বক্তব্য প্রত্যাহার করলেন ভিপি নুর
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামকে নিয়ে দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করেছেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর। শুক্রবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
ফেসবুক পোস্টে ভিপি নূর লিখেছেন, “গতকাল (১৪ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে আমার বক্তব্যের তথ্যে বিভ্রাটে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় আমার বক্তব্য প্রত্যাহার করছি। চিফ প্রসিকিউটরের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ায় গণহত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমে আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।”
এর আগে গতকাল (১৪ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাসুদ রানার পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,” আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামকে নিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর তার একদল সহযোগী ও বহিরাগতদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে উসকানিমূলক ও মানহানিকর স্লোগানের একটি মিছিল সহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান ফটক দিয়ে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টা করেন। । পরে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাধার মুখে ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করতে না পেরে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ট্রাইব্যুনালের গেটে সংবাদ সম্মেলন করেন নুরুল হক নূর। যেখানে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকের কিছু ভিত্তিহীন, বানোয়াট, অসত্য ও উসকানিমূলক অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তার (নূর) আনা এসব মিথ্যা অভিযোগ ইচ্ছাকৃতভাবে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নুরুল হক নূরের এ বক্তব্যের ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের মর্যাদা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নুরুল হক নূর ও তার দলের নেতাকর্মীদের এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে প্রতীয়মান হয়। জুলাই-আগস্টের গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত ও বাধা প্রদান করা তার অনড় কর্মকাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে নুরুল হক নূর ও তার দলের কর্মীরা এই বেআইনি ও ষড়যন্ত্রমূলক কাজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
ঘোষণা অনুযায়ী, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশে দুই হাজার হত্যা ও অর্ধ লাখ ভাই-বোনের নির্যাতনের বিচার প্রক্রিয়ার জন্য পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং প্রধান প্রসিকিউটরকে নিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থে এ ধরনের কর্মকাণ্ড অনিচ্ছাকৃত এবং অগ্রহণযোগ্য। নুরুল হক নূর তার ভিত্তিহীন, অসত্য ও নোংরা বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এরপর নুরুল হক নূর ব্যাপারটিকে তাজুল ইসলামের সাথে বসে মীমাংসায় আনেন।