November 24, 2024
বেড়েই চলছে শহীদের সারি: ১৬ দিন পর আজ শহীদ হলেন দশম শ্রেণির ছাত্র মাহিম

বেড়েই চলছে শহীদের সারি: ১৬ দিন পর আজ শহীদ হলেন দশম শ্রেণির ছাত্র মাহিম

বেড়েই চলছে শহীদের সারি: ১৬ দিন পর আজ শহীদ হলেন দশম শ্রেণির ছাত্র মাহিম

বেড়েই চলছে শহীদের সারি: ১৬ দিন পর আজ শহীদ হলেন দশম শ্রেণির ছাত্র মাহিম

বাংলাদেশের সকল বিবেকবান মানুষ, শিশু আবাল বৃদ্ধাবনিতা সকলের কাছেই এ আন্দোলনের শহীদদের গুরুত্ব অত্যধিক। যে শহীদদের রক্ত কথা বলবে অনন্তকাল ব্যাপিয়া। আর কক্ষনোই ফ্যাসিস্টদের উঠে দাঁড়াতে দেবে না শহীদদের এই আত্মত্যাগ। তাই শহীদদেরকে নিয়ে লেখা আমাদের চলবেই ইনশাআল্লাহ। 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই গ্রামের ছেলেদের নিয়ে মাঠে নামেন দশম শ্রেণির ছাত্র মাহিম। ৪ আগস্ট কুমারখালীতে মিছিল করতে গিয়ে পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের আঘাতে গুরুতর আহত হন মাহিম। গত কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পর মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রক্ত ​​বমি ও শ্বাসকষ্টে তার মৃত্যু হয়।তার নাম লেখা হয়ে যায় আল্লাহতালার শহীদি দপ্তরে। বিকেলে গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।

নিহত মহিম হোসেন (১৭) কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের বামন পাড়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের বড় ছেলে। সে চান্দত গ্রামের ইয়াকুব আহমদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিল।

নিহতের বাবা ইব্রাহিম হোসেন জানান, তার ছেলে গ্রামের ছেলেদের নিয়ে প্রতিবাদ করে। তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা সমন্বয়কারীরা। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলাও প্রত্যাহার করা হয়।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহিম হোসেন শুরু থেকেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে আসছিলেন। ৪ আগস্ট খোকসা তার  সমন্বয়কদের ডাকে সাড়া দিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিতে উপজেলা সদরে যান। সেখানে পুলিশের বাধার মুখে তিনি সঙ্গীদের ছেড়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে বাসে ওঠেন। তিনি পার্শ্ববর্তী উপজেলা কুমারখালীতে যান এবং সেখানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দিতে বাস থেকে নেমে যান। সেখানে পুলিশের টিয়ার গ্যাসে মাহিম গুরুতর আহত হন। এতদিন চিকিৎসা চলছিল। রক্ত বমি ও শ্বাসকষ্টের কারণে মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। বিকেলে মহিমের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। ইয়াকুব আহমদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে চান্দত কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

নিহতের স্বজনরা জানান, শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে তিনি প্রচণ্ড জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। সোমবার রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

মাহিমের বন্ধু জুয়েল ও রফিক জানান, আন্দোলনের শুরু থেকেই মহিম তাদের দলে ছিল। অন্য ছেলেদের মতো তিনিও নিজ বাড়িতে না জানিয়ে জেলা ও থানা সদরের কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। সহকর্মীর মৃত্যুতে তারা গভীরভাবে শোকাহত।

মাহিমের শ্যালিকা রহিমা বলেন, দেশকে স্বাধীন করার জন্য আমার ভাইদের ডাকে আমার ছেলে মিছিলে গিয়েছিল। সেখান থেকে সব ঘটনা খুলে বললেন। কিন্তু সে বুঝতে পারেনি যে সে এতটা অসুস্থ। তার মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তবে কী কারণে তিনি মারা গেছেন তা বলতে পারছি না। ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা যাবে না।

খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আননুর জায়েদ বলেন, এক ছাত্র মারা গেছে বলে শুনেছি। এ নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে দশম শ্রেণীর ছাত্র মাহিম হোসেন একক দাবি নিয়ে মিছিলে নামেন। পুলিশের টিয়ারশেলের ধোঁয়ায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার সকালে রক্ত ​​বমি ও শ্বাসকষ্টজনিত কারণে কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

আজ সকাল ৭টার দিকে কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রক্ত ​​বমি ও শ্বাসকষ্টের কারণে তার মৃত্যু হয়। বিকেলে গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে কাজ শুরু করেন মহিম। আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে গত ৪ আগস্ট মিছিলে যোগ দিতে ছোট ফুপু রহিমা উপজেলা সদরে যান এবং পুলিশের গুলিবর্ষণের সম্মুখীন হন। পরে টিয়ার গ্যাসে মাহিম। স্থানীয় মহিলারা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে সহায়তা করেন।

মাহিমকে হারিয়ে মা রেহানা খাতুনের কান্না থামছে না।

মঙ্গলবার বিকেলে তার লাশ মহিমের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। এ সময় গ্রামের অসংখ্য নারী-পুরুষ ও সহপাঠী তার বাড়িতে ভিড় করেন। ইয়াকুব আহমদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে চান্দত কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এদিকে ছেলের শোকে মাহিমের মা রেহানা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। গ্রামের মহিলারা ভিড় করেন তার বাড়ির বিছানার চারপাশে। মাঝে মাঝে সে বিলাপ করে বলে, “ছেলেটা যে এত অসুস্থ তা আমি বুঝিনি।”

নিহতের বাবা ইব্রাহিম হোসেন জানান, তার ছেলে গ্রামের ছেলেদের নিয়ে প্রতিবাদ করে। তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা সমন্বয়কারীরা। তাদের সাথে আলোচনা করুন এবং মামলা এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলি নির্ধারণ করবেন।

আরো পড়ুন

 

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X