করে। এছাড়া প্রশাসনকে অনেকেই ভয় পায়। তাই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছি কিন্তু সমস্যা একটাই, আয় ও খাবার নেই।

উক্ত  থানার ওসি গোলাম মুর্তজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মোজাহার মিয়া ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, বিচ্ছু, কাঁচা গরুর মাংস ও ভুরি খেয়ে আসছে বলে শুনেছি। সাপে কাটা রোগী পাওয়া গেলে। বা কাউকে ডেকে ক্ষতস্থান থেকে বিষ চুষে খায়।কেউ সাপের উপদ্রব হলে সে সাপ ধরতে যায়।কিন্তু আমি জানি সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়।

2 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X