November 22, 2024
বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লজ্জাজনক হার বাংলাদেশের

বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লজ্জাজনক হার বাংলাদেশের

বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লজ্জাজনক হার বাংলাদেশের

বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লজ্জাজনক হার বাংলাদেশের

বিব্রতকর ব্যাটিং প্রদর্শনের পর আইসিসির পূর্ণ সদস্য মিলে বাংলাদেশ ১৫৩ রান করে। সতীর্থ ও নতুন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সেই রান রক্ষা করতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। হারমিত সিং এবং কোরি অ্যান্ডারসনের ৬২ রানের জুটি ইতিহাস তৈরি করেছে। কারণ স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র টাইগারদের ৫ উইকেটে পরাজিত করেছে। আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রথমবারের মতো দুই দলের মুখোমুখি হওয়ার পর বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন নাজমুল হোসেন শান্তরা।

আর মাত্র ১০ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। যুক্তরাষ্ট্রে খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় উইকেট ও কন্ডিশন নিয়ে কিছুটা সন্দিহান ছিল বাংলাদেশ। তবে ধীরগতির আউটফিল্ড ও পিচ কিছুটা মিরপুরের মতো মনে হলেও ঘরের মতো মাঠ থাকা সত্ত্বেও ব্যাটিং চালিয়ে যায় টাইগাররা। তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ছাড়া আর কেউ সেভাবে রান পাননি। তবে অভিজ্ঞ টাইগার পেসারদের সুবাদে জয়ের আশায় ছিলেন টাইগার ভক্তরা। কিন্তু সেই আশা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।

ইউএসএ ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হারমিত সিং মাত্র ১৩ বলে ৩৩ রান করেন। মুস্তাফিজ-শরিফুলদের অভিজ্ঞতার যত্ন নেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। অন্য প্রান্তে, কোরি অ্যান্ডারসন, যিনি নিউজিল্যান্ড ছেড়ে আমেরিকান দলের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন, একটি বাউন্ডারি পেতে লড়াই করছিলেন, শেষ পর্যন্ত তিনিও ২৫ বলে ৩৪ রান করেন। ৩ বল হাতে রেখেই স্মরণীয় জয় নিশ্চিত করে বিশ্বকাপ আয়োজকরা।

বাংলাদেশের দেওয়া ১৫৪ রানের মাঝারি টার্গেট তাড়া করে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে স্বাগতিক ওপেনাররা। ৩ ওভারে ২৭ রান করার পর শরিফুলের দুর্দান্ত থ্রোতে রানআউট হন ইউএসএ অধিনায়ক মনঙ্ক প্যাটেল (১০)। তবে আরেক ওপেনার স্টিভেন টেলর ও অ্যান্ড্রিস গাস দ্বিতীয় উইকেটে ৩৮ রানের জুটি গড়েন, টি-টোয়েন্টির চেতনা বজায় রেখে। ১৮ বলে ২৩ রান করে গুসকে ফেরান রিশাদ হোসেন।

এরপর ১৩ রানে আরও দুটি উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ২৮ রানে টেলর ও অ্যারন জোন্সকে৪ রানে ফেরান মুস্তাফিজ। স্বাগতিকরা চাপে পড়ে রান রেট কমিয়েছে। পরে ইউএসএ ৯৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারায়, শরিফুল ১০ রান করা নীতিশ কুমারকে আউট করেন। হরমিত তখন ভারসাম্য বজায় রেখেছিলেন অ্যান্ডারসনের সঙ্গে বল ধীরে ধীরে, বাউন্ডারি খেলে। তাদের জুটিই স্বাগতিকদের ঐতিহাসিক জয় এনে দেয়।

ক্রিকেট বিশ্বে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের সাক্ষী বাংলাদেশ। কিন্তু এই দলটি বিশ্বকাপে নতুন কিছু আনার স্বপ্ন নিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছে। দ্বিতীয়বারের মতো আইসিসির পূর্ণ সদস্যের কাছে হেরেছে তারা। এর আগে ২০২১ সালে আয়ারল্যান্ডকে হারানোর স্বাদ পান প্যাটেল-আলি খান।

টাইগারদের পক্ষে মুস্তাফিজ ২টি এবং রিশাদ ও শরিফুল ১টি করে উইকেট নেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ, অপরিচিত কন্ডিশন, পিচ সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিল না বাংলাদেশের। এমন মাঠে বলের দিক বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন সফরকারী ব্যাটসম্যানরা। ব্যাট করতে নেমে লিটন দাসের শুরুটা খারাপ হয় এবং নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান রান পেতে হিমশিম খায়। শেষ পর্যন্ত হৃদিয়ার ফিফটি (৫৮) ও মাহমুদুল্লাহর (৩১) ক্যামিওতে টাইগাররা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৩ রান করে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হারের পর উইকেটের দায়িত্বও দেখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ধরার আগে বাংলাদেশ দলের বোলিং সামর্থ্যের  ব্যাপারে আফসোস  করেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। ব্যাটসম্যানরা ১৬০-১৭০ রান করবে আর বোলাররা সেই পুঁজি নিয়ে ম্যাচ জিতবে- এটাই বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি জয়ের ফর্মুলা। তবে এই সূত্রের প্রথম শর্ত পূরণ হয় না।

এমন হারের পর দলের ব্যাটিংয়ে আঙুল তোলা উচিত অধিনায়কের। নাজমুলও তাই করেছেন। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি। প্রথম দুই ওভারে আমরা ভালো শুরু করেছি। তবে মাঝে মাঝে উইকেট হারাই। আমরা আরও ২০ রান করতে পারতাম। তাহলে ম্যাচটা অন্যরকম হতে পারত।

এমন একটানা ব্যাটিং ব্যর্থতার পেছনে উইকেটের দায়ও দেখছেন নাজমুল, “আমি এটাকে ভুলের পুনরাবৃত্তি বলে মনে করি না। আমার মনে হয় আমরা ভালো উইকেটে খেলছি না। জিম্বাবুয়ে সিরিজেও আমরা ভালো উইকেটে খেলিনি। তবে এটা একটা মানসিক ব্যাপার আমি আশা করি ব্যাটসম্যানরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

হারের আরেকটি কারণ হিসেবে পেসারদের ডেথ ওভার বোলিংকে উল্লেখ করেছেন নাজমুল, “সব স্পিনারই ভালো বল করেছে। শেষ দুই-তিন ওভারে আমাদের পেসাররা পরিকল্পনা মতো বোলিং করতে পারেনি। আশা করি পরের ম্যাচে তারা ভালো করবে।

বাংলাদেশ একাদশ:

নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাশ, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনিক, মাহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।

আরও পড়ুন

ক্রিকেটারদের চুইংগাম চিবানোর রহস্য

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X