ধর্ষণ প্রতারনার মামলায় আ’লীগের সাবেক এমপি আরজু কারাগারে
ধর্ষণের মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) খন্দকার আজিজুল হক আরজুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক সামছুন্নাহার এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আলী আসগর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আজিজুল হক সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
মামলা ও আদালতের নথিপত্রের সূত্রে জানা গেছে, আজিজুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে গত বছরের ১৯ এপ্রিল আদালতে নালিশি মামলা করেন এক নারী। মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আদেশ দেন আদালত। মামলাটি তদন্ত করে গত ৫ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রে বলা হয়, মামলার বাদীর সঙ্গে ২০০১ সালে আজিজুল হকের পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মামলার বাদীর সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করেন আসামী। বাদী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। একটি সন্তানের জন্ম দেন। সন্তান জন্মের পর বাদীর সঙ্গে আসামী যোগাযোগ কমিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে ভরণপোষণও বন্ধ করে দেন আসামী। তিনি সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, আজিজুল হকের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ডিএনএ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সন্তানের জৈবিক পিতা আজিজুল হক।
পিপি আলী আসগর বলেন, মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্র সম্প্রতি আমলে নেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত আসামী আজিজুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে আসামী জামিন চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। উচ্চ আদালত তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করার আদেশ দেন। গতকাল বুধবার আজিজুল হক ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত আসামী আজিজুল হকের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। আজিজুল হকের আইনজীবী আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, তার মক্কেলকে হয়রানি করার জন্য এ মামলা করা হয়েছে। মামলায় বাদী নিজেই বলেছেন, পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়। বিবাদী তাকে ভরণপোষণও দেন। তিনি সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকারও করছেন না। বিবাদী এখন অসুস্থ। তিনি ডায়াবেটিসের রোগী। আইনজীবী আহসানুল হক চৌধুরী আরও বলেন, বাদীর সন্তানের জন্মসনদে পিতা হিসেবে অন্য একজনের নাম উল্লেখ ছিল। পরে তা পরিবর্তন করা হয়। এসব তথ্য আদালতকে জানানো হয়েছে।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, আসামি তাকে বিয়ের নামে প্রতারণা করে শারীরিক সম্পর্ক করেন। আসামি আজিজুল হক বাদীকে হত্যার উদ্দ্যেশে বেশ কয়েকবার হামলা চালায় এবং সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে। একপর্যায়ে বিবাদী বাদীকে বিয়ে ও তার সন্তান হওয়ার কথা অস্বীকার করে। মামলার নথি থেকে জানা যায়, মামলার তদন্তে বাদীর মেয়ের ডিএনএ টেস্টে মেয়েটিকে গর্ভধারণ করিয়েছেন বলে জানা গেছে আসামি আজিজুল হক ।