November 21, 2024
ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিল পাস

ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিল পাস

ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিল পাস

ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিল পাস

আরজি কর মেডিকেল কলেজের নারকীয় ঘটনা দেশের পাশাপাশি বিদেশেও প্রভাব ফেলেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু শাস্তি কবে হবে, আরজি করের রাজনীতি কবে বন্ধ হবে, কেউ জানে না এখনো! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা পুলিশের একটি বিশেষ দলকে ঘটনার পিছনে কারা রয়েছে তা খুঁজে বের করতে এবং চার্জশিট দাখিল করতে এবং তাদের বিচার দ্রুত করতে বলেছেন। কিন্তু সেই সময় না দিয়ে মাননীয় হাইকোর্ট তাঁকে সিবিআই-এর কাছে তদন্ত হস্তান্তরের নির্দেশ দেন। তাই কলকাতা পুলিশ পারবে কি না, জানা যায়নি।

তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই শুরুতে বলেছিলেন, এই ঘটনার ভার যদি সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়, তাতে সরকারের কোনও আপত্তি নেই। তবে তিনি এও বলেছেন যে ঘটনার মূল অভিযুক্তকে খুঁজে পেতে সিবিআই কত সময় নেবে তা তিনি জানেন না। তাছাড়া সিবিআইয়ের সাফল্যে খুশি নন তিনি। বিশেষজ্ঞরা এরই মধ্যে বলতে শুরু করেছেন, আরজি কর মামলার তদন্ত ‘ধীরগতির’ হচ্ছে।

এদিকে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সংসদে একটি আইন আনার অনুরোধ করেছেন, যাতে ধর্ষকদের যেনো ফাঁসি হয়। ধর্ষণের ঘটনা শুধু পশ্চিমবঙ্গেই ঘটছে না ভারতের অনেক স্থানেই অহরহ ঘটছে ধর্ষণকাণ্ড, অন্যান্য রাজ্যেও ঘটছে। কিন্তু সেই প্রতিবাদ বা আন্দোলন কখনো বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। তাই ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি অর্থাৎ ফাঁসি দেওয়ার জন্য সংসদে বিল পাস করা উচিত। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাও ধর্ষণের বিরুদ্ধে এবং ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে একটি বিল পাশ করতে চলেছে বলে শোনাও যাচ্ছিলো।

সে থেকে মমতার ঘুম হারাম। আর তার উপর ভিত্তি করেই মমতা বিধানসভায় ধর্ষণ বিষয়ক এই বিলটি অনুমোদন দেন।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিল পাশ হয়েছে,মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর), পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল ২০২৪’ বিল পাশ করেছে।

৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় বিধানসভা অধিবেশনে ভাষণ দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা জানান।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে একটি বিল পাস হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল ২০২৪’ বিল পাস করেছে।

অপরাজিতা বিল নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এই বিল একটি  ইতিহাস! প্রধানমন্ত্রী পারেননি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর লজ্জা দেখাতে পারতাম! তিনি মেয়েদের রক্ষা করতে পারেননি। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি।’ তিনি বলেন, ‘দ্রুত তদন্ত, দ্রুত বিচার এবং দোষীদের শাস্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে এই বিল আনা হয়েছে।’  এর আগে, কলকাতার একটি হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ২৪ দিন পরে বিধানসভায় বিলটি পাস হয়েছে ।

এখন বিলটি অনুমোদনের জন্য গভর্নর সিভি আনন্দ বোসের কাছে পাঠানো হবে। রাজ্যপালের অনুমোদনের পর বিলটি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিলে এটি আইনে পরিণত হবে।

ধর্ষণ বিলে কী বলা আছে?

  • এই বিলে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যদি অপরাধের ফলে নির্যাতিতার মৃত্যু হয় বা স্থায়ী অজ্ঞান অবস্থা তৈরি হয়। একই সঙ্গে দোষী সাব্যস্ত আসামিদের প্যারোল ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথাও বলা হয়েছে।
  • বিলটিতে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা আইন ২০২৩, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা আইন ২০২৩ এবং যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা আইন ২০১২ সংশোধন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
  • সংস্থাটি তদন্ত এবং প্রসিকিউশন প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন করার পরিকল্পনা করেছে। প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশের ২১ দিনের মধ্যে ধর্ষণের মামলার তদন্ত শেষ করতে হবে, যা আগের দুই মাসের সময়সীমার চেয়ে কম।

উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট ও মণিপুর এবং আরও কয়েকটি বিজেপি শাসিত রাজ্যে এরকম বড় ধরনের ঘটনা ঘটলেও সাধারণ মানুষের আন্দোলন ততদিন স্থায়ী হয়নি। তারা আইনি বিচারের জন্য মরিয়া। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তার ব্যতিক্রম। পুজোর মুখে এই আন্দোলনে ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া। এতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। আলু, পেঁয়াজসহ সব খাবারের দাম আকাশছোঁয়া। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সেদিকে কোনো নজর নেই- আরজি কর ইস্যু এখন তাদের প্রধান ইস্যু। আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং পরে খুন করার যথাযুক্ত বিচার চেয়ে যে আন্দোলন চলছে, তা এককথায় নজিরবিহীন

আরজি করের ঘটনার পর সরকারের যে শিক্ষা নেওয়া উচিত তা হল প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা। আরজি করের মতো জঘন্য ঘটনা যেন আর না হয়।

আরো পড়তে

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X